বরিশাল সেক্টরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স-এর নতুন সময়সূচী ৯ মার্চ থেকে কার্যকর হতে চলেও শনিবারের বর্ধিত ফ্লাইট চালু হচ্ছে ২৫ মার্চ। বিমান-এর দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গত অক্টোবরের শেষভাগে কার্যকর হওয়া শীতকালীণ সময়সূচীতে যাত্রী সুবিধার কথা বিবেচনায় না নিয়ে বরিশাল সেক্টরে বিমান কতৃপক্ষ দুপুরের দিকে ফ্লাইট সময়সূচী নির্ধারন করায় যাত্রীরা ক্রমে রাষ্ট্রীয় এ আকাশ পরিবহন সংয়স্থা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে দৈনিক ইনকিলাব-এর অন লাইন সহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পাশাপাশি সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকেও পর্যবেক্ষন দেয়ায় কতৃপক্ষ নতুন সময়সূচী নির্ধারন করেন গত সপ্তাহে।
তবে নতুন সময়সূচী অনুযায়ী শুক্র ও রোববার ঢাকা থেকে সকাল ৮.২৫টা ও বরিশাল থেকে সকাল সাড়ে ৯টা এবং বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে বিকেল সোয়া ৪টা ও বরিশাল থেকে বিকেল ৫.২০টায় ফ্লাইট পরিচালন কার্যকর হবে ৯ মার্চ থেকে। পাশাপাশি শণিবারে বরিশাল সেক্টরে ৪র্থ ফ্লাইট চালু হচ্ছে ২৫ মার্চ থেকে। শণিবারের ফ্লাইটও ঢাকা থেকে সকাল ৮.২৫ ও বরিশাল থেকে সকাল সাড়ে ৯ টায় চলাচল করবে বলে বিমান-এর সেন্ট্রাল কন্ট্রোল-এর দায়িত্বশীল সূত্রে বলা হয়েছে।
গত বছর ঈদ উল আজহা পরবর্তি দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ কর্মস্থলে ফিরে যাবার পরে সড়ক, নৌ ও আকাশ পথে চলাচল সাময়িকভাবে সিমিত থাকার সুযোগে বরিশাল সেক্টরে বিমান-এর দৈনিক ফ্লাইট সপ্তাহে ৩ দিনে হ্রাস করা হয়। এমনকি গত অক্টোবরের শেষ ভাগে কার্যকর শীতকালীন সময়মসূচীতে বরিশাল সেক্টরে সপ্তাহে ৬টি ফ্লাইট পরিচারলনের ঘোষনা দিয়েও পরে তা তিনদিনেই সিমিত রাখে বিমান।
পাশাপাশি সময়সূচী যাত্রী বান্ধব না হওয়ায় সাধারন যাত্রীগন রাষ্ট্রীয় বিমান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন। এযাবতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এবং অন্য ৬ দিন সকালে বরিশাল সেক্টরে বিমান চলাচল করলেও বর্তমানে তা দুপুরে নির্ধারন করায় রাষ্ট্রীয় বিমান’এ ভ্রমনে দক্ষিণাঞ্চলের সাধারন যাত্রীরা ক্রমশ আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ‘সপ্তাহে কোন ৩দিন বিমান চলাচল করে, তা খুজে যাতায়াত করতেও সাধারন মানুষের তেমন কোন আগ্রহ ছিলনা। যাত্রীদের অভিযোগ, ‘বিমান-এ ভ্রমনের জন্য তারা ঢাকায় যান না, ঢাকায় যাবার জন্যই বিমান’কে ব্যবহার করতে চান’।
করোনা মহামারীর কারণে বন্ধের পরে স্বাধিনতার সূবর্ণ জয়ন্তির প্রভাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে ২০২১-এর ২৬ মার্চ বরিশালের আকাশে আবার ডানা মেলে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান। সেদিন সদ্য সংগ্রহ করা ৭৪ আসনের ‘ড্যাস এইট কিউ-৪০০’ উড়জাহাজ নিয়ে বরিশালের মাটি স্পর্ষ করেন সদর আসনের এমপি ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামিম। এ উপলক্ষে দীর্ঘ ২৭ বছর পরে একই ফ্লাইটে বরিশালে আসেন বিমান-এর তৎকালীন ব্যাবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামালও ।
বিমান-এর নতুন উড়জাহজগুলো করোনা সংকটে সব ধরনের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস ৯৯.৯৮% পর্যন্ত দুর করতে ‘হেপা কিলট্রেশন’ পদ্ধতি অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে। এমনকি যাত্রীদের জন্য বিমান অভ্যন্তরে প্রতি ৩-৪ মিনিট পর বাতাস বিশুদ্ধ করারও ব্যবস্থা রয়েছে। যাত্রী সুবিধার কথা বিবেচনা করেই নতুন প্রজন্মের উড়জাহাজগুলোর জানালার আকার বড় এবং পা রাখার স্থানও প্রসস্ত করা হয়েছে ।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালের ৩ ডিসেম্বর বরিশাল বিমান বন্দর ও জাতীয় পতাকাবাহী বিমান ফ্লাইট চালুর পারে দীর্ঘ চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে কোনমতে তা টিকে আছে। তবে গত বছর ২৭ জুন পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার পরে একটি মহলের অপতৎপড়তায় বরিশাল সেক্টর থেকে বিমান গুটিয়ে নেয়ার তৎপড়তা শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে, বেসরকারী এয়ারলইন্স-এর মনোপলি ব্যবসার লক্ষ্যে একটি মহল বরিশাল সেক্টরে বিমান বন্ধের তৎপড়তা শুরু করে। তবে নানামুখি আত্মঘাতি কর্মকান্ড ও যাত্রী বিরূপ সময়সূচী পরেও গত বছর বরিশাল সেক্টরে বিমান-এ যাত্রী ভ্রমনের হার ছিল ফ্লাইট প্রতি ৭০%-এরও বেশী। এমনকি বরিশাল সেলস অফিসে রাজস্ব আয় এখনো লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুন বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্রের মতে বিমান-এর বরিশাল সেলস অফিসে এখন প্রতিমাসে রাজস্ব আয় প্রায় ২০ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় আড়াইগুন।
এমনকি অন্যসব সেলস অফিসের মত বিমান-এর বরিশাল সেলস অফিস থেকেও দেশ বিদেশের যেকোন রুটের টিকেট সংগ্রহ ছাড়াও তা কণফার্ম সহ যেকোন সেবা লাভ করছেন। ফলে আকাশ পথের যাত্রীরা নিজের এলাকা থেকেই বিমান-এর যেকোন সেবা লাভ করছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটির দায়িত্বশীল মহল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন