বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

সুন্দরবনের গোলপাতা আহরণ মৌসুম শুরু, বনে যেতে শুরু করেছেন বাওয়ালীরা

খুলনা ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০২৩, ৫:০৬ পিএম

সুন্দরবনে গোলপাতা আহরণ মৌসুম শুরু হয়েছে। ২৯ জানুয়ারী থেকে শুরু হওয়া গোলপাতা মৌসুম চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। বনবিভাগের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে গোলপাতা আহরণে বনের অভ্যন্তরে বাওয়ালীরা যাওয়া শুরু করেছেন।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের (মোংলা) স্টেশন অফিসার মো. ওবায়দুর রহমান জানান, ২৯ জানুয়ারী সকাল থেকে গোলপাতা আহরণকারী বাওয়ালীদের অনুমতিপত্র দেওয়া শুরু হয়েছে। অনুমতি ছাড়া কোনো বাওয়ালী বনের প্রবেশ করতে পারবে না। সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জে দুইটি গোলপাতার কূপ রয়েছে। একটি হলো শ্যালা গোলপাতা কূপ আর অপরটি হলো চাঁদপাই গোলপাতা কূপ। গোলপাতা আহরণের সময় বনের অন্য কোনো ধরনের গাছপালা কাটা যাবে না। কোনো বাওয়ালী যদি গোলপাতার পাশাপাশি অন্য প্রজাতির গাছ কাটেন কিংবা বনের ক্ষতি করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বন আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, চলতি মৌসুমে শ্যালা কূপ থেকে চার হাজার মেট্রিক টন ও চাঁদপাই কূপ থেকে তিন হাজার মেট্রিক টন গোলপাতা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত মৌসুমে প্রতি কুইন্টাল গোলপাতা আহরণে রাজস্ব নেওয়া হয়েছিল ২৫ টাকা। আর এবার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে প্রতি কুইন্টাল ৬৮ টাকা। দিনদিন গোলপাতার ব্যবহার কমে আসায় কূপ থেকে গোলপাতা আহরণের পরিমাণ কমে আসছে। এবারও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম গোলপাতা আহরণ হবে বলেও জানান বনবিভাগের এ কর্মকর্তা।
এদিকে, বাওয়ালীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সুন্দরবন থেকে বনজদ্রব্য আহরণ সংকুচিত এবং চাহিদা কমে যাওয়ায় গোলপাতা সংগ্রহে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে বাওয়ালীরা। বাওয়ালী হাবিবুর রহমান সানা জানান, ২৫ বছর ধরে তিনি সুন্দরবন থেকে গোলপাতা সংগ্রহ করে আসছেন। আগে গোলপাতার খুব চাহিদা ছিল, দা,ও ছিল ভাল। এখন আর গোলপাতার সেই কদর নেই।
মোংলা বাজারের খুচরা গোলপাতা ব্যবসায়ী মামুন পাটোয়ারি বলেন, এখন আগের মতো আর গোলপাতার চাহিদা নেই। বিক্রি কম হওয়ায় অনেক খুচরা বিক্রেতাদের গত বছরের গোলপাতা এখনও রয়ে গেছে। গোলপাতায় যে পরিমাণ টাকা লগ্নি করা হয়, সেই তুলনায় ব্যবসা নেই।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, নিবির্ঘে যাতে বাওয়ালীরা গোলপাতা কাটতে পারে তার জন্য বন বিভাগ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। সুন্দরবনের ওপর থেকে চাপ কমানোর জন্য বনজদ্রব্য আহরণ সীমিত করা হয়েছে। গোলপাতা আহরণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, গোলপাতা আহরণের সময় বনের অন্য কোনো ধরনের গাছপালা কাটা যাবে না, গোলপাতা আহরণের জন্য নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত সময় বনে অবস্থান করা যাবে না, নির্দেশনা সঠিকভাবে পালন করতে হবে এবং গোলপাতার আড়ালে যাতে কোনো ধরণের বনজদ্রব্য পাচার না হয় সে বিষয়টি নিবিড় তদারকির মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে। কোনো বাওয়ালি গোলপাতার পাশাপাশি অন্য প্রজাতির গাছ কাটে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন