চট্টগ্রাম ব্যুরো : বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির উদ্যোগে চট্টগ্রামের পলোগ্রান্ডে তিনদিনব্যাপী বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল ও হালকায়ে জিকিরের প্রথম দিনেই ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল নামে। চরমোনাইয়ের পীর সাহেব মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘মারিফত অর্থ চেনা ও পরিচয়। কোনো জিনিসের পরিচয় বুঝে আসলেই তার গুরুত্ব বুঝে আসে। শিশু আগুন বা পানি কি তা বুঝে না, কাজেই আগুন বা পানির ভয়-ভীতি তার মধ্যে নেই। অনুরূপভাবে আল্লাহকে চেনা-জানা এবং পরিচয় জ্ঞাত হওয়ার নামই হচ্ছে মারিফত। এ মারিফতের উদ্দেশ্য হচ্ছে তাঁর হুকুম-আহকাম, বিধিবিধান এবং আদেশ-নিষেধ পালন করা।’
গতকাল (শুক্রবার) দ্বিতীয় দিনের বাদ ফজরের বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাই পবিত্র কুরআন-সুন্নাহের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ এবং শরীয়তের বিধিবিধান ও আদেশ-নিষেধের পাবন্দি ছাড়া মারিফতচর্চাকে ষোলা আনা ভ-ামি আখ্যা দিয়ে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ‘কুরআন-সুন্নাহর নীতি ও শরীয়তের বিধি-বিধানকে স্পষ্ট লঙ্ঘন করে যারা মারিফত ও সুফিবাদের নামে গান-বাজনা, নারী-পুরুষের অবাধ নর্দন-কুর্দন এবং বিভিন্ন কুসংস্কার ও শিরক-বিদআতে লিপ্ত রয়েছে তারা পীর-অলি বহু দূরে, তারা আস্ত ভ-ের দল। পীর সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, কারো বদ আমলকে নেক আমলে পরিণত করার ক্ষমতা পীরের নেই। পীর অর্থ গুরু, দীনের শিক্ষক। মানুষকে ভালো-মন্দ বিষয়ে সতর্ক করাই তার কাজ। বদ আমলের শাস্তি জাহান্নাম, জান্নাতে নিতে কোনো পীরেরও ক্ষমতা নেই।
মাহফিলে বয়ান পেশ করেন শায়খ জাকারিয়া ইসলামিক রিচার্জ সেন্টার ঢাকার প্রধান পরিচালক হযরতুল্লামা মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ, আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়ার প্রধান মুফতী ও হযরত হাফিজ্জী হুজুর (রহ.)-এর বিশিষ্ট খলীফা হযরতুল আল্লামা মুফতী হাফেজ আহমাদুল্লাহ, চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী নাজিরহাট জামিয়া নাসিরুল উলুমের প্রিন্সিপাল হযরতুল্লামা মুহাম্মদ ইদরীস, বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব হযরতুল্লামা নুরুল হুদা ফয়েজী, আরবি ম্যাগাজিন বালাগ আশ-শরকের সম্পাদক ও জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস হযরত মাওলানা হাফেজ ওবাইদুল্লাহ হামজা, ড. আ ফ ম খালেদ হোসাইন, আল্লামা মুফতী নুর হোসাইন নুরানী, মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী (কুয়াকাটা হুজুর), চরমোনাইয়ের খলীফা হযরত মাওলানা নুরুল করীম বেলালী, মাওলানা মুফতী দেলওয়ার হোসাইন সাকী, মাওলানা শেখ আমজাদ হোসাইন, হযরত মাওলানা হাবিবুর রহমান আতিকী, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম জিহাদী, মুফতী ইবরাহীম আনোয়ারী প্রমুখ ওলামায়ে কেরাম।
মাহফিলস্থলে ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। একই দিন জুমার নামাযের পর ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে ছাত্রগণ জমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। উভয় অনুষ্ঠানে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পীর সাহেব চরমোনাই। শ্রমিক নেতা ওয়ায়েজ হুসাইন ভূঁইয়া ও ছাত্র নেতা জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশসমূহে প্রধান বক্তা ছিলেন যথাক্রমে কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক আশরফ আলী আকন ও শেখ ফজলুল করীম মারুফ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন