গত ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বক্তব্য ‘ডাটা সুরক্ষা আইন পাস হলে অনেক মার্কিন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হবে’ বক্তব্যে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেছেন আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, আমার মনে হয়, ডাটা সুরক্ষা আইন প্রত্যেক দেশের জন্য প্রয়োজন। সেটা পিটার হাসও বলেছেন। এ বিষয়ে আবারও স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা হবে। গতকাল সোমবার বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সেমিনার হলে পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত ১১তম ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন শেষ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় খালেদা জিয়ার মুক্তির আবেদনে রাজনীতি না করার বিষয়টি ছিল কিনা, তা জানা নেই মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আমি পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে শুনেছি, তার (খালেদা জিয়া) ভাই শামীম ইস্কান্দার বিএনপিকে বলেছেন, রাজনৈতিক প্রোগ্রামগুলোতে বেগম খালেদা জিয়াকে যেন জড়িত না করা হয়। সেক্ষেত্রে কেউ যদি এমন বক্তব্য দিয়ে থাকে তাহলে খুব একটা ভুল বক্তব্য দেয়নি। জাতীয় সংসদে কয়েকদিন আগে সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য তার পরিবার যে আবেদনটি করেছিল, সেখানে মুচলেকায় ছিল, তিনি রাজনীতি করবেন না’। আসলেই মুচলেকায় খালেদা জিয়ার রাজনীতি না করার বিষয়টি ছিল কিনা সাংবাদিকরা জানতে চান আইনমন্ত্রীর কাছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয়, ডাটা সুরক্ষা আইন প্রত্যেক দেশের জন্য প্রয়োজন। সেটা তিনিও (পিটার হাস) বলেছেন। এ বিষয়ে আবারও স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা হবে। আলোচনার মাধ্যমে কোনো অসুবিধা যদি এ খসড়া আইনে থেকে থাকে, তাহলে তা সংশোধন করা হবে। সুতরাং, আমি আশা করবো ডাটা সুরক্ষা আইন পাস হলে অনেক মার্কিন প্রতিষ্ঠান চলে যাবে- ঢালাওভাবে এমন কথা বলা থেকে সবাই বিরত থাকবো। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে সবার কথা বলার অধিকার আছে। আইনটির ব্যাপারে আমরা অভিযোগ শুনেছি। শেষ পর্যন্ত আইন করার ব্যাপারে প্রচলিত যে প্রথা আছে, সেটি মেনেই আইন করা হবে।
এর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আনিসুল হক বলেন, বিচার বিভাগ প্রায় ৩৭ লাখ মামলার বোঝা নিয়ে যথাসম্ভব স্বল্প সময় ও খরচে বিচারিক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। বিচারাধীন মামলার এ জট কমিয়ে আনা বিচার বিভাগের জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আপনাদের (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ) অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করতে হবে।
এসময় তিনি উপস্থিত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজদের নিজ নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে কীভাবে এ মামলার জট কমিয়ে এনে দ্রæত মানসম্পন্ন বিচার সেবা প্রদান করা যায় সেই পরামর্শ দেন।
বিচারপতি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার। এছাড়া বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) শেখ আশফাকুর রহমানসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন