কবি মদন মোহন একজন বাঙালি সাহিত্যিক। তিনি ব্রিটিশ ভারতে বাংলা ভাষায় শিশুদের উপযোগী পাঠ্য বই প্রণয়ন করতেন। মদন মোহন সংস্কৃতের প-িত হিসেবেই বেশি পরিচিত ছিলেন। প-িত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মদন মোহন তর্কালঙ্কার ও অক্ষয় কুমার দত্ত মিলে সে যুগে সাহিত্যের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেন।
খ্যাতিমান এ শিশু সাহিত্যিকের জন্ম ৩ জানুয়ারি ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে। জন্মস্থান পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার বিল্বগ্রামে। তার পিতার নাম রামধন চট্টোপাধ্যায়। তিনি কলকাতা সংস্কৃত কলেজের ছাত্র ছিলেন। পেশায় ছিলেন শিক্ষক। মদন মোহন, রামগোপাল ঘোষ ও দক্ষিণারঞ্জন মুখার্জী নারী শিক্ষার জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠায় অনেক সহযোগিতা করেন জন এলিয়েট বেথুনকে। তাদের প্রচেষ্টায় কলকাতায় বেথুন স্কুল প্রতিষ্ঠান হয়। মদন মোহন স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য ৩ খ-ে “শিশু শিক্ষা” রচনা করেছিলেন। তার দুটি মেয়ে ভুবনমালা ও কুন্দমালাকে বেথুন স্কুলে ভর্তি করেছিলেন। কবি ও শিশু সাহিত্যিক মদন মোহন তর্কালঙ্কার এ স্কুলে কোন বেতন ভাতা না নিয়ে শিক্ষকতা করেছেন। কবি মদন মোহন তর্কালঙ্কারের একটি কবিতা আদর্শ লিপি বইয়ে লেখা ছিল। তা হলো : “সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি/সারাদিন আমি জেন ভাল হয়ে চলি/আদেশ করেন যাহা মোর গুরুজনে/আমি জেন সেই কাজ করি ভাল মনে”। এটি কবির শিশুর পণ কবিতার চারটি লাইন মাত্র। কবির রচিত বিদ্যারতœ ও রসতরঙ্গিনী সেকালে বেশ পাঠকপ্রিয়তা পায়। পাঠকরা তাকে “তর্কালঙ্কার” খেতাবে ভূষিত করে গ্রন্থ দুটির জন্য।
মদন মোহন ১৮৪৬ সালে কৃষ্ণনগর কলেজের শিক্ষকতা করেন। তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজেরও শিক্ষক ছিলেন। তার কর্মদক্ষতায় ব্রিটিশ সরকার তাকে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগ দেন। কবি মদন মোহন কলকাতায় একটি সংস্কৃত প্রেস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আমাদের এ কবি ৯ই মার্চ ১৮৫৮ সালে মাত্র ৪১ বছর বয়সে মারা যান। এ বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি কবি ও শিশু সাহিত্যিক মদন মোহন তর্কালঙ্কারের দ্বিশত বার্ষিকী জন্ম দিন। আমাদের বিস্মৃতিতে হারিয়ে যাওয়া কবিকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি।
ষ গোলাম আশরাফ খান উজ্জ্বল
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন