আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : ঈমান ও আকিদার প্রতি বিশ্বাস আনা, বিশ্বের সুখ-শান্তি, মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধ ও আখেরাতের শান্তির প্রত্যাশায় আল্লাহ্পাকের সন্তুষ্টি লাভের লক্ষ্যে ইবাদতে মশগুল থাকার আহ্বান জানিয়ে খুলনা জেলা ইজতেমার প্রথমদিন অতিবাহিত হয়েছে। খুলনা মহানগরীর প্রবেশদ্বার জিরো পয়েন্টের দক্ষিণপ্রান্তে ছয় লাখ বর্গফুট এলাকায় জেলা তাবলীগ জামাতের আয়োজনে ইজতেমার আজ দ্বিতীয় দিন। সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রার দক্ষিণ বেদকাশি থেকে উত্তরে দিঘলিয়া উপজেলার গাজিরহাট এবং বাগেরহাটের মংলার চিলে আর সাত সমুদ্র পার ১৫টি দেশ থেকে আগত লাখ লাখ মুসল্লীর ঢল নেমেছে এ ময়দানে। আগামীকাল শনিবার বাদ যোহর আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে ইজতেমা শেষ হবে। ২০১৯ সালে পুনরায় খুলনায় জেলা ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে।
ইজতেমার শুরুতেই গতকাল ফজরবাদ কাকরাইল জামে মসজিদের মাওলানা ওসামা, বাদ যোহর প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ, বাদ আসর মাওলানা আব্দুল্লাহ, বাদ মাগরিব মাওলানা ফারুক বয়ান করেন। বিদেশীদের কাছে আরবি, ইংরেজী, মালয়েশিয়া ও কিরঘিজ ভাষায় তরজমা হয়। বুধবার বাদ মাগরিব ইঞ্জিনিয়ার রওশন মনির বয়ান এবং বাদ আসর মুফতি মাওলানা মাহমুদ আগতদের স্বাগত জানান।
বুধবারের ন্যায় বৃহস্পতিবারও সকাল থেকে বিভিন্ন উপজেলার ধর্মপ্রাণ মুসলমান যানবাহন যোগে আসতে শুরু করে। এ দু’দিনে জেলার কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, ডুমুরিয়া, রূপসা, ফুলতলা, দিঘলিয়া, তেরখাদা এবং বাগেরহাটের মংলা থেকে লাখ লাখ মুসল্লী আল্লাহপাকের দরবারে হাজির হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৫টি বিদেশী জামাতের দেড়শ’ জন অংশ নিয়েছে। কওমী মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে তারা অবস্থান করছেন। কেন্দ্রীয় তাবলীগ জামাতের প্রতিনিধিরাও এখানে রয়েছেন। বিদেশীদের মধ্যে রয়েছেন- সউদী আরব, কাতার, সুদান, সাউথ আফ্রিকা, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, ইউকে, ইন্দোনেশিয়া, ইউএসএ, সিঙ্গাপুর, মিশর উল্লেখযোগ্য।
আল্লাহ্ পাকের রহমত কামনা ও দেশের সুখ-শান্তি কামনায় জেলার ৯টি উপজেলা এবং বাগেরহাটের মালা থেকে ২০০ বাকপ্রতিবন্ধী অংশ নিয়েছেন। প্রধান সড়কের পাশেই তাদের জন্য পৃথক (খিত্তা) স্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের দেখভাল করতে একজন তত্ত¡াবধায়ক দায়িত্ব পালন করছেন।
কেএমপি ও র্যাব পৃথক পৃথক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলেছে। র্যাবের দু’টি টহল গাড়ি ও ময়দানে দু’টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করছে। ৬ জন অফিসার, ৮ জন সাদাপোশাকে গোয়েন্দা ও ৪০জন সশস্ত্র সদস্য আইন-শৃঙ্খলায় নিয়োজিত রয়েছেন। সিনিয়র সহকারী পরিচালক জাহিদ হোসেন মনিটরিং করছেন। প্রবেশদ্বারের পাশেই র্যাবের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। কেএমপি’র পক্ষ থেকে দু’টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। ৫৪টি সিসি ক্যামেরা ও দু’টি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে। সাদা ও পোশাকে ২ হাজার পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বপালন করছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক ও নাসির উদ্দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মনিটরিং করছেন।
খুলনা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডাঃ মোঃ ইলিয়াসের নেতৃত্বে তাবলীগ জামাতের ৮জন সদস্য স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে। এছাড়া আকিজ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, হাফেজ্জী হুজুর সেবা সংস্থা, আল কামার ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, সেভেন রিংস সিমেন্ট ও রওনক হোমিও কেয়ারসহ বেশকিছু প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন