পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, তুরস্কে আগামী ১৪ মে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু নির্বাচনী প্রস্তুতির মধ্যেই গত ৬ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে আঘাত হানে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প। বিগত ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বিধ্বংসী এই ভূমিকম্পের কারণে দেশটিতে সময়মতো নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা দেখা দিলেও নির্ধারিত দিনেই অনুষ্ঠিত হবে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন।
তুর্কি সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ ক্ষমতাসীন দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। তবে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে দেশের একটি বৃহৎ অঞ্চল বিধ্বস্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এরদোগানের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে পার্টি) নির্বাচনি স্লোগান ও কর্মসূচিতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, একে পার্টির নির্বাচনি প্রচার ও ঘোষণা এখন ভূমিকম্পকেন্দ্রিক হবে। অর্থাৎ দলটির পূর্বে ঘোষিত ‘সেঞ্চুরি অব তুর্কি’-এর স্থলে ‘পুনর্নির্মাণ তুর্কি’ স্লোগান প্রাধান্য পাবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— ‘এখন সময় তুরস্কের’ শীর্ষক ব্যানারের অধীনে ক্ষমতাসীন দলটি পূর্ববর্তী সব নির্বাচনি কার্যক্রম স্থগিত করতে এবং ভূমিকম্পের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ক্যাম্পেইনে সংশোধন আনতে চাইছে।
একে পার্টির ঘোষণায় ভবিষ্যতে জীবনের নিরাপত্তা, পরিবেশ, আবাসন, ভূমিকম্প এবং তুরস্কের মধ্যস্থতা প্রক্রিয়ার প্রতিশ্রুতি থাকতে পারে। যার লক্ষ্য হবে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ১১ প্রদেশের দ্রুত পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন। সেই সঙ্গে ভূমিকম্পের পর বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা, বলছে ডেইলি সাবাহ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দলটির সংশোধিত নির্বাচনি ক্যাম্পেইনে জনসভা বাতিল কিংবা কমিয়ে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ভূমিকম্প কবলিত অঞ্চলগুলোতে যেসব নির্বাচনি সভা করা হবে, সেখানে থাকবে না কোনো বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড।
খবরে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে গত দুই সপ্তাহ ধরে নির্বাচন ইস্যুতে কোনো কথা বলেননি প্রেসিডেন্ট এরদোগান। তবে বুধবার ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির সিনিয়র সদস্যরা দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার বৈঠক করেছেন।
প্রেসিডেন্ট এরদোগানের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে দলের নেতারা পূর্ব ঘোষিত তারিখ অর্থাৎ আগামী ১৪ মে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একমত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ ওই ভূমিকম্প। এতে তুরস্কের ১১ প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে পড়েছে ৮৪ হাজারের বেশি ভবন। সব মিলিয়ে এক কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন