বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অস্ত্র রফতানিকারক দেশ এখন চীন

প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অস্ত্র রফতানিকারক দেশ চীন। পার্শ্ববর্তী ভারতসহ অন্যান্য দেশের কাছে বর্তমানে দ্রুত বর্ধনশীল অস্ত্র রফতানিকারক হিসেবে স্থান দখল করে নিয়েছে দেশটি। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট কর্তৃক পরিচালিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১১-১৫ সময়কালের মধ্যে প্রধান অস্ত্র রফতানিকারক হিসেবে চীনের অস্ত্র বিক্রি পূর্ববর্তী পাঁচ বছরের তুলনায় ৮৮ শতাংশ বেড়েছে। ফ্রান্স, জার্মানি এবং ইউকে’র তুলনায় এগিয়ে রয়েছে চীন। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের চেয়ে চীনের অস্ত্র ক্রয়কারী অন্যতম দেশ হচ্ছে পাকিস্তান। যা পাকিস্তানে চীনের অস্ত্র রফতানির পরিমাণ হচ্ছে ৩৫ শতাংশ। মায়ানমার ১৬ শতাংশ অস্ত্র আমদানি করে চীন থেকে। বিশ্বব্যাপী অস্ত্র রফতানির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দখলে থাকা বিশ্বের শীর্ষস্থান কেড়ে নিচ্ছে চীন।
স্টকহোমের ওই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, ২০০৬-১০ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র রফতানি বেড়েছে শতকরা ২৭ ভাগ। অস্ত্র রফতানি খাতে রাশিয়া দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে। দেশটি সারাবিশ্বে মোট অস্ত্রের চাহিদার এক-চতুর্থাংশ সরবরাহ করেছে। গত পাঁচ বছরে রাশিয়ার প্রধান অস্ত্র গ্রাহক দেশ ছিল ভারত, চীন ও ভিয়েতনাম। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পর অন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র রফতানিকারক দেশ হচ্ছে- চীন, ফ্রান্স ও জার্মানি। আগের পাঁচ বছরের তুলনায় ২০১১-১৫ সাল পর্যন্ত চীনের অস্ত্র রফতানি বেড়েছে শতকরা ৮৮ ভাগ। তবে গত পাঁচ বছরে ফ্রান্সের অস্ত্র রফতানি কমেছে শতকরা ৯.৮ ভাগ। একই সময়ে শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ অস্ত্র রফতানি কমেছে জার্মানির।
খবরে বলা হয়, পাকিস্তান দ্রুত তার সামরিক অস্ত্রাগার পর্যন্ত নির্মাণ করেছে চীনের সহায়তায়। তাছাড়া চীন ক্ষুদ্র পারমাণবিক অস্ত্রও রফতানি করছে তুলনামূলক কম দামে এবং ঋণের মাধ্যমে। এর ফলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা রাশিয়াকেও পেছনে ফেলছে দেশটি। সাম্প্রতিক বাস্তবতা এমনই বার্তা দিচ্ছে। গত পাঁচ বছরের চীনের অস্ত্র রফতানি বেড়েছে দ্বিগুণ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে শীর্ষ অস্ত্র রফতানিকারক হতে আর বেশি অপেক্ষা করতে হবে না চীনকে। স্টকহোম আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (এসআইপিআরআই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। গত সোমবার দেশটির এক সেনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তাদের এ লক্ষ্য পূরণে কারি কারি টাকা ঢালছে অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। অস্ত্র রফতানিতে চীন তৃতীয়। প্রথমে আছে যুক্তরাষ্ট্র এবং দ্বিতীয় রাশিয়া।
এসআইপিআরআই জানায়, গত পাঁচ বছরে (২০১১-২০১৫) চীনের অস্ত্র আমদানি ২৫ ভাগ কমেছে। বেড়েছে দেশীয় অস্ত্র উৎপাদন। ফলে ক্রমেই রাষ্ট্রীয়ভাবে উৎপাদিত সামরিক সরঞ্জামে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছে দেশটি। সংস্থাটি আরো জানায়, বেইজিংয়ের রফতানি অস্ত্রের সিংহভাগই হালকা অস্ত্র বা বহনযোগ্য অস্ত্র। ২০১১-১৫ সময়ে এ ধরনের অস্ত্রের কাটতি পূর্বের চেয়ে ৮৮ ভাগ বেড়েছে। বিশ্ব বাজারে মোট অস্ত্র সরবরাহের মাত্র ৫.৯ ভাগ যোগান দিচ্ছে বেইজিং যা ওয়াশিংটন ও মস্কোর তুলনায় খুবই নগণ্য। তবে দশ বছর আগের কথা চিন্তা করলে চীন খুব দ্রুত এবং বিশ্ব বাজারের বিরাট অংশ দখলে নিয়েছে। বিশেষ করে তাদের সস্তা সমরাস্ত্র উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ব্যাপক আকৃষ্ট করেছে।
পরাশক্তি বিলাসী চীন সাম্প্রতিককালে তার ভৌগোলিক নিরাপত্তা বলয় জোরদারের লক্ষ্যে দক্ষিণ চীন সাগর এবং ভারত মহাসাগরে শক্তিশালী সমুদ্র শক্তি গঠনে মনোনিবেশ করেছে। আর এ জন্য নিজ দশে উৎপাদিত অস্ত্রের ওপর পূর্ণ নির্ভরতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। দেশটির ২০১৫ সালের বাজেট ১৪১.৪৫ বিলিয়ন ডলার যা আগের বাজেট অপেক্ষা ১০ ভাগ বেশি। চীনকে এখনো বড় ধরনের সরঞ্জামের জন্য অন্য দেশের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এ পরনির্ভরতা এড়াতেই নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটি। চীনের রমরমা বাজার এশিয়া এবং ওশেনিয়া অঞ্চলে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার বাজারে যে খুব মন্দা যাচ্ছে তা নয়। পূর্বের চেয়ে দেশ দুটির রফতানি যথাক্রমে ২৭ ও ২৮ ভাগ বেড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান সংঘাতের প্রয়োজনীয় অস্ত্র এদের গুদাম থেকেই সরবরাহ হয়। এএফপি, বিবিসি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন