বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

অকর্মন্য ধর্মভীরুরাই ধর্মের সর্বনাশ ডেকে আনে-মাওলানা খলীলুর রহমান নেছারাবাদী

নেছারাবাদে ২য় পর্বের মাহফিল শুরু

| প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সংবাদদাতা : “মানবজীবন অতিবাহনের জন্য কর্ম অপরিহার্য। দুনিয়াকে বলা হয় মাযরাতুল আখেরাহ বা আখেরাতের শস্যক্ষেত্র। এই শস্যক্ষেত্র অন্তর্হীন মানবজীবনের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র একটি অংশ মাত্র কিন্তু এটাই হচ্ছে অনন্তকালের সফলতা ও ব্যর্থতার চাবিকাঠি। দুনিয়ার প্রথম মানব, প্রথম নবী হযরত আদম (আ.) জান্নাত থেকে দুনিয়ায় এসেছিলেন লাঙল হাতে। বর্তমান দুনিয়ার কোটি-কোটি মানুষকে যে আল্লাহ তা’য়ালা খাওয়াচ্ছেন, মাত্র দু’জন মানুষকে কি সেই মহান রায্যাক আল্লাহ তায়ালা বসিয়ে-বসিয়ে খাওয়াতে পারতেন না? এর মানে হচ্ছে দুনিয়ায় বেঁচে থাকার জন্য কাজ করতে হবে। বান্দা যখন আল্লাহর হুকুম পালনের জন্য জীবন নির্বাহের প্রয়োজনে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি-বাকরি, মুটে-মজুরি ইত্যাদি কর্মপথ অবলম্বন করে তখন তা আল্লাহর দরবারে এবাদতে পরিণত হয়ে যায়। কিন্তু আফসোস! আমাদের সমাজে দেখা যায় যে যত ধর্মভীরু সে তত অকর্মন্য! যে যত ধর্মভীরু সে তত অসহায়! অথচ রসূলে মকবুল (সা.) থেকে শুরু করে সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীন, সলফে সালেহীন, আউলিয়ায়ে কেরাম কতটা কর্মবীর, কর্মমুখর ছিলেন ইতিহাস তার সাক্ষী। উম্মতের জামিনদার সাইয়্যেদুস সাহাবা হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা.) কাপড়ের বোঝা মাথায় নিয়ে বাজারে যেতেন, আর তুমি কতবড় ধার্মিক সেজেছো যে, কাজ করলে তোমার ইজ্জত থাকে না? এ জন্যই হাদিয়ে যামান, মুজাদ্দেদে মিল্লাত হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুর (রহ.) তার খানকার সামনে বড়-বড় অক্ষরে লিখে রাখতেন ‘ওগো মুসলমান ছেলে! কাজ করিলে মান যাবে তোর কোন হাদিসে পেলে?”
গতকাল বাদ মাগরিব ঐতিহ্যবাহী ঝালকাঠি নেছারাবাদ দরবার শরীফে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ঈছালে ছওয়াব ওয়াজ মাহফিলের ২য় পর্বের উদ্বোধনী ভাষণে হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুরের একমাত্র ছাহেবজাদা, আমিরুল মুছলিহীন হযরত মাওলানা মুহম্মদ খলীলুর রহমান নেছারাবাদী হুজুর এসব কথা বলেন।
নেছারাবাদী হুজুর বলেন “ব্রিটিশ প্রবর্তিত শিক্ষাব্যবস্থা মুসলমানদের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে এমনভাবে প্রবেশ করেছে যে, মুসলমান কর্মবীর না হয়ে কেরানী হওয়ার, দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ হওয়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে কতিপয় ধর্মপন্ডিত কাজকাম বাদ দিয়ে নিজেকে আল্লাহর হাতে সোপর্দ করে একধরনের ভিক্ষাবৃত্তিতে নেমে পড়েছে।
নেছারাবাদী হুজুর আরো বলেন “ইসলাম মানুষকে অসহায়-অথর্ব করার জন্য আসেনি বরং দরিদ্রতা জয় করে ইনসানে কামেলে উপনীত হওয়ার জন্য কর্মীরূপে গড়ে ওঠার তা’লীম নিয়ে এসেছে। যে কুরআন এসেছে মানবতার মুক্তির জন্য, সেই কুরআনের আয়াত পাঠ করে ভিক্ষাবৃত্তি করা হচ্ছে! অথচ সকল ফোকাহায়ে এযামের সম্মিলিত রায় হচ্ছে কুরআনের আয়াত তেলাওয়াত করে ভিক্ষাবৃত্তি নাজায়েয, কেউ করলে তাকে সাহায্য করাও জায়েয নেই।
উল্লেখ্য, ২ পর্বে অনুষ্ঠিত মাহফিলের ১ম পর্ব চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট অঞ্চলসহ কতিপয় জেলার মুসল্লিদের নিয়ে গতকাল শেষ হয়েছে। ২য় পর্বে অংশ নিচ্ছেন বরিশাল, খুলনা ও ঢাকা অঞ্চলসহ কতিপয় জেলার আশেকান ধর্মপ্রাণ মুসলমান। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি বাদ ফজর হযরত নেছারাবাদী হুজুুরের সমাপনী বয়ান ও আখেরী মুনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই আযীমুশ্বান আয়োজন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মুঃ নিয়াজ মাখদুম ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১০:৪১ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ। এক সময় খুব কাছে থেকে দেখতাম হুজুরকে। আজ কর্মময় জীবনের ব্যাস্ততার ভীড়ে সেটি সম্ভব না হলেও যোগাযোগ মাধ্যম ও পত্র-পত্রিকায় প্রিয় উস্তদজি এবং নেছারাবাদ দরবার শরীফের খোজ নেই সর্বদা।আল্লাহ হুজুরের নেক হায়াত দান আর আমাকে করুন তার যোগ্য সিপাহী সা লার । (আমীন) “ইনকিলাব” পত্রিকার খবর পড়ে আমি আনন্দিত। আন্তরিক সুভেচ্ছা সংবাদ দাতাকে। ধন্যবাদ , ইনকিলাব পরিবারকে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন