স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, আমার মত আরো স্বৈরাচার জন্ম নিলে বাংলাদেশ অনেক উন্নত দেশ হতে পারতো। উন্নয়নের স্বার্থেই তাই আরো স্বৈরাচার দেশে জন্ম নেয়া উচিত। গতকাল রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে নিজের (এরশাদ) আত্মজীবনী গ্রন্থ ‘আমার জীবন, আমার কর্ম’ মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এইচ এম এরশাদ বলেন, আপনারা অনেকেই এসেছে, আজ আমার বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে। এরমধ্যে প্রতিটি কথা সত্য কথা। কীভাবে আমি স্বৈরাচার হলাম। কেনো স্বৈরাচার হলাম। কেনো এখনও বলি, আমার মত আরো স্বৈরাচার জন্মগ্রহণ করতো বাংলাদেশের অনেক উন্নত দেশ হতে পারতো।
বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন সমাজবিজ্ঞানী, লেখক, সাবেক মন্ত্রী ড. মীজানুর রহমান শেলী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন- সাবেক সচিব মোকাম্মেল হক, মফিজুল ইসলাম, ছড়াকার রফিকুল হক দাদু ভাই প্রমুখ। প্রকাশনা সূত্র জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে লেখা এ গ্রন্থে এরশাদের এ আত্মজীবনীতে তার শৈশব, কৈশোর, কর্মজীবন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কোন প্রেক্ষাপটে এবং কেন পাকিস্তানে অবস্থান করতে হয়েছিল, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরে আসার পর কীভাবে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সান্নিধ্যে গিয়েছিলেন, কীভাবে বঙ্গবন্ধু তাকে সেনাবাহিনীতে পদোন্নতি দিয়েছিলেন, ব্রিগেডিয়ার জেনালেল হিসেবে দিল্লীতে ট্রেনিং এর জন্য যাওয়া; ট্রেনিং অসমাপ্ত রেখেই দেশে ফিরে আসা, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে জিয়াউর রহমানের কী ভূমিকা ছিল, বঙ্গবন্ধু হত্যার সময় জিয়াউর রহমানের ভূমিকা কী ছিল, কর্নেল তাহের হত্যা ও জিয়ার সম্পৃক্ততা এবং ৯ বছর রাষ্ট্রক্ষমতা, বিরোধী রাজনৈতিক দলের গণআন্দোলনের প্রেক্ষিতে ’৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া, বিয়ে, জেল জীবনসহ প্রায় সব বিষয়ই এই আত্মজীবনীতে স্থান পেয়েছে। তবে নেই জিনাত মোশাররফ, বিদিশা তার বান্ধবীদের কোনো বিষয়। প্রায় এক হাজার পাতার এই বইয়ের মধ্যে ৮৮০ পাতায় লেখা এবং ১০৪ পাতা ছবিতে পরিপূর্ণ। এর প্রচ্ছদে রয়েছে তার ছবি এবং শেষে কিছু লেখা। বইটির মোড়ক উন্মোচন করেএরশাদ সরকারের সাবেক ট্যাকনোক্রেট মন্ত্রী ড. মিজানুর রহমান শেলী বলেন, এরশাদ সাহেব তার জীবন সম্পর্কে যতটুকু লিখেছেন, তারচেয়ে বেশি লিখেছেন নিজের কর্ম সম্পর্কে। যদিও কর্মই জীবন। তবে এটা কোনো সাধারণ গ্রন্থ নয়। এটা ইতিহাসের জবানবন্দী। এরশাদ সাহেব তার বইতে অনেক প্রশ্নের উত্তর দেননি। দিতে পারেননি। দেয়া সম্ভব হয়নি। সবকিছু তিনি লিখতে পারেননি। তিনি আরও বলেন, ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট আবুল কালাম আজাদের মৃত্যুর পর প্রকাশিত জীবনীতে অনেক সত্য কথা উঠে এসেছে। ঠিক এই রকম আমরাও আশা করবো- তিনি যা লিখতে পারেননি, তা যেন তার মৃত্যুর পর আরেকটি গ্রন্থে উঠে আসে। সেদিন মানুষ জানতে পারবে আসল সত্যি কি ছিল? মিজানুর রহমান শেলী এরশাদকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, স্যার আপনি সেটা ঠিক করে যাবেন সেই গ্রন্থটি কবে বের হবে। আপনার মৃত্যুর পাঁচ বছর পরে, নাকি ১০ বছর পরে। তবে আপনার আত্মজীবনী’র দ্বিতীয় গ্রন্থ আকাক্সক্ষা হিসেবে থেকে যাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন