ব্রিটেনজুড়ে অব্যাহতভাবে চলতে থাকা শ্রমিক ও কর্মীদের ধর্মঘট দেশটি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছে। আর এর জন্যই জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক। গত কালকের বিশাল ধর্মঘট ও তার জেরে প্রায় থমকে যাওয়া জনজীবনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দিকেই আঙুল তুলেছেন দেশবাসী। ঋষি সুনকের পদত্যাগ দাবি করেছে বিরোধী লেবার পার্টি।
বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বৃহস্পতিবার ধর্মঘটে নেমেছিলেন পাঁচ লাখ শ্রমিক ও কর্মী। যার জেরে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় লন্ডন-সহ ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের বিস্তীর্ণ এলাকা। কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা এই ধর্মঘটে যোগ দেয়ায় কাল বন্ধ ছিল ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের ৮৫ শতাংশ স্কুল। ধর্মঘটে অংশ নেন শিক্ষাকর্মীরাও। স্বাস্থ্যকর্মী ও নার্সরা ধর্মঘটে যোগ দেয়ার ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবাও বহুলাংশে ব্যাহত হয়।
বাস ও ট্রেন চালকেরা ধর্মঘটে অংশ নেয়ার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে। যেখানে দু’টি বড় শহরের মধ্যে ১৫ মিনিট অন্তর ট্রেন পরিষেবা রয়েছে, সেখানে গতকাল অনেক দেরিতে, কমপক্ষে দু’ঘণ্টা অন্তর অন্তর ট্রেন ছেড়েছে। বিমানবন্দরের কর্মীরাও এই ধর্মঘটে শামিল হওয়ায় গতকাল বিমানবন্দরের যাত্রীদেরও নাকাল হতে হয়েছে। কর্মী সঙ্কটের জন্য বন্ধ ছিল লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়াম।
করোনা-পরবর্তী সময়ে ঘোর আর্থিক মন্দার মুখে পড়েছে ব্রিটেন। আর্থিক সঙ্কটে জেরবার সাধারণ মানুষ। এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনক গত অক্টোবরে দেশের প্রধানমন্ত্রীর মসনদে বসেন। তখন সাধারণ মানুষের মনে আশা জেগেছিল, অর্থনীতির মোড় হয়তো ঘুরিয়ে দিতে পারবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু বাস্তবে, মাত্র ১০০ দিনে, দেশের অর্থনীতির দিশা পাল্টে দেয়া সুনকের পক্ষে সম্ভব হয়নি।
ফলে অসন্তোষ বেড়েছে সাধারণ শ্রমিক ও কর্মীদের মধ্যে। যাদের মধ্যে রয়েছেন অনেক সরকারি কর্মীও। বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের আরো দাবি, কাজের পরিবেশ আরো উন্নত করতে হবে। এই সব দাবি-দাওয়া তুলেই গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন ক্ষেত্রের কর্মীরা দফায়-দফায় কর্মবিরতি পালন করেছেন। যার জেরে ধাক্কা খাচ্ছে দেশবাসীর দৈনন্দিন জীবনযাত্রা। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন