বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

মার্কিন কূটনীতিক পরিষ্কার বার্তা দিয়েছেন : নাগরিক সমাবেশে আমীর খসরু

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০৫ এএম

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, একজন মার্কিন কূটনীতিক যখন সরকারের সঙ্গে কথা বলছেন, তখন পরিস্কার বার্তা দিয়েছেন- যে দেশে গণতন্ত্র নিম্নগ্রামী থাকবে, নিচের দিকে চলে যাবে, তাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কও নিম্গ্রামী হবে, সহযোগিতা কমে আসবে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ভবনে স্বাধীনতা হলে এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। বুধবার বিকেলে রাজধানীর আমেরিকান সেন্টারে সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সফররত মার্কিন কূটনীতিক ডেরেক শোলে বলেন, বিশ্বের শক্তিশালী গণতন্ত্রের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে শক্তিশালী সম্পর্ক আছে। বিশ্বের যেকোনো দেশে গণতন্ত্র সংকুচিত হয়ে পড়লে যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা সীমিত করে নেয়। এর মানে এই নয় যে আমরা সহযোগিতা করব না। এর মানে এটাও নয় যে আমাদের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ নয়। সম্পর্ক সীমিত করার বিষয়টি বিবেচনায় আসে ব্যবসা-বিনিয়োগের ক্ষেত্রে।

এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, এগুলো সবচেয়ে কঠিন কথা। মানবাধিকার প্রশ্নে কোনো আপোষ নেই বলেছেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ব্যতিত কোনো গণতন্ত্র চলতে পারে না। এই কথাগুলো ঢাকায় বসে তিনি বলেছেন। কত অপমানকর!

বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা তাদের পকেটে চলে গেছে। এজন্য বাংলাদেশের মানুষ যেমন রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছে, তেমনি বিশ্ববাসী, বিশ্ববিবেক প্রতিবাদ করছে। এই প্রতিবাদ বাংলাদেশে যেমন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে, বিশ্ববাসীও জোর করে ক্ষমতায় যাওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে।
ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে রাষ্ট্রীয় ও দলীয় সন্ত্রাস ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে রয়েছে। পতন ঠেকাতে কখনও দুটোকেই তারা একত্রে ব্যবহার করছে। গুম-খুন-আক্রমণ-গ্রেপ্তার-ভয়ভীতি দেখানো ইত্যাদিই তাদের এখন ক্ষমতায় টিকে থাকার অস্ত্র। তিনি দেশের বর্তমান অর্থনীতির মডেলকে ‘আওয়ামী লুটপাট মডেল’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

আমীর খসরু বলেন, সাধারণ আমদানীকারকরা আজকে ডলারের অভাবে এলসি খুলতে ও পণ্য আমদানী করতে পারছে না। দলীয় লোকেরাই ডলার পাচ্ছে। তারাই এলসি খুলতে পারছে। তারাই বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে কথা বলাতে বিএনপির কোনো আগ্রহ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, যারা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে রয়েছেন, তারা নিজেরাই অবৈধ। কারণ, বর্তমান সরকার নির্বাচিত নয়। এখন সরকার পতনই বিএনপির মূল লক্ষ্য বলে জানান বিএনপির এই নীতিনির্ধারক। তেল, গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের উদ্যোগে এই নাগরিক সমাবেশ হয়।
বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আওয়ামী লীগ মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও এদের শাসনামলেই গণতন্ত্র প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এরা ক্ষমতায় এসেই জনগণের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেয়। ৭২ থেকে ৭৫ সালে যেমন মানুষের কোনো বাকস্বাধীনতা ছিলো না এখনও নেই। এরা (আওয়ামী লীগ) গনতন্ত্রের বাহক নয় হত্যাকারী। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানই এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছিলেন। পরে স্বৈরাচার এরশাদ গনতন্ত্রকে আবার ব্রাকেট বন্দী করলে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আবারও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়। এবার যারা ক্ষমতা আঁকড়ে আছেন তারা শুধু গণতন্ত্রই হত্যা করেননি, দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। দেশের মানুষ অনাহারে, অন্যদিকে রাষ্ট্রের টাকা লুট করে বেগম পাড়ায় হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে বাড়ী করছে। গত চার বছরে সুইজারল্যান্ডে সুইস ব্যাংকে সবচেয়ে বাংলাদেশ থেকে টাকা বেশি জমা হয়েছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপি সবসময় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাস করে। কিন্তু সরকার আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিগুলোর বিপরীতে কাউন্সিল কর্মসূচি দিয়ে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করে বিএনপির ওপর দায় চাপাতে চায়। সরকারকে বুঝতে হবে আজকের এই চলমান আন্দোলন শুধু বিএনপির একার আন্দোলন নয়, দেশপ্রেমিক সকল রাজনৈতিক দল ও জনগণের আন্দোলন। জনগণ আপনাদের সীমাহীন অত্যাচারে বারুদে পরিনত হয়েছে। আর এ বারুদে হাত দিলে আগুনে হাত পুড়ে যাবে।

সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জাগপার প্রেসিডিয়াম মেম্বার আসাদুর রহমান খান, তাতী দলের যুগ্ম আহŸায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন