স্টাফ রিপোর্টার : মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসনের জন্য ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
সোমবার দশম জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির বেগম নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরীর (সংরক্ষিত-৪৪) এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বাড়ানোর পাশাপাশি ভাতাভোগীর সংখ্যা এক লাখ থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ করা হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে প্রতিটি জেলা-উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা অনুপাতে ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প প্রণয়নের কাজও হাতে নেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, যুদ্ধাহত ও মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে (অনধিক ২ সন্তান) বছরে ১ হাজার ৬০০ টাকা হারে শিক্ষাভাতা দেয়া হচ্ছে। বিবাহভাতা হিসেবে যুদ্ধাহত ও মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে (অনধিক দুই কন্যা) প্রতি কন্যার জন্য এককালীন ১৯ হাজার ২০০ টাকা হারে আর্থিক সুবিধা দেয়া হচ্ছে। ভাতাভোগী যুদ্ধাহত ও মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে দুই ঈদে মূল ভাতার সমপরিমাণ ঈদ বোনাস দেয়া হয়।
এছাড়াও রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতা পাওয়া সব যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাকে সরকারি যানবাহনে (বাংলাদেশ রেলওয়ে, বিআরটিসির কোচ, বাস ও জলযান) এবং বাংলাদেশ বিমানের অভ্যন্তরীণ সব রুটে বছরে একবার (আসা-যাওয়া) এবং আন্তর্জাতিক রুটে বছরে দুইবার (আসা-যাওয়া) বিনা ভাড়ায় যাতায়াতের জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে পরিচয়পত্র দেয়া হয়, যা প্রতি ৫ বছর অন্তর নবায়নযোগ্য।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের নামে গেজেট প্রকাশের বিষয়টি চলমান রয়েছে।
তিনি জানান, বর্তমানে বীরাঙ্গনাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা মন্ত্রণালয়ে নেই। তবে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে বীরাঙ্গনাদের একটি তালিকা সংরক্ষিত আছে। এ ছাড়া বীরাঙ্গনা হিসেবে তালিকাভুক্তির জন্য পাওয়া আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করে জামুকার সুপারিশের আলোকে তাদের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি দিয়ে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে তাদের নামে গেজেট প্রকাশের বিষয়টি চলমান রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে প্রাপ্ত তালিকার ভিত্তিতে ইতোমধ্যে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ২৯তম সভার অনুমোদনক্রমে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে ৪১ জন বীরাঙ্গানার নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। আরো ৩২ জন বীরাঙ্গনার নামে গেজেট প্রকাশের বিষয়টি বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়াও ১২১টি আবেদন বিশেষ যাচাই-বাছাই কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। ওই কমিটির কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গেলে জামুকার সাব-কমিটি কর্তৃক রিভিউ করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সভায় উপস্থাপন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
বিমানবন্দরে লাগেজ হারানোর ঘটনা বিচ্ছিন্ন
সংরক্ষিত নারী আসনের বেগম মাহজাবিন খালেদের এক প্রশ্নের জবাবে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন জানান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশাল কর্মকা-ের মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে লাগেজ হারানোর দু-একটি ঘটনা ঘটে থাকে। এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিতে যাত্রীদের ব্যাগেজ ক্ষতিগ্রস্ত বা খোয়া যাওয়া ব্যতিক্রম ঘটনা। যাত্রীদের মালামাল পরিবহনকালে হ্যান্ডলিং সীমাবদ্ধতার কারণে কদাচিৎ ভুল গন্তব্যে বা শনাক্তহীন হিসেবে যাত্রাস্থলে লাগেজ থেকে যায়। এসব ব্যাগেজ সবসময়ই একশত ভাগ সিস্টেমের মাধ্যমে শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক ব্যাগেজ ক্ষতিপূরণ আইনানুযায়ী নিষ্পত্তি করা হয়।
তিনি বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার যাত্রীর ২৫ থেকে ৩০ হাজার ব্যাগ পরিবহন করা হয়ে থাকে। এই বিশাল কর্মকা-ে মাঝে মধ্যে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে থাকে। তবে এসব ঘটনা কাম্য নয়।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দরের স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে ১৯০টি ডিজিটাল সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এছাড়া বিমানবন্দরের নিরাপত্তা আরো জোরদার করতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক টার্মিনাল এবং বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় অতিরিক্ত ১২০টি সিসিটিভি বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ে এলাকায় তিনটি সার্ভিল্যান্স ক্যামেরাও (আইপি বেসড) বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
ইটিপি ব্যতীত পরিবেশগত ছাড়পত্র দেয়া হচ্ছে না
মোহাম্মদ সুবিদ আলী ভূঁইয়ার এক প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন বলেছেন, ইটিপি ব্যতীত তরল বর্জ্য সৃষ্টিকারী নতুন কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে পরিবেশগত ছাড়পত্র দেয়া বা বিদ্যমান কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র নবায়ন করা হচ্ছে না। সরকার ইটিপি স্থাপনের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ২০০৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরে জাতীয় পরিবেশ সভায় দেশে অবস্থিত কলকারখানা থেকে সৃষ্ট রাসায়নিক বর্জ্য দ্বারা পানি দূষণ বন্ধ করতে তরল বর্জ্য নির্গমনকারী সব কলকারখানায় বর্জ্য পরিশোধনাগারে স্থাপনের নির্দেশ দেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের আওতায় মোট ৩৯৭টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩৪টি সরকারি পর্যায়ে এবং ৬৩টি বেসরকারি প্রকল্প রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডে বরাদ্দকৃত ৩ হাজার কোটি টাকা জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট আইন অনুযায়ী ৬৬ শতাংশ এবং ৩৪ শতাংশ স্থায়ী আমানত থেকে প্রাপ্ত সুদের অর্থ দ্বারা এসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন