শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ভিড়ল ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ

দেশের অগ্রগতির কৃতিত্বের দাবিদার বন্দর : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে প্রথমবারের মত ভেড়ানো হল ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১০ মিটার ড্রাফটের একটি জাহাজ। এর মধ্যদিয়ে দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দরে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হলো। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী গতকাল সোমবার বন্দরের সিসিটি-১ জেটিতে বেলুন উড়িয়ে এমভি কমন অ্যাটলাসের বার্থিংয়ের উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি বলেন, বন্দরে ১০ মিটার ড্রাফট নিশ্চিত করতে পেরেছি। এটি দেশের জন্য গর্ব ও অহংকারের। বিগত ১৪ বছর বাংলাদেশের অগ্রগতির কৃতিত্বের অন্যতম দাবিদার চট্টগ্রাম বন্দর বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী এমভি কমন অ্যাটলাস ৩৬ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত চিনি নিয়ে রোববার বিকেলে বন্দরের সিসিটি-১ জেটিতে আসে। বেশি ড্রাফট এবং বড় দৈর্ঘ্যরে জাহাজ জেটিতে ভেড়ার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানি-রফতানিকারকেরা উপকৃত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে ৯ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের এবং ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ বন্দরের জেটিতে ভিড়ত। লন্ডনভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান বন্দর চ্যানেল নিয়ে সমীক্ষা চালানোর পর ১০ মিটার ড্রাফট এবং দুইশ’ মিটার লম্বা জাহাজ জেটিতে ভিড়তে পারবে বলে সুপারিশ করে। সর্বশেষ ২০১৪ সালে কর্তৃপক্ষ বন্দরে প্রবেশকারী জাহাজের ড্রাফট ও দৈর্ঘ্য বাড়িয়েছিল। এর আগে আরও কম ড্রাফটের জাহাজ জেটিতে ভিড়ত। বন্দরে বর্তমানে ১৯টি জেটি রয়েছে। এর মধ্যে ১৭টিতে জাহাজ ভেড়ে।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১০ মিটার ড্রাফটের প্রতিটি জাহাজে করে ২৬০০ থেকে ২৮০০ টিইইউএস কন্টেইনার আনা যাবে। আগে যেসব জাহাজ আসতো, সেগুলোতে ১৭০০ থেকে ১৮০০ টিইইউএস পরিবহন করা হত। এতদিন বড় জাহাজ (বেশি ড্রাফটের) বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে অবস্থান করত এবং সেখানে লাইটারেজ জাহাজে পণ্য খালাস করে ড্রাফট কমিয়ে বন্দরের জেটিতে আসত। এখন সরাসরি জাহাজ জেটিতে আসবে। তাতে আমদানিতে সময় এবং ব্যয় কমে আসবে।
বড় জাহাজ ভেড়া উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির ইতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে। বন্দরের উন্নয়নে একের পর প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বে-টার্মিনালে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ করবে চট্টগ্রাম বন্দর এবং ২০২৫ সালের শেষদিকে এর কার্যক্রম চালু করতে পারবো। ১৮টি গ্যান্ট্রি ক্রেন এ বন্দরে। ৪৮ ঘণ্টায় একটি জাহাজ হ্যান্ডেল হচ্ছে। দ্রæততার সঙ্গে পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল- পিসিটি চালু করতে পারবো।
গেস্ট অব অনার ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, এটি চট্টগ্রাম বন্দর ও বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিক দিন। ২০০ মিটার লম্বা বড় জাহাজ ভিড়েছে বন্দরে। এর ফলে বাংলাদেশের আমদানি রফতানিতে আরও গতি আসবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল বলেন, করোনাকালে ৫৪ জন লোক মারা গেছে কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ হয়নি। দেশের জন্য তারা প্রাণ দিয়েছেন। সরকারের শেষ বছর। তখন বিভিন্ন দাবি, উস্কানি শুরু হয়। সাপ্লাই চেইন সবার জন্য। আমরা একদিনের জন্যও কাজ থামাইনি। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট। পোর্টও হবে স্মার্ট। এর জন্য স্মার্ট টিম চাই। মাতারবাড়ী, বে টার্মিনাল, চট্টগ্রাম বন্দর একসঙ্গে অপারেশন করলে জাতীয় আয় বাড়বে।
সভাপতির বক্তব্যে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, আজ বন্দরের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ‘কমন অ্যাটলাস’ ভিড়েছে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে চিটাগাং চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মো. আরিফ এবং জরিপ সংস্থা এইচ আর ওয়েলিংটন ফোর্ডের বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. মনজুরুল হক বক্তব্য রাখেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন