মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

নেপথ্যে ইয়াবা ব্যবসার বিরোধিতা ৪ দিন মৃত্যুর সাথে লড়ে মারা গেছে গুলিবিদ্ধ নরসিংদীর সুজন

| প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার নরসিংদী থেকে : চার দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মৃত্যুর কোলেই ঢলে পড়েছে গুলিবিদ্ধ সুমন। গতকাল (শনিবার) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসারত অবস্থায় সে মারা যায়। গত ২৪ জানুয়ারি রাতে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের হাতে আহত হয়ে ধারাল অস্ত্রের অর্ধশত কোপের আঘাত, দ্ইু পায়ের রগ কাটা, হাতপায়ের আঙ্গুল কাটা ও কলিজায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। কলিজায় অস্ত্রোপচার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় শল্য চিকিৎসকরা গুলি অপসারণ করতে সাহস পায়নি। তাকে আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল।
জানা গেছে, সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের দড়িপাড়া গ্রামের হানিফের পুত্র সুজন, হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা মেম্বার রেখা বেগমের পুত্র কামাল, আবুল হোসেনের পুত্র ফয়সাল এবং দত্তপাড়া মহল্লার শিপলু নামে চার জনের মধ্যে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তারা সবাই হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ইউসুফ খান পিন্টুর ঘনিষ্ঠসহযোগী এবং সার্বক্ষণিক পিন্টু চেয়ারম্যানের সাথে চলাফেরা করতো।
তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপেরও অভিযোগ রয়েছে। কিছুদিনপূর্বে খোকা নামে হাজীপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার খোকাকে পিস্তল উচিয়ে চাঁদা দাবি করার অভিযোগে কামাল ও ফয়সালের বিরুদ্ধে নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়। একই ইউপি মেম্বার রেখা বেগম ইয়াবা ব্যবসা করত। সুজন এতে বাধা দেয়ায় তার সাথে বিরোধ দেখা দেয়। গত ২৪ জানুয়ারি সুজন ঢাকা থেকে ফেরার পথে মহিলা মেম্বার রেখার ছেলে, সুজনের বন্ধু কামাল, ও ফয়সাল মোবাইল ফোনে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর কামাল, ফয়সাল ও শিপলুসহ ১২-১৪ জনের একদল বন্ধু পরিচয়ধারী সন্ত্রাসী তাকে দড়িপাড়া গ্রামের আবেদ আলীর বাড়ীর পার্শ্বের রাস্তায় নিয়ে যায়। সেখানে মহিলা মেম্বার রেখা বেগমের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে এবং গুলি করে মারাত্মক রক্তাক্ত যখম করে। সন্ত্রাসীরা তার ঘাড়, মাথা, পিঠ, হাত-পা কুপিয়ে কচুকাটা করে ফেলে। পরে তারা উরু এবং বুকে দুটি গুলি করে। উরুর গুলিটি বেরিয়ে যায় এবং বুকের গুলিটি কলিজায় ঢুকে আটকে যায়। ঘটনাক্রমে আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখান থেকে ঢাকার বক্ষব্যাধি হাসপাতালে এবং পরে আবার সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। সেখানে কলিজায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে আইসিইউতে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। ৪ দিন আইসিইউতে থাকার পর শনিবার বিকেলে সুজন মারা যায়। সুজন আহত হবার পর দায়েরকৃত মামলায় মহিলা মেম্বার রেখা বেগমকে প্রধান আসামি ও তার পুত্র কামালসহ ৮ জনকে নামে এবং বেনামে ১৪ জনকে আসামি করে নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঢামেক হাসপাতাল থেকে লাশ নরসিংদী নেয়ার প্রক্রিয়া চলছিল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন