শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

মুক্তাঙ্গন

পিলখানা ট্র্যাজেডির শিক্ষা

| প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোহাম্মদ ইয়ামিন খান : বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কিত, লোমহর্ষক ও হৃদয়বিদারক ঘটনা হচ্ছে পিলখানা হত্যাকান্ড। কী নৃশংসভাবে ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জনকে হত্যা করা হলো তা সত্যিই হৃদয়বিদারক। সময়ের আবর্তে ২৫ ফেব্রæয়ারি এই কলঙ্কজনক দিনটি আমাদের মাঝে বারবার ঘুরেফিরে আসে। আজ থেকে আট বছর আগে অর্থাৎ ২০০৯ সালের এই দিনে রাজধানীর পিলখানায় অবস্থিত বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি-বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) হেডকোয়ার্টারে চলে এক নারকীয় হত্যাকান্ড। নিহত হন ব্রিগেডিয়ার শাকিল আহমদসহ ৫৭ জন মেধাবী সেনা কর্মকর্তা।
পিলখানা হত্যাকান্ডের পেছনে যে উদ্দেশ্য ছিল তা হলো আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে দুর্বল করা, নিশ্চিহ্ন করা। ষড়যন্ত্রকারীরা মেধাবী সেনা অফিসারদের হত্যা করে সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। এর পেছনে যে কারণটি ছিল তা হলো আমাদের ঐক্যহীনতা। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে সাড়ে সাত কোটি বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশ স্বাধীন করে। কিন্তু স্বাধীনতার বিগত ৪৫ বছরে পশ্চিমা মতাদর্শভিত্তিক বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক দলসমূহ এবং ধর্মের অপব্যবহার একটি ঐক্যবদ্ধ জাতিকে শত শত দল-পথ-মতে বিভক্ত করে দেয়। এসব অপশক্তি না থাকলে আমরা একটি একক ও শক্তিশালী জাতিসত্তা গঠন করতে পারতাম। আমাদের এই অনৈক্যের সুযোগে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশকে ঘিরে পশ্চিমা সা¤্রাজ্যবাদী শক্তি এবং আধিপত্যবাদী ভারতের যে ষড়যন্ত্র সেই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতার ফসল হচ্ছে পিলখানার নারকীয় ট্রাজেডি।
ঐক্যহীন জাতিবিনাশী অপরাজনীতির ধারক-বাহক অশান্তির সিস্টেমের সৃষ্ট রাজনৈতিক হানাহানি ও স্বার্থের নামে রাজনীতির কারণে সংঘটিত হয় ১/১১। আর ১/১১ সরকারের ধারাবাহিকতার ফসল হিসেবে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে। তার দুই মাসের মাথায় অর্থাৎ ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রæয়ারি ঘটে পিলখানার নারকীয় হত্যাকাÐ। সেদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পিলখানার দরবার হলে ঘাতকরা জমায়েত হয়। এরপরই নারকীয় হত্যাকাÐ সংঘটিত হয়। অভিযোগ আছে, হত্যাকাÐের পর ষড়যন্ত্রকারী স্বার্থান্বেষীরা হত্যাকারীদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছে। নারকীয় ট্রাজেডির পর যখন নিহত সেনা অফিসারদের ক্ষত-বিক্ষত লাশগুলো বের করা হয় তখন নিহত স্বজনদের কান্না-আহাজারিতে বাংলার আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে গিয়েছিল।
আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশ, এই এক টুকরা মাটি; এদেশের মাটিতে আমরা সেজদা করি, এদেশে মাটিতে আমাদের পূর্বপুরুষদের অস্তিমজ্জা মিশে আছে। লাঙল নিয়ে আমরা এদেশের মাটির বুক চিড়ে ফসল ফলাই, উৎপাদিত ফসলে আমরা ক্ষুধা নিবারণ করি। আজ সা¤্রাজ্যবাদী পরাশক্তিসমূহ এদেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তাদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে এভাবে হানাহানি করতে করতে ইরাক-সিরিয়ার মতো এদেশকে আমরা ধ্বংস করে দিতে পারি না।
তাই আজ সময় এসেছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে বিদেশি শকুনদের কালো থাবা থেকে রক্ষা করতে সকল প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ১৬ কোটি বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করা। এটা একদিকে আমাদের ঈমানি ও ধর্মীয় দায়িত্ব, পক্ষান্তরে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কর্তব্যও ।
ষ লেখক : ২ নং, হাবেলী গোপালপুর, ফরিদপুর থেকে

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Allar banda ২২ মার্চ, ২০১৭, ৬:০৫ পিএম says : 0
একদম সত্য!!
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন