বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ‘গ্রুপ অব-২০’ (জি-২০) ভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ অভিযোগ তুলে বলেন, বিশ্বের বিভক্ত ইস্যুগুলোতে অভিন্ন ভিত্তি খুঁজে বের করতে হবে। সব দেশকে এটা স্বীকার করতে হবে যে, বহুপাক্ষিকতা এখন সংকটে রয়েছে। খবর আলজাজিরার।
বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে শুরু হয়েছে বিশ্বের ২০ বৃহৎ অর্থনীতির দেশের জোট জি-২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন। ভারত এ বছর জি-২০-এর সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছে। গতকালের সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগে ধারণ করা এক ভিডিও বক্তব্যে বলেন, বিশ্বে বর্তমানে অনেক বড় বড় সমস্যা বিরাজমান। গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা বলছে- অর্থনৈতিক সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, করোনা মহামারি, সন্ত্রাসবাদ ও যুদ্ধ এগুলো মোকাবিলায় বৈশ্বিক শাসন ব্যর্থ হয়েছে। যেখানে সব দেশের সব প্রতিষ্ঠানের একত্রিত হয়ে এসব সমস্যার সমাধান করার কথা, সেখানে চলছে বিরোধ আর বিভাজন। সমস্যা সমাধানে বিশ্ব এক হতে না পারার বিষয়টির তীব্র সমালোচনা করে মোদি বলেন, ‘বিশ্ব শাসন ব্যর্থ হয়েছে’ এবং বহুপাক্ষিক ঐক্য যে হুমকির মুখে আছে, সেটি যেন তারা স্বীকার করে নেন। তিনি আরও বলেন, যেসব সমস্যা আমরা একসঙ্গে সমাধান করতে পারব না, সেসব সমস্যা তৈরি হতে দেওয়া যাবে না।
এদিকে জি-২০ মূলত অর্থনীতিবিষয়ক জোট হলেও এবারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ের সম্মেলনে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়টিই আলোচনার মুখ্য বিষয় থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও ভারত চায় এ সম্মেলনে দারিদ্র্য বিমোচন এবং জলবায়ু অর্থায়নের বিষয়টি প্রাধান্য পাক।
বুধবার ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় খাত্রা জানান, তারা আশা করছেন যুদ্ধ-সংক্রান্ত অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো নিয়েও আলোচনা হবে। রাশিয়ান অস্ত্র ও জ্বালানির অন্যতম বৃহৎ ক্রেতা ভারত এখন পর্যন্ত ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার সরাসরি কোনো সমালোচনা করেনি। তবে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক বৈঠকে মোদি বলেছিলেন, ‘আমি জানি এখন যুদ্ধ করার সময় নয়।’
উল্লেখ্য, গত মাসে ব্যাঙ্গালুরুতে জি-২০ জোটের অর্থমন্ত্রীরা বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন।
কিন্তু সে সময় যুদ্ধের সমালোচনা করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো যৌথ বিবৃতি দিতে পারেনি জোটটি। এ নিয়ে জোটভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। সেই মতবিরোধের ছায়া এবারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনেও পড়েছে। এর আগে গত বছর নভেম্বরে জি-২০ জোটের প্রেসিডেন্টরা ইন্দোনেশিয়ার বালিতে মিলিত হয়েছিলেন। সেখানেও জোটের মধ্যে থাকা বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন