চীনে গত এক মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে। গত ডিসেম্বরের শুরুর দিকে চীনে করোনার বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার পর এই প্রথম এত বড় পরিসরে মৃত্যুর খবর প্রকাশ করল দেশটির সরকার।
চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের (এনএইচসি) এক কর্মকর্তা শনিবার বেইজিংয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ৮ ডিসেম্বর থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট ৫৯,৯৩৮ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে করোনা মহামারি। সতর্ক বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থাও। পাশাপাশি শয্যা সঙ্কটে চীনের একাধিক হাসপাতাল। নতুন রোগী ভর্তি নেয়ার মত কোন পরিস্থিতি নেই বলেই দাবি একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র হাসপাতালেই ৬০ হাজার মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ, যারা বাড়িতে মারা গেছেন সেই বিষয়ে কোন তথ্য প্রকাশ করেনি চীন।
রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে ৬০ হাজার রোগীর মধ্যে ‘শ্বাসযন্ত্রের ফেলিওরের’ কারণে মৃত্যু হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার জনের। পাশাপাশি দাবি করা হয়েছে যে মৃত রোগীদের ৯০.১ শতাংশের বয়স ৬৫ বা তার বেশি। চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পরিচালিত পেকিং বিশ্ববিদ্যালয় এক গবেষণার পর জানিয়েছে, দেশটিতে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৯০ কোটি মানুষ করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। আর দেশটিতে করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬৪ শতাংশ।
চীনা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের দাবি, শহর ও গ্রামাঞ্চলে জ্বর ও করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা রোগীর সংখ্যা কমছে এবং শীঘ্রই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। চীন গত মাসেই করোনার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ছাড় দেয়। তারপরই দেশে হুহু করে বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা।
পরিসংখ্যান প্রকাশের পরও চীনের বিরুদ্ধে করোনায় মৃত ও আক্রান্তদের ‘পরিসংখ্যান লুকানোর’ অভিযোগ উঠেছে। এর পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)ও চিনের কাছে সঠিক তথ্য বিশ্বের সামনে রাখার আবেদন জানায়। তবে চীন থেকে যে তথ্য বেরিয়েছে, তার পর থেকেই উদ্বেগ বেড়েছে বিশ্বে। আমেরিকা, জাপান সহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা আগের থেকে বাড়ছে এবং একে এক নতুন ‘কোভিড তরঙ্গ’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন