নিশাত-নুসরাত কান্ডে সমগ্র খুলনার চিকিৎসা সেবা অচল হয়ে পড়েছে। গৃহবধূ নুসরাত আক্তার ময়না তার ৬ বছর বয়সি কন্যার চিকিৎসার জন্য গিয়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন এমন জোরালো অভিযোগ এনে মামলা করেছেন খুলনা আবু নামের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি এন্ড বার্ণ ইউনিটের প্রধান সহকারী অধ্যাপক শেখ নিশাত আব্দুল্লাহ বিরুদ্ধে। অন্যদিকে ডা. নিশাত আব্দুল্লাহ হেনস্তা ও মারপিটের অভিযোগে গৃহবধূ নুসরাত আক্তার ময়না, তার স্বামী পুলিশের এএসআই নাঈমকে আসামি করে মামলা করেছেন। সোনাডাঙ্গা থানায় দায়ের হওয়া দুটি মামলাই তদন্তে রয়েছে। গৃহবধূ নুসরতা আক্তার ময়রা ইতিমধ্যে যৌন হয়রানির প্রমানাদীসহ প্রেস কনফারেন্স করেছেন। এ অবস্থায় চিকিৎসককে মারপিটের প্রতিবাদ ও জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন খুলনা শাখা গত বুধবার সকাল থেকে সমগ্র জেলা ও মহানগরে কর্মবিরতি পালন করছে। মামলা হওয়ায় সাতক্ষী জেলা পুলিশ এএসআই নাঈমকে পুলিশ লঅইনে ক্লোজ করেছে।
চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে খুলনার সরকারি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগিরা চরম দূর্ভোগে রয়েছেন। চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা চিকিৎসা নিতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা সেবা পাচ্ছেন না। শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খুলনার বিভিন্ন ক্লিনিকে রোগী দেখেন। বৃহস্পতিবার রাতে ধর্মঘটে একাত্মতা প্রকাশ করে তাদের পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েনমেন্ট বাতিল করেছেন তারা। এছাড়া বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি প্রত্যাহার হবে-এমন ধারণা থেকে অনেকে চিকিৎসক শুক্রবার ব্যক্তিগত চেম্বারের রোগীদের সিরিয়াল নিয়েছেন, সেগুলোও বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা করতে খুলনা এসেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। শুক্রবার দুপুর ২টায় বিএমএ ভবনে চিকিৎসক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন তারা। সেখানে বিএমএ, ক্লিনিক মালিকসহ চিকিৎসক সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত রয়েছেন।
এদিকে, যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠা চিকিৎসকের পক্ষ নিয়ে সমগ্র জেলায় কর্মবিরতি সাধারণ মানুষের মনে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। তারা বলছেন, যে ঘটনায় মামলা হয়েছে, তা আইনের হাতে ছেড়ে দেয়াই উচিৎ ছিল। এটা নিয়ে মানুষকে কষ্ট দেয়ার অধিকার চিকিৎসক সংগঠনগুলোর নেই।
বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন খুলনা শাখার সভাপতি ডা. বাহারুল আলম জানিয়েছেন, আমাদের প্রতিবাদ করার অধিকার আছে। তাই আমরা প্রতিবাদ করছি। কর্মবিরতি পালন করছি। দোষীদের গ্রেফতার করা হলে আমরা কাজে যোগ দেব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন