ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানির ব্যাপারে চলচ্চিত্র অঙ্গনের সবাই একমত হয়েছেন জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, চলচ্চিত্র অঙ্গনের সব সমিতি এখন ভারতীয় হিন্দি সিনেমা আমদানির বিষয়ে একমত হয়েছে। সুতরাং, এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে অসুবিধা নেই। গতকাল সচিবালয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সম্মিলিত চলচ্চিত্রের পরিষদ নেতারা ‘নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র আমদানি ও মুক্তি প্রসঙ্গে’ শিরোনামে চিঠিটি মন্ত্রীর হাতে হস্তান্তর করেন।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় কিছু শর্তসাপেক্ষে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানির ব্যাপারে চলচ্চিত্র অঙ্গনের সবাই একমত হয়েছেন। এ জন্য তাদেরকে অভিনন্দন। আমিও নির্দিষ্ট পরিমাণ আমদানির পক্ষে, অবাধ আমদানিতে আমাদের শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অতীতেও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আমার কাছে ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানির দাবি উপস্থাপন করা হয়েছিল। পরে শিল্পী সমিতি আপত্তি জানিয়েছিল। সে কারণে আমি বারবার বলে এসেছি, সব সংগঠন একমত হয়ে বললে তখন আমরা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবো। এখন সেটি সম্ভব। প্রস্তাব অনুযায়ী, আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরেও আনতে হবে।
ড. হাছান বলেন, প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশে আগের তুলনায় সিনেমা বেশি হচ্ছে এবং অনেক সিনেমা বক্স অফিস হিট করছে। কিন্তু এখনও প্রতি সপ্তাহে ভালোভাবে চালানোর মতো সিনেমা সবসময় হচ্ছে না, এটি বাস্তবতা। সেই বাস্তবতার নিরিখে আপনারা সুচিন্তিতভাবে, ভেবে-চিন্তে মতামত দিয়েছেন যে, নির্দিষ্ট পরিমাণ ভারতীয় হিন্দি ছবি যদি আমদানি হয়, তাহলে অনেকেই আবার হলমুখী হবে এবং তখন আমাদের বাংলা ছবিও দেখতে যাবে।
সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ তাদের চিঠিতে সরাসরি হিন্দি চলচ্চিত্র উল্লেখ না করলেও পরীক্ষামূলকভাবে দুই বছরের জন্য উপমহাদেশীয় বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র আমদানির প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে প্রথম বছরে ১০টি ও পরের বছরে ৮টি চলচ্চিত্র আমদানির ও প্রতিবছর ৫২ সপ্তাহের মধ্যে ২০ সপ্তাহ প্রদর্শনের কথা বলা হয়। ঈদ-উল-ফিতর, ঈদ-উল-আজহা ও দুর্গাপূজার সপ্তাহে এগুলো প্রদর্শনযোগ্য নয়। এ ধরনের প্রতিটি সিনেমা আমদানি সংস্থাকে আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদকে দিতে হবে এবং ছাড়পত্র নিতে হবে। এই অর্থ শিল্পী সমিতির অগ্রাধিকারসহ পরিষদ সদস্যদের কল্যাণে ব্যয় হবে। এছাড়া যৌথ প্রযোজনা নীতিমালা সংস্কার ও শিল্পী সংগ্রহে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রকল্প চালুর প্রস্তাবনা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, চলচ্চিত্র শিল্প ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ইতোমধ্যে অনেক নতুন নতুন হল বিশেষ করে সিনেপ্লেক্স চালু হয়েছে। কিছু পুরনো বা বন্ধ হওয়া হলও আবার চালু হয়েছে। আপনাদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে অনেকগুলো হল আবার চালু হবে। তখন আমাদের শিল্পীদের অভিনীত সিনেমা দেখানোরও সুযোগ আরও বাড়বে।
এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াৎ, শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিপুন আক্তার ও সদস্য রিয়াজ, প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কাজী শোয়েব রশীদ, সহ-সভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন, প্রযোজক পরিবেশক সমিতির পক্ষে খোরশেদ আলম খসরু ও মোহাম্মদ হোসেন, ফিল্ম ক্লাবের সভাপতি কামাল মোহাম্মদ কিবরিয়া এবং সম্মিলিত চলচ্চিত্রের পরিষদের সদস্য সচিব শাহ আলম কিরণ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন