বৃহস্পতিবার ১৬ অক্টােবর ২০২৪, ৩১ আশ্বিন ১৪৩১, ১২ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

মাওলানা এম এ মান্নান (রহ:) ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ আলেম ও সমাজ সংস্কারক

চট্টগ্রাম ব্যুরোতে আলোচনা সভা দোয়া মাহফিল

| প্রকাশের সময় : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : দৈনিক ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সাবেক সভাপতি, সাবেক ত্রাণ পুনর্বাসন ও ধর্মমন্ত্রী মাওলানা এম এ মান্নান (রহ:)-এর ১১তম ইন্তেকাল বার্ষিকীতে দৈনিক ইনকিলাব চট্টগ্রাম ব্যুরোর উদ্যোগে নগরীর জুবিলী রোডস্থ ব্যুরো কার্যালয়ে আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল গতকাল (সোমবার) অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশিষ্ট আলোচকগণ বলেছেন, মাওলানা এম এ মান্নান ছিলেন যুগশ্রেষ্ঠ আলেম ও সমাজ সংস্কারক। আপামর জনগণের আপসহীন কণ্ঠস্বর দৈনিক ইনকিলাব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি এ দেশে ইসলামী নবজাগরণের সূচনা করে গেছেন। শিক্ষক সমাজের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বর্তমান নতুন প্রজন্মের সাংবাদিকদের তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন থেকে অনেক কিছুই শিক্ষণীয় এবং দৃষ্টান্ত রয়েছে।
চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান শফিউল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান মেহমান ছিলেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, গবেষক ও কলামিস্ট অধ্যাপক মাওলানা মুনিরুল ইসলাম রফিক। প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামিক ফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি ও বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির মহাসচিব এ এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর। এতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ শরিক হন।
প্রধান মেহমান মাওলানা মুনিরুল ইসলাম রফিক বলেন, মাওলানা এম এ মান্নান ছিলেন ইসলামী জাগরণের অগ্রনায়ক। দৈনিক ইনকিলাব প্রতিষ্ঠা করে তিনি বিপ্লব সৃষ্টি করে গেছেন। আলেম-ওলামাদের তিনি পত্রিকা পড়তে শিখিয়েছেন। ইনকিলাব মুসলমানদের ঈমান-আকিদা সুরক্ষার পাশাপাশি তরুণ সমাজের মাঝে ইসলামী মূল্যবোধ বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। দৈনিক ইনকিলাব এ দেশে অগণিত সাংবাদিক, কলামিস্ট, ইসলামী গবেষক সৃষ্টি করে আসছে। যা মরহুম মাওলানা এম এ মান্নানের প্রত্যক্ষ অবদান। ইসলামী উম্মাহসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তিনি বিচক্ষণতার সাথে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন।
সভায় এ এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর বলেন, মাওলানা এম এ মান্নান ছিলেন বিশ্ব মুসলমানদের নেতা। মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করতে তিনি নিরলস কাজ করে গেছেন। এদেশে আলেম-ওলামাকে ঐক্যবদ্ধ করে মুসলমানদের পক্ষে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছেন তিনি। দৈনিক ইনকিলাব তার অমর সৃষ্টির একটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইনকিলাব এদেশে ইসলামী মূল্যবোধ বিস্তারে ভূমিকা পালন করছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিএমইউজে) সাধারণ সম্পাদক ও বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব মো: শাহনেওয়াজ বলেন, মাওলানা এম এ মান্নান ছিলেন সফল ব্যক্তিত্ব ও সমাজ সংস্কারক। তিনি আধুনিক মানের দৈনিক ইনকিলাব প্রতিষ্ঠা করে প্রমাণ করে গেছেন আলেম-ওলামারাও মিডিয়া জগতে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। অনেক ষড়যন্ত্র, বাধার প্রাচীর অতিক্রম করে ইনকিলাব আজ সফল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইনকিলাবের অগ্রযাত্রা রুখে দেয়ার সাধ্য কারো নেই।
বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক মো: জামাল উদ্দিন বলেন, মাওলানা এম এ মান্নান অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি দুর্গত মানুষের পাশেও দাঁড়িয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে চট্টগ্রামে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের পর তার নেতৃত্বে জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের অঢেল ত্রাণসামগ্রী বিতরণ আজও দুর্গত মানুষের স্মৃতিতে অবিস্মরণীয় হয়ে রয়েছে।
ইসলামিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক মাওলানা এ এম মঈনউদ্দিন চৌধুরী হালিম বলেন, মাওলানা এম এ মান্নান এ দেশের আলেম সমাজকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় তার আন্দোলনের ফসল।
চট্টগ্রাম নেছারিয়া কামিল মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা জানে আলম নিজামী বলেন, মাদরাসা শিক্ষকদের যে মান-মর্যাদা তা মাওলানা মান্নান আদায় করে দিয়েছিলেন। তার দুরদর্শী নেতৃত্বের সুফল ভোগ করছেন এ দেশের মাদরাসা শিক্ষকেরা।
ছিপাতলী কামিল মাদরাসার অধ্যাপক মাহফুজুল হক বলেন, মাদরাসা শিক্ষকদের পাশাপাশি স্কুল ও কলেজ শিক্ষকরা যে বেতন-ভাতা ও মর্যাদা পাচ্ছেন তাও মরহুম মাওলানা এম এ মান্নানের অবদান। তিনি এদেশের শিক্ষকদের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করে গেছেন। দৈনিক ইনকিলাবের বিশেষ সংবাদদাতা ও চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান শফিউল আলম সভাপতির বক্তব্যে বলেন, মাওলানা এম এ মান্নান ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান, একটি আন্দোলন। তিনি তার উদার হৃদয় দিয়ে সবাইকে আপন করে নিতেন। দৈনিক ইনকিলাব, জমিয়াতুল মোদার্রেছীন, মসজিদে গাউছুল আজমসহ সকল ক্ষেত্রে তিনি চূড়ান্ত সাফল্যের চূড়ায় আরোহণ করেছিলেন। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও কলামিস্ট খোরশেদ আলম দুলাল, দৈনিক আজাদীর সিনিয়র সহ-সম্পাদক খোরশেদ আলম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিনিয়র রিপোর্টার রফিকুল ইসলাম সেলিম। এতে চট্টগ্রাম ব্যুরোর সাংবাদিক-কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন উপজেলা ও চবি প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা শেষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, বিশেষ মোনাজাতে মাওলানা এম এ মান্নানের (রহ:) রূহের মাগফিরাত কামনা করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন