শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

দ্রব্যমূল্য আকাশছোঁয়া, বই কেনার জন্য ঋণ দিচ্ছে মিশর

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২৩, ১১:৫৭ এএম

কিস্তিতে গাড়ি বা ওয়াশিং মেশিনের মতো দামী জিনিস কিনে অভ্যস্ত মিশরীয়রা এবার কিস্তিতে বই কিনতে পারবেন। আকাশচুম্বী মুদ্রাস্ফীতির কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেফসাফা প্রকাশনা হাউজের মোহাম্মদ এল-বালি বলেছেন, ‘মিশরে এখন বই একটি বিলাসবহুল পণ্যে পরিণত হয়েছে। এটি খাবারের মতো একটি মৌলিক চাহিদার পণ্য নয় এবং মানুষ বিলাসি পণ্য কিনছে না।’

তিনি কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলা থেকে কথা বলছিলেন। এটি এখন সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। গত বছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ এই মেলায় এসেছিলেন। বইয়ের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। সে কারণে কিছু মিশরীয় লেখক বলেছেন যে তারা তাদের লেখায় চরিত্র এবং বিবরণ কেটে ফেলেছেন যাতে করে লেখায় আরো হিসেবি হওয়া যায়। এল-বালি বলেন, ‘কাগজ এবং কালির দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এক টন কাগজের দাম এখন বছরের শুরুর তুলনায় প্রায় চার গুণ বেশি!’ তিনি বিদেশে বই ছাপানোর দিকে ঝুঁকেছেন এবং কম কপি তৈরি করছেন। কারণ তিনি মনে করেন যে চাহিদাও কমে যাবে।

এ বছর মেলায় ক্রেতাদের আনাগোনা কম বলে মনে করা হচ্ছে। এই বই মেলা আরব বিশ্বের সবচেয়ে পুরানো এবং বৃহত্তম। প্রকাশনা শিল্পের জন্য একটি বড় সুযোগ। এ কারণেই কিস্তিতে বইয়ের দাম পরিশোধের সুযোগ রাখার পদক্ষেপ নেয়া হয়। মিশরের পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, গ্রাহকরা এখন দেড় শতাংশ সুদে নয় মাসের কিস্তিতে বই কেনার সুযোগ পাবে।

লেখক দিনা আফিফি, যিনি কিশোর-কিশোরীদের জন্য জনপ্রিয় কথাসাহিত্য লেখেন, তিনি আশা করছেন এই পদক্ষেপটি বই বিক্রি ব্যাপক হারে বাড়িয়ে দেবে। তিনি বলেছেন যে ফারাওদের সম্পর্কে তার সর্বশেষ বইটির আকার পরিবর্তন করা হয়েছিল উৎপাদন খরচ কমাতে। "আমার বইয়ের আকার ছোট করা হয়েছে, প্রায় একশো পৃষ্ঠা থেকে মাত্র ৬০ পৃষ্ঠায় নামিয়ে আনা হয়েছে, ক্রমবর্ধমান মুদ্রণ ব্যয়ের কারণে," তিনি বিবিসিকে বলেছেন।

কিছু মিশরীয় ঔপন্যাসিক কিভাবে তাদের বই ছোট করার জন্য তারা তাদের লেখাতে কাট-ছাট করেছেন। গল্পের ধারা বর্ণনা সহজ করে, ছোট ছোট চরিত্রগুলোকে কম করে উপস্থাপন করে এবং বর্ণনা কমিয়ে তারা লেখা ছোট করেছেন। তাদের অভিযোগ, মিশরের অনেক পাঠক এখন বইয়ের নিম্নমানের নকল কপি কিনছেন। এগুলো রাস্তায় ৫০ থেকে ১০০ মিশরীয় পাউন্ডে পাওয়া যায়।

সাম্প্রতিক সময়ে মুদ্রাস্ফীতি মিশরীয়দের ক্রয় ক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে। দেশটি বছরের পর বছর কৃচ্ছতা এবং একের পর এক অর্থনৈতিক ধাক্কা সহ্য করেছে। ব্যাপকভাবে আমদানির উপর নির্ভরশীল মিশর সম্প্রতি বৈদেশিক মুদ্রা সংকটে পড়েছে। ক্রমাগত মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণে মিশরীয় পাউন্ডের মূল্য গত এক বছরে অর্ধেকে নেমে এসেছে।

সরকার বলেছে, তারা দাম কমানোর জন্য সাধ্যমতো সবকিছুই করছে। কিন্তু নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারার জন্য ইউক্রেন যুদ্ধের সাথে যুক্ত বাহ্যিক কারণগুলোকে দায়ী করছে। একজন মিশরীয় কবি বলেছেন যে, সাধারণ মানুষ বই কেনার চেয়ে টেবিলে খাবার রাখারটাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। কারণ বই তাদের তাদের মনকে পুষ্ট করবে। সূত্র: বিবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন