শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

যেভাবে গ্রেফতার হলেন সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) ডা. কাদের খান

| প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বগুড়া অফিস : বগুড়া শহরের রহমান নগরের জিলাদারপাড়ার ‘গরীব শাহ’ নামের ক্লিনিক কাম বাসা থেকে গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেল ৫টায় জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) ডা. কাদের খানকে গ্রেফতার করা হয়। জঙ্গি হামলা হতে পারে এমন কথা বলে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত ১শ’ ১৩ ঘন্টা পুলিশি প্রহরায় রাখার পর গতকাল তাকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সরেজমিন বর্ণনায় দেখা যায়, মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে পুলিশের উপস্থিতি এবং ঘোরাফেরা বাড়তে থাকে। গণমাধ্যম কর্মীরাও কয়েক রাত ওই বাসার সামনে অবস্থান নেওয়ার পর থেকে সারাদিন তৎপর ছিলো। বিকেল ৫টায় সাদা রং এর একটি মাইক্রোবাস আসে (ঢাকা মেট্রো-গ-১৩-৩১৩১)। এর পরই ডা. কাদেরের বাসা কাম ক্লিনিক ‘গরীব শাহ’র সামনে আরেকটি মাইক্রোবাস অবস্থান নেয়। বৃহস্পতিবার থেকে তার বাসার প্রবেশ পথে যেভাবে পুলিশ দেখা যাচ্ছিলো তার চেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ যোগ হয়। হঠাৎ করেই বগুড়া এবং গাইবন্ধার গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতি বেড়ে যায়। পরে আরেকটি পুলিশ ভ্যান যুক্ত হয়। গাইবান্ধা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ওসি মাহবুবুর রহমান এবং জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আমিরুল ইসলাম দ্রæতগতিতে গরীব শাহ ক্লিনিকের উপরে উঠে যান। কয়েক মিনিটের মধ্যে সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) ডা. কাদের খানকে নিয়ে (ঢাকা মেট্রো-গ-১৩-৩১৩১) গাড়িতে করে বগুড়া ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। প্রায় এক ঘন্টা পর তাকে সেখান থেকে গাইবান্ধায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর গাইবান্ধার সহকারী পুলিশ সুপার রেজিনুর রহমান এবং জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ওসি মাহবুবুবর রহমানসহ কয়েকজন গোয়েন্দা পুলিশ কর্নেল কাদেরের বাসা তল্লাশী করেন।
বগুড়ার পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান জানান, ডা. কাদের খানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে কি কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা বলতে পারবে গাইবান্ধা পুলিশ। গাইবান্ধা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার রেজিনুর রহমান বলেন, ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের আওয়ামী দলীয় এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে গাইবান্ধায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ডা. কাদেরের বাসা তল্লাশী করে কিছু পাওয়া যায়নি। আর কোন তল্লাশী করা হবে না। সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) কাদের তার লাইসেন্স করা অস্ত্র সুন্দরগঞ্জ থানায় জমা দিয়েছেন।
ডা. কাদের খানের স্ত্রী ডা. নাসিমা বেগম বলেন, গাইবান্ধা পুলিশের বিশেষ শাখার ওসি মাহবুবুর রহমান, বগুড়ার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আমিরুল ইসলামসহ সুন্দরগঞ্জের পুলিশ কর্মকর্তারা বিকেল ৫টায় বাসায় এসে তাকে নিয়ে যায়। তবে, তারা কোন ওয়ারেন্ট কিংবা কোন মামলায় তাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা বলেনি। ডা. নাসিমা আরো বলেন, নির্বাচন করবে এমন ঘোষণার পর যখন পুলিশ তাকে নিরাপত্তার কারণে দেখিয়ে বাসার ভেতরে ও আশে পাশে অবস্থান নেয় ঠিক সে সময় তিনি নির্বাচন করবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে নিজ দলের হাইকমান্ডকে জানিয়ে দেন। তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় কি কারণে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পুলিশ তা বলেনি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে কোন গ্রেফতারি পরোয়ানাও দেখাননি তারা। বাসা অবরুদ্ধ রাখার পর থেকে পুলিশ ভালো ব্যাবহার করেছে। তাই তারা যা বলছে তাই বিশ্বাস করেছি। এসময় উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে ডা. নাসিমা বেগম গাইবান্ধার পুলিশ সুপারের কাছে কয়েকবার ফোন দিয়ে তার স্বামীকে গ্রেফতারের কারণ জানতে চাওয়ার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। শুক্রবারে কর্নেল (অব.) ডা. কাদের জানান, গাইবান্ধার পুলিশ সুপার তাকে ফোনে জানিয়েছিলো, জঙ্গি হামলা হতে পারে তাই আপনার বগুড়ার বাসায় পুলিশী নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। এখন তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে একথাটি বললে তিনি বিমূর্ষ অবস্থায় শুধু বলেন, সময়ই আসল সত্য প্রকাশ করবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
Tareq Masum ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১:২৪ পিএম says : 0
খুন নাকি বিএনপি জামাত করছিল??
Total Reply(0)
আকরাম ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ৩:০৮ পিএম says : 0
সময়ের সাথে সাথে সব কিছুই বেরিয়ে আসবে।
Total Reply(0)
খাইরুল ইসলাম ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ৩:০৯ পিএম says : 0
এজন্যই তদন্তের আগে কোন মন্তব্য কথা ঠিক না।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন