উত্তর কোরিয়া মারাত্মক খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ, খারাপ আবহাওয়া এবং নিষেধাজ্ঞা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটির পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে। যদিও আগে থেকেই উত্তর কোরিয়ায় খাদ্য ঘাটতি চলে আসছে বলে মনে করা হয়। দেশটির প্রধান খাদ্যশস্য চাল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০০ উত্তর কোরিয়ান ইউয়ানে। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪০০ টাকা।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে, কৃষি নীতিতে 'মৌলিক পরিবর্তন' নিয়ে আলোচনা করতে শীর্ষ কর্মকর্তারা ফেব্রুয়ারির শেষে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। কৃষি ক্ষেত্রে চাপের মুখে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সাম্প্রতিক সময়ে সামরিক শক্তি প্রদর্শন বাড়িয়েছে কিম জং উনের প্রশাসন। ধারাবাহিকভাবে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে দেশটি। এক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা। তবে উল্টোদিকে দেশটিতে দেখা দিচ্ছে খাদ্য সংকট।
উত্তর কোরিয়ার খাদ্য ঘাটতির বিষয়ে সতর্ক করে দক্ষিণ কোরিয়া। স্যাটেলাইট চিত্রগুগুলোর বরাত দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ায় ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে এক লাখ ৮০ হাজার টন কম খাদ্য উৎপাদন হয়েছে।
গত বছরের জুন মাসে ডব্লিউএফপি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, খরা এবং বন্যার মতো চরম আবহাওয়া শীত ও বসন্ত উভয় ফসলের উৎপাদন কমিয়ে দিতে পারে। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমও গত বছরের শেষের দিকে জানায় যে, দেশটি তার ইতিহাসের 'দ্বিতীয় সবচেয়ে খারাপ' খরার সম্মুখীন হচ্ছে।
উত্তর কোরিয়া-কেন্দ্রিক প্রকাশনা ৩৮নর্থ.ওআরজি এর সঙ্গে কাজ করা বেঞ্জামিন কাটজেফ সিলবারস্টেইন বলেন, এই বছর ফসলের উৎপাদন খারাপ হওয়ায় খাদ্যের দাম বেড়েছে এবং লোকেরা সস্তা বিকল্পের দিকে ঝুঁকছে।
জাপানভিত্তিক উত্তর কোরিয়ার ম্যাগাজিন রিমজিন-গ্যাং এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২৩ সালের শুরুতে ভুট্টার দাম ২০ শতাংশ বেড়েছে। যদিও দেশটিতে চালের তুলনায় ভুট্টা কম পছন্দের খাবার। দেশটিতে ভাত প্রধান খাবার।
সিলবারস্টেইন বলেন, 'লোকেরা যদি প্রধান খাবার চাল রেখে বেশি ভুট্টা কিনছে। এর মানে সামগ্রিকভাবে খাবারের দাম বেড়েছে। এক কেজি চালের দাম এখন ৩৪০০ উত্তর কোরিয়ান ইউয়ান (৩.৮০ ডলার, প্রায় ৪০০ টাকা)।
উত্তর কোরিয়া বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে একটি। যদিও উত্তর কোরিয়ার প্রকৃত চিত্র জানা প্রায় অসম্ভব। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির অর্থনীতি কী অবস্থায় রয়েছে তারও কোনও নির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক অনুমান করে যে, ২০১৫ সালে দেশটির জিডিপি ছিল মাথাপিছু ১৭০০ ডলার।
এনকে নিউজের একজন বিশ্লেষক জেমস ফ্রেটওয়েল বলেন, 'উত্তর কোরিয়ার পণ্য এবং লোকদের উপর কঠোর কোভিড সীমান্ত ব্যবস্থার কারণে কোনও বহিরাগতদের সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি কী তা পরীক্ষা করার কোনও উপায় নেই।'
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন