বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জাতীয় সংসদ এখন হুন্ডি ব্যবসায়ীদের চেম্বার : আ স ম আবদুর রব

প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বর্তমান সংসদকে ব্যবসায়ীদের চেম্বার অব ফেডারেশন আখ্যা দিয়ে জাসদ সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, পার্লামেন্টের ৩৫০ জন এমপির মধ্যে ২৫০ জনই হুন্ডি, ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী। এই সংসদ ব্যবসায়ীদের চেম্বার অব ফেডারেশনে পরিণত হয়েছে। সরকারের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, অবৈধ, অনৈতিক ও অগণতান্ত্রিক চর্চাই বর্তমান সরকারের ভিত্তি। জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে এ সরকার আর পারবে না। এ সরকারকে স্বৈরাচারী হয়েই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকতে হবে, স্বৈরাচারী তকমা নিয়েই বিদায় নিতে হবে। গতকাল রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে দলের ত্রিবার্ষিক কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, আগে উন্নয়ন পরে গণতন্ত্র- এসব আজগুবি তত্ত্বের নায়ক আইয়ুব খানকে আমরা ৬৯ সালেই ছুড়ে ফেলেছি। আইয়ুব খান উন্নয়নের মডেল নয়  স্বৈরাচারের মডেল হিসেবেই ইতিহাসে নির্ধারিত। সুতরাং আইয়ুব অনুসারী এ সরকারের সাথে আইয়ুব খানের নিয়তি নির্ধারিত। যেভাবে আইয়ুব-যুগের অবসান হয়েছে, আইয়ুব অনুসারী এই সরকারেরও সেভাবেই অবসান হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার কৌশলে, সংবিধানের আওতায় চাতুরতা ও প্রহসনের আশ্রয় নিয়ে জনগণকে উপেক্ষা করে নির্বাচনী বৈতরণী পাড়ি দিয়েছে। ভিন্ন মত ও পথকে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে দমন-নিধন, গ্রেফতার-গুম নির্যাতন মামলা দিয়ে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থাকেই শান্তিপূর্ণ বলে তৃপ্তিবোধ করছে। অথচ মৃত্যুই এখানে একমাত্র গতি। এখানে পথচলা, নিঃশ্বাস নেয়া ও চিন্তা করা ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে নৈতিকভাবে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরকার জঙ্গিবাদ ইস্যুকে রাজনৈতিক স্বার্থে অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি দিয়েছে।
বর্তমান দেশে সঠিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনার অভাব রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আগামী ১০ বছরে চার-পাঁচ কোটি যুবক বেকার হয়ে যাচ্ছে। সেই বেকার যুবকদের কীভাবে কাজে লাগাবে তার সঠিক কোনো দিক-নির্দেশনা নেই। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অর্থনীতিতে যে দস্যুতা চলছে তা কীভাবে মোকাবিলা করবে তারও কোনো সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য নেই। দেশে উপজেলাভিত্তিক শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা, প্রবাসীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করা, সামাজিক ব্যবসার গুরুত্ব দেয়া, শুধু শ্রমভিত্তিক নয় আইটিভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলার প্রয়োজনে পুরো শাসনব্যবস্থার অবসান করে নতুন রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা প্রবর্তনের দাবি জানান। তিনি বলেন, সরকারের একতরফা নির্বাচন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে হরতাল-অবরোধ-অগ্নিসংযোগ করেও নির্বাচন প্রতিহতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারও নির্বাচনী পরিবেশ, ভোটকেন্দ্র রক্ষা ও ভোটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে বড় দুই দলের প্রতি জনগণের অনাস্থা প্রমাণিত হয়েছে। আমরা অংশীদারিত্বের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকল মানুষের সাম্য ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমাদের ১০ দফা, স্বাধীনতার রূপকার সিরাজুল আলম খানের ১৪ দফা বাস্তবায়ন হলে স্বাধীনতা পূর্ণতার দিকে এগিয়ে যাবে। এর আগে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে কাউন্সিলের উদ্বোধন করেন। কাউন্সিল সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, নাগরিক ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল্লাহ কায়সার, আব্দুল মতিন প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন