শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

যুগপৎ আন্দোলনে জনগণের আস্থা বেড়েছে

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

সরকারের পদত্যাগের দাবিতে চলমান যুগপৎ আন্দোলনে জনগণের আস্থা বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, যুগপৎ আন্দোলনে অবশ্যই মানুষের মধ্যে একটা আস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো এই দাবির (১০ দফা দাবি) সাথে একমত হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্যে তারা লড়াই করছেন, সংগ্রাম করছেন। এটা (যুগপৎ আন্দোলন) নিসন্দেহে অনেক বড় মাত্রা যুক্ত করেছে এবং জনগণকে আশ্বস্ত করেছে। গতকাল রোববার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালযে ১২ দলীয় জোটের লিয়াজোঁ কমিটির সাথে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
পদযাত্রা কর্মসূচিকে বিএনপির মরণ যাত্রা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, উনার (ওবায়দুল কাদের) কিশোর কুমারের সেই গান ( আমার মরণ যাত্রা যেদিন যাবে...) মনে পড়ছে আরকি। উনি নিজের চিন্তা করছেন কিনা আমি জানি না। আমরা পদযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে এইটুকু বলতে পারি, এটি একটা নতুন মাত্রা সৃষ্টি হলো এবং জনগণের মধ্যে গণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার যে আকাক্সক্ষা সেটার জন্য রাজপথে নেমে আসার একটা নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। রাজশাহীর সমাবেশ : রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যবহার করা হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের সরকার ও তাদের যে চরিত্র, তাদের যে কর্মকাÐ এটা খুব স্পষ্টভাবে এসে গেছে। তারা এদেশে সম্পূর্ণভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চাপিয়ে দিচ্ছে সেটাই এই প্রমাণগুলো আসে। আওয়ামী লীগ সবসময় একটা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড পলিটিক্যাল পার্টি। তারা মুখে বলে একটা কাজ করে আরেকটা।

তিনি বলেন, সরকার আমাদের প্রোগ্রামের সময় তিন আগে থেকে পরিবহন ধর্মঘট করিয়ে দেয়, তারা তিন আগে থেকে পুলিশকে নামিয়ে দিয়ে রাস্তার মধ্যে বসিয়ে মোবাইল টেলিফোন পর্যন্ত চেক করতে থাকে। গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশের ১৫ দিন আগে এখানে একটা বিশেষ অভিযান চালিয়েছে। সেই অভিযানটা কী? তাদের ভাষায় বিভিন্ন মাদক দ্রব্য, বেআইনি জিনিসগুলো প্রতিরোধ করার জন্য হোটেলে-রেস্টুরেন্টে-মেসে-ছাত্রবাসে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে হাজার হাজার ছেলেপেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। এটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের কৌশল যে, তারা বিরোধী দলকে যেকোনো মূল্যে হোক বাধা প্রদান করবে, তাদেরকে তারা কোনোভাবে কর্মসূচি করতে দেবে না। অন্যদিকে ভিন্নমত সহ্য করবে না। আর তারা (সরকারি দল) তাদেরটাকে বলতেই থাকবে, করতেই থাকবে এবং সেই ক্ষেত্রে তারা রাষ্ট্রের সমস্ত যন্ত্রগুলোকে ব্যবহার করবে।

১২ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, আমরা আগামী দিনে আন্দোলনকে কিভাবে আরো গতিশীল করার যায় তা নিয়ে বিএনপির সাথে কথা বলেছি এবং একটি স্থির সিদ্ধান্ত দিকে অগ্রসর হয়েছে। সেই সিদ্ধান্তের কথা আমি বলতে চাই না। শুধু এইটুকু বলতে চাই যে, সারাদেশে এই ফ্যাসিস্ট সরকার বিরোধী, এই অগণতান্ত্রিক সরকার বিরোধী সমস্ত গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করাই আজকে আমাদের মূল লক্ষ্য। এ টু জেড সমস্ত সরকার বিরোধী শক্তি আজ মনে মনে, অন্তরে অন্তরে সংকল্পবদ্ধ, ঐক্যবদ্ধ।

সরকার পতনে যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত থাকা গণতন্ত্র মঞ্চের পর রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি ১২ দলীয় জোটের লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে এই বৈঠক হয়। এই বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

লিয়াজোঁ কমিটির এই বৈঠকে ১২ দলীয় জোটের কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, এলডিপির আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপার রাশেদ প্রধান, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল করিম, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, মুসলিম লীগের তফাজ্জ্বল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ও আবদুল আউয়াল মিন্টু ছিলেন।
এদিকে বিকেলে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ কারো পৈত্রিক সম্পত্তি নয়, ব্যক্তি সম্পত্তি নয়। এদেশের মানুষ লড়াই করেছে। এখানে যা ইচ্ছা তাই করে কেউ পার পেয়ে যাবে, চলে যাবে তা হতে পারে না। আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, আজকে তথাকথিত উন্নয়নের কথা বলে লুটপাট চলছে। মেগা প্রজেক্ট দিয়ে দিয়ে মেগা দুর্নীতি চলছে এবং সুপরিকল্পিতভাবে শুধু কথার জোরে.. আমাদের দেশে একটা কথা আছে- চাপার জোর। যাদের জোর বেশি তাদের চাপার জোর, এই চাপার জোরে তারা নাকী এখন অনুন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করে ফেলেছে। যেদেশের এখনো ৪২% মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে বাস করে, খেতে পায় না দুই বেলা দুই মুটো ভালো খেতে পায় না সেই দেশে নাকী উন্নয়নের লহরী বয়ে যাচ্ছে।

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এজে মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব কায়সার কামালের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, জয়নাল আবেদীন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ফজলুর রহমান, সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের আবদুল জাব্বার ভুঁইয়া, কামরুল ইসলাম সজল, ঢাকা বার ইউনিটের মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ওমর ফারুক ফারুকী প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।####

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন