আজ রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলার শুনানি। সকাল সাড়ে ১০টায় সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে কয়েকজনের। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক ছিলেন পি এম শাহাদাৎ হোসেন। শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশরেন (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ মামলার সংশোধিত চার্জশিটভুক্ত আসামি তিনি। বর্তমানে জামিনে রয়েছেন মেয়র আরিফ। মেয়র আরিফ ছাড়াও আজ আদালতে হাজিরা দেন কিবরিয়া হত্যা মামলার কারাবন্দি আসামি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশ (হুজিবি)-এর সদস্য মিজানুর রহমান মিঠু, বদরুল আলম মিজান, হাফেজ সৈয়দ নাঈম আহমেদ, মুফতি মইন উদ্দিন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা মফিজুর রহমান ওরফি অভি ও মুফতি আব্দুল হাই এবং জামিনে থাকা হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র গোলাম কিবরিয়া গউছ, জয়নাল আবেদীন জালাল, মো. আয়াত আলী, জমির আলী, তাজুল ইসলাম, কাজল মিয়া, আব্দুল জলিল, একেএস আবদুল কাইয়ুম ও জয়নাল আবেদীন মুমিন। শুনানি শেষে আগামী ১৯ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য্য করেছেন বিজ্ঞ বিচারক। এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য ছিলো। কিন্তু পুলিশ সাক্ষী উপস্থাপন করতে না পারায় সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালর ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভা শেষে ফেরার পথে গ্রেনেড হামলার শিকার হয়ে নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ ৫ জন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলা তিন দফা তদন্ত করে সিআইডি। ২০০৫ সালে ১৮ মার্চ প্রথম দফায় শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে একটি অভিযোগপত্র দেয় হয়। এর বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দেন বাদী মজিদ খান। ২০০৭ সালে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য আবারো দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিকে। এরপর ২০১১ সালের ২০ জুন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, মুফতি হান্নানসহ ২৪ জনকে আসামি করে অধিকতর তদন্তের অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ওই বছরের ২৮ জুন শাহ এএমএস কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া নারাজি আবেদন করেন সেই অভিযোগপত্রের ওপরও। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১২ নভেম্বর সিআইডি সিলেট রেঞ্জের সিনিয়র এএসপি মেহেরুন নেছা পারুল সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে দাখিল করেন অভিযোগপত্র। ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে গঠন করা হয় অভিযোগ। এছাড়া ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় (নং-২৩/০৫)২৮ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের পর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। হত্যা মামলায় পলাতক রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আব্দুল হাই, মোহাম্মরুল ওরফে মো. বদরুল, আলহাজ্ব মাওলানা তাজ উদ্দিন ও মো. মুহিবুর রহমান।
আসামিদের মধ্যে কারাগারে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, মিজানুর রহমান মিটু, হাফেজ সৈয়দ নাঈম আহমদ আরিফ প্রকাশ নিমু, বদরুল আলম মিজান, মাওলানা শেখ ফরিদ আহমদ, আব্দুল মাজেদ ভাট ওরফে ইউসুফ ভাট, মাওলানা শেখ আব্দুস সালাম, মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন ওরফে খাজা ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ, মুহিবুল্লাহ ওরফে মুজিবুর রহমান প্রকাশ অভি ও মাওলানা শেখ আব্দুস সালাম। এছাড়া জামিনে আছেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জিকে গৌসসহ ১২ জন ।