দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেছেন, তামাকজনিত মৃত্যু কমাতে আইন শক্তিশালীকরণের যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে সেটি অত্যন্ত সময়োপযোগী। তামাকের ক্ষতি থেকে দেশের মানুষকে বাঁচাতে হলে অবশ্যই শক্তিশালী আইনের বিকল্প নেই। তাই এই মহতি উদ্যোগের সঙ্গে আমার মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে সহযোগিতা করা হবে।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নিজ দ্প্তরে বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর এনসিডি কনট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (বিএনএনসিপি)-এর একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, যারা ধূমপান করেন, তারা জানেন এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তারপরও তারা তামাক কোম্পানিগুলোর প্রলভনে পড়ে ভয়ঙ্কর ফাঁদে পড়ছেন। তাই আইন সংশোধনের মাধ্যমে দেশ থেকে তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে।
এ সময় বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর এনসিডি কনট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (বিএনএনসিপি)-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৩৫.৩ শতাংশ (৩ কোটি ৭৮ লাখ) তামাক ব্যবহার করে। তামাকখাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয়ের চেয়ে তামাকজনিত মৃত্যু ও অসুস্থতার আর্থিক ক্ষতি অনেক বেশি। তামাকের এই ভয়াবহতা রোধে ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে এ লক্ষ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন যুগোপযোগী করার নির্দেশ দেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে।
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনীতে যেসব প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তার মধ্যে আছে সকল পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বিলুপ্ত করা; বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা; সব ধরনের খুচরা বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেট, ভ্যাপিং, হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ এ ধরনের সকল পণ্য উৎপাদন, আমদানি ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা ইত্যাদি।
মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের বাংলাদেশ লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের রিসার্চ বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. শেখ মোহাম্মদ মাহবুবুস সোবহান, সিটিএফকের ম্যানেজার আতাউর রহমান মাসুদ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের এন্টি-ট্যোবাকো প্রজেক্টের প্রোগ্রাম অফিসার লাইলুন নাহার ও মিডিয়া ম্যানেজার আবু জাফর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন