বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া জিটুজি প্লাস চুক্তি স্বাক্ষর

জনশক্তি রফতানি

প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানি সংক্রান্ত জিটুজি প্লাস সমঝোতা স্মারক (দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি) গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশ সোর্স কান্ট্রি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করলো। নতুন এ চুক্তি অনুযায়ী অনলাইনের মাধ্যমে দেশটির কনস্ট্রাকশন, সার্ভিস সেক্টর, প্লানটেশন খাত, কৃষি এবং ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে শিগগিরই স্বল্প অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী যাওয়া শুরু হবে। রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে জিটুজি প্লাস সমঝোতা স্বারকে বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি ও মালয়েশিয়ার পক্ষে হিউম্যান রিসোর্স মন্ত্রী দাতো শ্রী রিচার্ড রায়ত আনাক জিম স্বাক্ষর করেন। উভয় দেশের মধ্যে জিটুজি প্লাস চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার পরে সফররত মালয়েশিয়ার হিউম্যান রিসোর্স মন্ত্রী দাতো শ্রী রিচার্ড রায়ট আনক জিম এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, জিটুজি প্লাস চুক্তির মাধ্যমে শিগগিরই বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়া শুরু হবে। এক প্রশ্নের জবাবে হিউম্যান রিসোর্স মন্ত্রী দাতো শ্রী রিচার্ড রায়ত আনাক জিম বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে কোনো মনোপলি ব্যবসা হবে না। জিটুজি প্লাস প্রক্রিয়ায় কর্মী যাওয়া শুরু হলে অবৈধপথে মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়া বন্ধ হবে বলেও হিউম্যান রিসোর্স মন্ত্রী দাতো শ্রী রিচার্ড রায়ত আনাক জিম উল্লেখ করেন।  
এ সময় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব বেগম শামছুন নাহার, কুয়ালালামপুরে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলামসহ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং মালয়েশিয়ার পক্ষে সে দেশের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল (পলিসি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল) মোহাম্মদ সাহার দারুসমান, শ্রম বিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মদ জেফরি বিন জোয়াকিম, আন্ডার সেক্রেটারি (লেবার পলিসি ডিভিশন) বেটি হাসান, মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কর্মকর্তা রবার্ট দাপান, অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি (লেবার অব পলিসি ডিভিশন) সতিশ শ্রীনিভাসান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি (ফরেন ওয়ার্কার্স ম্যানেজমেন্ট ডিভিশন) মোহাম্মদ জামরি বিন মাত জাইন এবং ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ান রাষ্ট্রদূত নূর আশিকান বিনতি মোহাম্মদ তিয়াব উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের মার্চ মাস থেকে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানি বন্ধ রয়েছে। বহু কূটনৈতিক তৎপরতার পর ২০১২ সালে মালয়েশিয়ার সাথে বাংলাদেশের জি টু জি প্রক্রিয়ায় শুধু প্লানটেশন খাতে সরকারী উদ্যোগে কর্মী যাওয়ার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। জি টু জি প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়া কর্মী প্রেরণের জন্য ডাক-ঢোল পিটিয়ে দু’দফায় সারা দেশ থেকে প্রায় ২২ লাখ কর্মীর নিবন্ধন করা হয়েছিল। কিন্ত জি টু জি প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানি চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল থেকে স্বল্প অভিবাসন ব্যয়ে গত ২১ জানুয়ারী পর্যন্ত ৯ হাজার ৮শ’ ৯২জন কর্মী জি টু জি প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়া গেছে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, জিটুজি প্রক্রিয়ায় মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ সফলতা না আসায় মালয়েশিয়ার প্রস্তাবে বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করে জিটুজি প্লাস সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। এ চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ থেকে সোর্স কান্ট্রি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বিএমইটি’র ডাটাবেইজে নিবন্ধিত কর্মীর তালিকা থেকে কর্মী প্রেরণ করা হবে। প্রবাসী মন্ত্রী বলেন, উল্লেখিত চুক্তির মাধ্যমে একজন কর্মী ৩৪ হাজার টাকা থেকে ৩৭ হাজার টাকায় ব্যয়ে মালয়েশিয়ায় চাকরি পাবে। মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা কর্তৃক তাদের নির্ধারিত অধিকাংশ অভিবাসন ব্যয় নির্বাহ করবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী নিয়োগের সাথে সম্পৃক্ত থাকবে। সমঝোতা স্মারকটি ৫ বছরের জন্য স্বাক্ষরিত হবে, তবে উভয় পক্ষের সম্মতিতে তা’ বৃদ্ধি করা যাবে। সমঝোতা স্মারকের অধীনে গঠিত জয়েন্ট ওর্য়াকিং গ্রুপ বিভিন্ন সময়ে সভায় মিলিত হয়ে কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্বলতা বা অভিযোগ থাকলে তা’ প্রতিকারের ব্যবস্থা নিতে পারবে। প্রেস ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করা হয়, নিয়োগকর্তা এবং কর্মীর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিপত্র কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে সত্যায়ন করা হবে। প্রতিনিধি দল গতকাল রাতে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন।
 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন