শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিডিআর বিদ্রোহের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করুন -লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান

২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় শোক দিবস ঘোষণার দাবি

প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে বিডিআর বিদ্রোহের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। ওই বিদ্রোহের রহস্য এখনও উন্মোচিত হয়নি বলে দাবি করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেছেন, বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে দোষীদের বিচার করতে হবে। একই সঙ্গে ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর বিদ্রোহ দিবসকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বনানী সামরিক কবরস্থানে বিডিআর বিদ্রোহের শহীদদের কবরে বিএনপির পক্ষ থেকে দলীয়ভাবে শ্রদ্ধা জানানো শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, ৭ বছর আগে এই দিনে বিডিআর বিদ্রোহে সেনাবাহিনীর ৫৭ জন চৌকস কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। সেনাকর্মকর্তা হত্যায় সেনাবাহিনী ও দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে সেই বিদ্রোহের বিচার হচ্ছে। আবার বিচারের নামে প্রহসনও চলছে। প্রকৃত হত্যাকারীরা, ষড়যন্ত্রকারীরা রহস্যজনকভাবে আড়ালে থেকে গেছে। তদন্তে কী ছিল শহীদের পরিবার বা আমরা কেউ জানি না।
মাহবুব বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসী জানতে চায়, কারা এর সঙ্গে জড়িত ছিল। যারা জড়িত ছিল তাদের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। যেসব গডফাদার এখনও লুকিয়ে আছে তাদেরও বিচার করতে হবে। ২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি করছি এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করছি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বি. জে. (অব.) আ স ম হান্নান শাহ বলেন, বিডিআর বিদ্রোহে যারা জড়িত ছিল তাদের নাম বলার অপেক্ষা রাখে না। তারা সেদিন প্রধানমন্ত্রীর দাওয়াত খেয়েছেন। তারপরেও কি বলতে হয় কারা জড়িত ছিল? বিডিআর বিদ্রোহের কয়েক দিনের মধ্যে একজনকে পদান্নতি দিয়ে হত্যায় জড়িতদের উৎসাহিত ও পুরস্কৃত করা হয়েছিল।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা হান্নান শাহ বলেন, এই হত্যার নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করতে সেনাবহিনীকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। একটি অংশকে লে. জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে (বর্তমানে অবসরে রয়েছেন) দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। তিনি যে তদন্ত করেছিলেন, সেই তদন্তও প্রকাশ করা হয়নি। আমরা জনসম্মুখে জেনারেল জাহাঙ্গীরের সেই রিপোর্ট প্রকাশ করার দাবি জানাচ্ছি।  
বিএনপির ভাইস চেয়ারঅ্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম বলেন, আমরা এই নারকীয় হত্যাকা-ের তীব্র নিন্দা জানাই। এই হত্যার মূল রহস্য এখনও উৎঘাটিত হয়নি। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তদন্ত করে জড়িতদের নাম জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ করার জন্য আমরা দাবি করছি।
এ সময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারঅ্যান বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনালেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, সহ দফতর সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, নির্বাহী কমিটির সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মনিরুজ্জামান, লে. কর্নেল (অব.) মনিষ দেওয়ান, মেজর (অব.) হানিফ, মেজর (অব.) মিজানুর রহমান, মেজর (অব.) সরোয়ার হোসেনসহ সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তাগণ।
২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় শোক দিবস ঘোষণার দাবি কল্যাণ পার্টির
বিডিআর বিদ্রোহের মর্মান্তিক ঘটনার দিন ২৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়েছে কল্যাণ পার্টি। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের মহানগর কার্যালয়ে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি আয়োজিত ‘২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ পিলখানা ট্রাজেডি’ স্মরণে এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আমিনুর রহমান বলেন, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০০৯ পিলখানা বিদ্রোহে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ও তৎকালীন বিডিআরের মতো রাষ্ট্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশকেই ধ্বংস করতে চেয়েছিল, যা এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো ঘটনা।
তিনি বলেন, ওইদিন বিডিআরের হাতে সেনাবাহিনীর ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা যেমন শহীদ হয়েছেন, একই সঙ্গে বিদ্রোহের সঙ্গে জড়িত থাকায় কয়েক হাজার বিডিআর সৈনিকদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার কারণে বিচারের সম্মুখীন ও চাকরিচ্যুত হওয়ায় তাদের পরিবার-পরিজন আজ পথে বসেছে। ঘটনার সাত বছর অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত তাদের বিচার কাজ শেষ হয়নি। পিলখানায় যে নারকীয় হত্যাকাণড হয়েছিল তার পেছনে দেশী-বিদেশী অপশক্তি জড়িত কিনা খতিয়ে দেখতে হবে।
আমিনুর রহমান বলেন, ২০০১ সালে তৎকালীন বিডিআর রৌমারি ও পদুয়াতে দেশের পক্ষে বিরাট বিজয় অর্জন করেছিল। সেই অর্জনের ধারাবাহিকতাকে রুখে দিতেই পিলখানা ঘটনার কোন যোগসূত্র আছে কিনা আমরা সরকারের কাছে তা খতিয়ে দেখতে আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে ২৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয়ভাবে শোক দিবস পালনের দাবি জানাই।  
মহানগর সভাপতি আলী হোসেন ফায়েজীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কল্যাণ পার্টির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আজাদ মাহবুব, ভাইস চেয়ারঅ্যান অ্যাডভোকেট বেনী আমিন, সাহিদুর রহমান তামানা, সৈয়দ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল মোল্লা, দপ্তর সম্পাদক আল আমিন ভুইয়া রিপন, আন্তার্জাতিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুবিনুল হক, ড. আনোয়ার হোসেন, মহানগর প্রচার সম্পাদক নাসিমূল গনি মামুম, নগর অর্থ সম্পাদক ফজলূর রহমান প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন