শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

যমুনা সার কারখানায় যান্ত্রিক ত্রুটি ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ

তদন্ত কমিটি গঠন

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০১ এএম

বেসরকারি আন্তর্জাতিক কোম্পানি ইনগার্সল-রেন্ড (ইন্ডিয়া) লিমিটেডের বিশেষজ্ঞের হাতে বড়ধরণের যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার যমুনা সার কারখানায় (জেএফসিএল)। এতে চলতি ভরা মওসুমে বন্ধ হয়ে গেছে কারখানার ইউরিয়া সার ও অ্যামোনিয়া উৎপাদন। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার সকালে পাঁচ সদস্যদের তদন্ত কমিটি করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনার বিষয়টি রহস্যজনক হওয়ায় কারখানার ভেতরে ও বাইরে অসন্তোষ বিরাজ করছে। জেএফসিএল সূত্র জানায়, স¤প্রতি যমুনা সার কারখানার অ্যামোনিয়া প্লান্টের এনজি বুস্টার কমপ্রেসারে মাত্রাতিরিক্ত নাইট্রোজেন অপচয়সহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। কর্তৃপক্ষ এনজি বুস্টার ক্রয় ও পুনঃস্থাপনের জন্য বিষয়টি আন্তর্জাতিক কোম্পানি ‹ইনগার্সল-রেন্ড (ইন্ডিয়া) লিমিটেডকে অবগত করে। পরে ইনগার্সল-রেন্ড কর্তৃপক্ষ কারখানা পরিদর্শনের জন্য তাদের ডেপুটি ম্যানেজার (সার্ভিস) ও ভারতীয় বিশেষজ্ঞ মি. তানাজি এস. পন্দেকার-এর নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিম পাঠায়। ওই টিমের অন্য দুই সদস্য হলেন ইনগার্সল-রেন্ড›র টেরিটরি ম্যানেজার (সার্ভিস) মো. ইমামুল সর্দার এবং মার্কেটিং প্রতিনিধি কসমো মার্কেটিং কনসালটেন্টস প্রাইভেট লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম। কারখানার নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ভারতীয় বিশেষজ্ঞ মি. তানাজি এস. পন্দেকার রোববার বিকেলে কারখানার অ্যামোনিয়া প্লান্টের এনজি বুস্টার কমপ্রেসার পরিদর্শন করছিলেন। এসময় তিনি একটি ভুল বাটনে চাপ দিলে বিকট আওয়াজে অ্যামোনিয়া প্লান্ট বন্ধ হয়ে যায়। এতে মুহূর্তেই ইউরিয়া সার ও অ্যামোনিয়া উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে পড়ে। বিকট আওয়াজে কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজন দিগবিদিক ছুটোছুটি করতে থাকেন। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি প্রথমে স্বাভাবিক বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও গতকাল সকাল থেকে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়।
এ ব্যাপারে কারখানার ভারপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (এমটিএস) মো. আফাজ উদ্দিন জানান, আমি ও কারখানার মেশিনারিজ প্রধান ভ‚পতি চন্দ্র বিশ্বাসের সাথে ভারতীয় বিশেষজ্ঞ মি. তানাজি এস.পন্দেকার এনজি বুস্টার কমপ্রেসারের বিভিন্ন প্যারামিটার ঘুরে দেখছিলেন। এসময় এমটিএস বিভাগের কয়েকজন কর্মচারী ওভারটাইম সংশ্লিষ্ট কিছু জটিলতা নিয়ে আমার কাছে আসেন। তাদের সাথে আমি আলাদাভাবে কথা কথা বলায় আমার অনুপস্থিতিতে ভ‚পতি চন্দ্র বিশ্বাস অ্যামোনিয়া শিফট ইনচার্জ ফজলুল হককে বিশেষজ্ঞের সাথে থাকার জন্য বলেন। পরিদর্শন চলাকালে বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে হঠাৎ অ্যামোনিয়া কমপ্রেসার বন্ধ হয়ে যায়। এতে অ্যামোনিয়া ও ইউরিয়া সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।› এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যদের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। দুর্ঘটনার সময় পরিদর্শকের সাথে থাকা মো. আফাজ উদ্দিনকে তদন্ত কমিটির প্রধান ও ভ‚পতি চন্দ্র বিশ্বাসকে সদস্য রাখা হয়েছে। এতে বিষয়টি পরিকল্পিত নাকি অনাকাঙ্খিত তা নিয়ে খোদ কারখানার ভেতরেই নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। জানা গেছে, গত বছরের ২১ জুন থেকে গ্যাস সঙ্কটের জন্য টানা ছয়মাস কারখানায় উৎপাদন বন্ধ ছিল। ২০ ডিসেম্বর সার উৎপাদন চালু হলেও নতুন করে বন্ধ হওয়ায় নানা সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটি সারিয়ে কবে নাগাদ ফের উৎপাদনে যাবে তা নিশ্চিত বলতে পারেনি কেউ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন