কুমিল্লার মুরাদনগরের নিজ জমির মাটি কাটতে বাধা দেওয়ায় আব্দুল বারেক (৬০) নামে বৃদ্ধকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার দিবাগত রাত ৮টায় উপজেলার নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের কুমিল্লা-সিলেট অঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে হাসান ইটভাটায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কৃষক আব্দুল বারেক (খোকন মিয়া) নবীপুর পূর্ব ইউনিয়নের গকুলনগর গ্রামের মৃত. আব্দুর রহমানের ছেলে।
নিহতের ছেলে কাইয়ুম মিয়া জানান, আমাদের জমি ১০বছরের জন্য পত্তন (লিজ) দেওয়া হয়েছি সাবেক চেয়ারম্যান ও হাসান ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী কামাল কামাল উদ্দিনের কাছে। তখন চুক্তি অনুযায়ী কথা ছিল এ জমি ইট তৈরিতে ব্যবহার করা হবে। বুধবার সন্ধ্যায় লোকজনের কাছ থেকে শুনতে পাই আমাদের জমির মাটি নাকি কামাল উদ্দিন স্থানীয় গিয়াস উদ্দিনের কাছে বিক্রয় করে দিছে। পরে আমি কামাল উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন জমিতে থাকা তার অতিরিক্ত মাটি বিক্রয় করেছে। অতিরিক্ত মাটি ছাড়া যদি গিয়াস উদ্দিন জমির মাটি কেটে নেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে আমরা যেন বাধা দেই। উনার কথা অনুযায়ী গিয়াস ও তার ছেলে রনিকে আমাদের পক্ষ থেকে কয়েকবার বাধা দিলেও তারা রাতের আঁধারে ভেকুদিয়ে জমির মাটি কেটে নিচ্ছিলো। এ নিয়ে বুধবার রাতে অন্যদিনের মত কেটে নিয়ে যাচ্ছিল গিয়াস উদ্দিন। এ সময় আমি এবং আমার বাবা ওই স্থানে গিয়ে মাটি কাটায় বাধা দিলে গিয়াস উদ্দিন ও তার ছেলে রনি আমার বাবা এবং আমাকে মারধর শুরু করে। একপর্যায় তারা আমার বাবার তলপেটে লাথি মারলে আমার বাবা মাটিতে লুটিয়ে পরে। পরে তাকে স্থানীয়দের সহযোগীতায় চিকিৎসার জন্য কুমিল্লার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা আমার বাবাকে মৃত ঘোষণা করে। আমি আমার বাবার খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
হাসান ইটভাটার মালিক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বলেন, আমি অসুস্থ হওয়ার কারণে গতবছর থেকে ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে ইটভাটার জমিতে থাকা ইট তৈরির মাটিগুলো স্থানীয় গিয়াস উদ্দিন ও তার ছেলে রনির কাছে বিক্রয় করে দেই। আমি যেই জমিগুলো পত্তন (লিজ) নিয়ে ইটভাটা তৈরি করেছি সেই মালিকগন কিছুদিন আগে আমাকে মোবাইল ফোনে জানান যে তাদের জমিতে থাকা ইট তৈরির মাটির পাশাপাশি জমির মূল মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে গিয়াস উদ্দিন ও তার ছেলে। তখন আমি তাদের বাধা দিতে বলি, কারণ আমি তাদের কাছে কোন জমির মূল মাটি বিক্রয় করিনি। আমি বর্তমানে খুব অসুস্থ ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি। তাই এ বিষয়ে আমি আর কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি।
মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মনির হোসাইন, মুরাদনগর উপজেলা, কুমিল্লা সংবাদদাতা
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন