আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়।
আগামী নির্বাচন বিশ্বাস যোগ্য, সুষ্ঠু, অবাধ হবে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং নির্বাচন কমিশনকে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে। আমরা আগামী নির্বাচন সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশান-২-এর ইইউ অ্যাম্বাসেডরস রেসিডেন্স অ্যাপার্টমেন্টে অ্যাম্বাসেডরদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিক একথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যে দল সংলাপে প্রেসিডেন্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে। এমনকি ইলেকশন কমিশন তাদেরকে (বিএনপি) দুইবার সংলাপে আমন্ত্রণ করেছে। তবে সংলাপের ব্যাপারে বিএনপির বরাবরই একটা অনাগ্রহ রয়েছে। আসলে মনের দিক থেকে বিএনপি ইলেকশনে যেতে ইচ্ছুক নয়। কারণ তারা জানে নির্বাচনে শেখ হাসিনা এবং তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগই আবার ক্ষমতায় আসবে। তাই হেরে যাওয়ার ভয়ে বিএনপি ক‚টকৌশল অবলম্বন করছে। তিনি বলেন, আমরা যে ইনফরমেশন পাচ্ছি তাতে বিএনপি ২০১৪-১৫ সালের মতো আবারও আগুন সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদের ওপর ভর করে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা করছে। বিএনপি আন্দোলনের নামে দেশের স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করছে। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ক্ষমতা দখলের পায়তারা করছে। ইইউর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইইউ এর সাতটি দেশের সঙ্গে কথা বলেছি। আগামী নির্বাচন সামনে রেখে রোলিং পার্টি হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আজকে বৈঠকে আসা। তারা চায় আগামী নির্বাচনে বিএনপিসহ সব দল অংশগ্রহণ করবে।
ইইউ আগামী নির্বাচন নিয়ে যা বলছে এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আপনাদের মতামত কী এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা একটা কথা পরিষ্কারভাবে বলেছি যেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল তার বক্তব্যে বলেছেন আগামী নির্বাচন বিশ্বাস যোগ্য, সুষ্ঠু, অবাধ হবে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং নির্বাচন কমিশনকে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে আজকে আমাদের বক্তব্যের কোনো ভিন্নতা নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা বলেছেন আমরা তাই প্রতিধ্বনি করেছি। একই সঙ্গে আমরা আগামী নির্বাচন সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগামী নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো নির্দেশনা বা মতামত ছিল কিনা এবং বিএনপিকে নির্বাচনে আনার ব্যাপারে কোনো পরামর্শ ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা তো কারো নির্দেশনা শুনব না। আমাদের নির্দেশনা আমাদের সংবিধান এবং আমাদের গঠনতন্ত্র। যা আমরা ফলো করি। আমাদের দেশে ইলেকশনের যত রিফর্ম হয়েছে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে এবং তার উদ্যোগেই হয়েছে। এমনকি ইলেকশনের জন্য একটি আইন ও সংসদে পাস হয়েছে।
তিনি বলেন, এখানে প্রধানমন্ত্রীর যে ক্ষমতাটা ছিল তা হচ্ছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং তিনজন কমিশনার সিলেক্টর ছিলেন তিনি। সেই ক্ষমতারবলে তিনি ল’ ফুল্লি সার্চ কমিটি গঠন করেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট লোকজনকে নিয়ে। তার মানে বাংলাদেশের ইতিহাসে ৭৫ সালের পরে এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এই উদ্যোগ নিয়েছেন। কাজেই আমরা ভালো একটা ইলেকশন চাই। ইলেকশন ব্যবস্থায় গণতন্ত্রকে আমরা আরও ম্যাচিউর দেখতে চাই। সে লক্ষ্যে যা যা প্রয়োজন আমরা তা করছি।
বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি মত দিয়েছে অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে খুব ফলপ্রসূ আলাপ আলোচনা করেছি। এখন তারা কী ভাবছে এটা তাদের বিষয়। তবে বিএনপি আগামী নির্বাচনে আসুক এটা তারা চায়। তারা চাচ্ছে বাংলাদেশে সকল নিবন্ধিত দলের একটা অংশগ্রহণ মূলক ইলেকশন হোক। বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে আনার ব্যাপারে ইইউর কোনো পরামর্শ ছিল কিনা বা রোলিং পার্টি হিসেবে আওয়ামী লীগের উদ্যোগ কী থাকবে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) এখানে মাঝে মধ্যেই আসে। আমরা তা দেখতে এবং শুনতে পাই। তারা তো চুপিচুপি আসে। গোপনে গোপনে আসে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত উপস্থিত ছিলেন।
##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন