শ্রেষ্ঠ শিকারি বাজপাখি বেছে নিতে চলছে প্রতিযোগিতা। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে বিশাল আয়োজনে হচ্ছে এবারের ‘মারমি ফ্যালকন ফেস্টিভালের’ আসর। যেখানে মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও অংশ নিয়েছে আরও নানা দেশের প্রতিযোগীরা। মাসব্যাপী টুর্নামেন্টে কয়েক ধাপে প্রতিযোগিতা শেষে বেছে নেয়া হবে এ বছরের সেরা শিকারি বাজ। পুরস্কার হিসেবে মোটা অংকের অর্থ পাবেন মালিক। খবর বিবিসির।
মনিবের ইশারা পাওয়া মাত্রই তীক্ষ্ণ হয়ে উঠলো এক জোড়া শিকারি দৃষ্টি। বিদ্যুৎ গতিতে ছুটে গেলো বাজপাখিটি। চোখের পলকে ছোঁ মেরে ধরে আনলো শিকার। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে চলমান মারমি ফ্যালকন ফেস্টিভালে এভাবেই পোষ্যদের দক্ষতা প্রমাণে হাজির হয়েছেন বাজ মালিকেরা।
বাজ দিয়ে শিকার করানোর এই খেলার ইংরেজি নাম ‘ফ্যালকনরি’। এটি মালিক আর পোষ্যের বিস্ময়কর এক যোগাযোগও বটে। খেলার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ থাকে প্রশিক্ষকের হাতে। তার নির্দেশে বাজ যেমন ছুটে যায় বিদ্যুৎ গতিতে, ঠিক তেমনি হাতের এক ইশারাতেই ফিরে আসে মাঝ আকাশ থেকেও।
ফ্যালকনারিতে নিজের বাজ নিয়ে আসা একজন বললেন, কাতারের প্রাচীন ও জনপ্রিয় ঐতিহ্য এটি। বাজ পাখি পোষা এবং এটিকে শিকারের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া আবরদের সবচেয়ে পছন্দের শখগুলোর একটি। আর আমার কাছে এটা অনেকটা নেশার মতো। খেলাটি ভীষণ মজার আর আকর্ষণীয়। এই ধরনের রোমাঞ্চকর বিষয়গুলো আমাকে খুব টানে।
মধ্যপ্রাচ্য জুড়েই বাজপাখির রয়েছে আলাদা মর্যাদা। হাজার বছরের আরব সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয় একে। মূলত, একটা সময় আরব বেদুঈনরা প্রশিক্ষণ দিয়ে শিকার ধরতে পারদর্শী করে তুলতো ত্যাদের পোষা বাজকে। তবে আধুনিক এ যুগে বাজ দিয়ে শিকার করানো অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়লেও, প্রাচীন সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে আরবরা। বাজপাখি পোষাকে এখন দেখা হয় শেখদের আভিজাত্যের অংশ হিসেবে। আর এ প্রতিযোগিতাটি এ অঞ্চলটির জনপ্রিয় খেলাগুলোর একটি। এমনকি এই সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের পক্ষ থেকেও দেয়া হয় প্রণোদনা।
মারমি ফ্যালকন ফেস্টিভালের আয়োজক আলী বিন সুলতান বললেন, ১৪ বছর ধরে মারমি প্রতিযোগিতা আয়োজন করছি। বাজপাখি আরবের ঐতিহ্য। এই প্রতিযোগিতা আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্যকে জীবিত রাখছে। এখন আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকেও জানাচ্ছি সেসব ঐতিহ্যের কথা।
প্রসঙ্গত, বিখ্যাত এ প্রতিযোগিতার ১৪তম আসর এটি। ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এ টুর্নামেন্ট চলবে জানুয়ারির ২৮ তারিখ পর্যন্ত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন