তারেক সালমান : পৌরসভার মতো আসন্ন ই্উনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনেও দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে প্রার্থী হলে তাকে বহিষ্কার করবে আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে দলের জেলা, উপজেলাসহ তৃণমূলের নেতাদের কাছে এই নির্দেশনা পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগ দলীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ ডিসেম্বর পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন তাদের কাউকে সাময়িক ও কাউকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। ওই নির্বাচনের আগেও এরকম নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু তারপরও ২৩৪টি পৌরসভায় অর্ধশত বিদ্রোহী প্রার্থী শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে ছিলো।
দলের একজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা বলেন, ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা আরও বাড়তে পাওে বলে আমরা আশংকা করছি। দল পরপর দুই বার ক্ষমতায় থাকায় তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে ইউপি নির্বাচনে অংশ নেয়ার আগ্রহ প্রবল। ফলে এবার বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। তাই আগে থেকেই এই নির্দেশনা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সম্পাদক বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের সামাল দিতে এবার হিমশিম খেতে হচ্ছে দলকে। তিনি জানান, একেকটি আসনে দুই-তিনজন বিদ্রোহী প্রার্থীও দেখা যাচ্ছে। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতাদের প্রায় প্রত্যেকেরই পছন্দ রয়েছে। ফলে এই নির্বাচনে ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলে কিছুটা বিভক্তি তৈরি হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের যে পরিণতি হয়েছিলো, ঠিক এই নির্বাচনেও বিদ্রোহী প্রার্থীদের একই পরিণতি হবে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কার করা হবে। এই নির্দেশনা তৃণমূলের কাছে রয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়াটাই স্বাভাবিক। এ নিয়ে আমরা চিন্তিত নই।
প্রসঙ্গত: আগামী ২২ মার্চ প্রথম ধাপে ৭৩৯ ইউপিতে ভোট হবে। দল থেকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা ২২ ফেব্রুয়ারি তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। পরে আরও পাঁচ ধাপে সাড়ে তিন হাজার ইউপির ভোট হবে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয়ভাবে ভোট হবে। প্রতি ইউনিয়নে একজন করে প্রার্থী দেয়ার সুযোগ রয়েছে নিবন্ধিত ৪০টি দলের সামনে। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ারও সুযোগ রয়েছে।
ইসি সূত্রে জানা যায়, ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর ক্ষেত্রে প্রত্যয়নের ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইসিকে জমা দিতে হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় প্রার্থীর দলীয় প্রত্যয়নও সঙ্গে জমা দিতে হবে।
আওয়ামী লীগ এবার তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে প্রার্থী দেয়ার কথা জানিয়েছে। সেই তৃণমূল মতামতে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারবে না বলেও দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের প্রত্যয়ন দিচ্ছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন