শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

পুরনো নেতৃত্বের বলয়ে কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগ

প্রকাশের সময় : ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : রাজনীতিতে অগ্রসর জনপদ কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অংশ দক্ষিণ জেলা ও উত্তর জেলার সদ্য ঘোষিত নতুন কমিটিতে ঘুরেফিরে দেখা মিললো পুরনো মুখের। পুরনো নেতৃত্বের বলয়ে থাকা নেতাকর্মীরা শীর্ষ দুই পদের নেতৃত্ব দেখে বেশ উচ্ছ¡সিত। কারণ পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও পুরনোদের আধিপত্য বজায় রাখা হবে। অন্যদিকে দক্ষিণ জেলা কমিটিতে তৃণমূল আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বেশিরভাগই বাদ পড়ার আশঙ্কায় তাদের জন্য শেষ ভরসা হয়ে দাঁড়াবে মহানগর কমিটি।
হবে হবে বলে তিন মাসের আহŸায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে দশ বছর পর হয়েছে কুমিল্লা (দক্ষিণ) জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি। গত দশ বছরে এখানকার অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতা মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন পদবী আঁকড়ে ধরে রাখার জন্যই নতুন কমিটি করা হচ্ছে না। দশ বছর পর গত ৬ ফেব্রæয়ারি সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই ডিগ্রি কলেজ মাঠে কর্মী সমাবেশের শেষ পর্যায়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপির মুখ থেকে কুমিল্লা (দক্ষিণ) জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামাল ওরফে লোটাস কামাল এমপি ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক মুজিব এমপির নাম ঘোষণা করা হয়।
কমিটি ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের তৃণমূলের বেশ ক’জন নেতা জানান, ‘যারা আজকে সভাপতি সাধারণ সম্পাদক তারা তো গত দশ বছর ধরে আহŸায়ক ও যুগ্ম আহŸায়কের দায়িত্বে ছিলেন। পুরনো নেতৃত্বে কুমিল্লা আওয়ামী লীগ নতুনরূপে সাজছে ঠিকই তবে সাংগঠনিক অবস্থা আহŸায়ক কমিটির সময়ে যেমন স্থবিরতায় ছিল আগামী দিনগুলোতেও অনেকটা তেমনই থাকবে। কারণ নেতাদের ব্যাপক ব্যস্ততা দলকে গতিশীলতার জায়গায় আগেও নিতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটির অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদেও ঘুরে ফিরে পুরনোদের আধিপত্য থাকবে। যেখানে ত্যাগী ও তৃণমূলরা হবে উপেক্ষিত’।
প্রায় বিশ বছর পর কুমিল্লা (উত্তর) জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য অনুষ্ঠিত সম্মেলনে নতুন কমিটির সভাপতি হয়েছেন ষোল বছর ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বে থাকা আবদুল আউয়াল সরকার। আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন একই পদে বিশ বছর দায়িত্বে থাকা জাহাঙ্গীর আলম সরকার। গত ১৩ ফেব্রæয়ারি চান্দিনা মহিলা কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি ওই নতুন কমিটির শীর্ষ পদপ্রাপ্ত পুরনো দুই নেতার নাম ঘোষণা করেন। এনিয়ে ক্ষোভের কমতি নেই উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। তৃণমূলদের অভিযোগ, ‘একজন ষোল বছরের ভারমুক্ত হয়েছেন। অপরজন বিশ বছর একই পদ আঁকড়ে ধরে শেষ পর্যন্ত নিজের চাহিদা পূরণ করেছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও ওরা নিজেদের পছন্দের লোক স্থান দেবেন। আর তৃণমূলদের সারাজীবন উপেক্ষিত রেখে প্রভাবশালীরা দল পরিচালনা করবেন পকেট কমিটি দিয়ে’। এদিকে কুমিল্লা (দক্ষিণ) জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতি মূলত সদর উপজেলা বা মহানগর কেন্দ্রিক পরিচালিত হয়ে আসছে সদরের এমপি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের হাত ধরে। বিশেষ করে ২০০৮ সাল থেকে সদরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছেন হাজী বাহার। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন হওয়ার পর মহানগর আওয়ামী লীগও তার হাতের মুঠোয়। সরকারবিরোধী আন্দোলনে বিএনপি ও যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষের শক্তি জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে কুমিল্লা শহরে কোন আন্দোলনে দাঁড়াতে দেননি হাজী বাহার। দলের ত্যাগী, তৃণমূলদের নিয়ে একাই কুমিল্লা মহানগরীতে আওয়ামী লীগকে গণমানুষের দুয়ারে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন সদরের এমপি গণমানুষের নেতা হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। তিনি চান ত্যাগী, তৃণমূলের নেতৃত্বে মহানগর আওয়ামী লীগের গতি আরও সঞ্চারিত হোক। ত্যাগী ও তৃণমূলরা যাতে কোনভাবেই উপেক্ষিত না থাকে। আর তৃণমূলদের প্রত্যাশা, আগামীদিনে মহানগর কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বে যেমনি এমপি হাজী বাহার থাকবেন, তেমনি তাঁর আর্দশের তৃণমূল নেতারাও গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হবেন। যাতে আগামীদিনে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন