বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে পরামর্শ চাইলেন ট্রাম্প

| প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কয়েকটি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক
ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে ম্যানুফ্যাকচারিং কার্যক্রম রয়েছে, এমন কয়েকটি কোম্পানির সিইওর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সিইওদের কাছে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরামর্শ চেয়েছেন। অবৈধ অভিবাসীদের গণহারে বিতাড়নের নতুন নির্দেশনা জারির পর ডোনাল্ড ট্রাম্প সিইওদের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার এ বৈঠক করেন। এদিকে মেক্সিকো সরকার যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের অধিকার সুরক্ষায় জাতিসংঘের শরণাপন্ন হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কারখানাগুলোয় কীভাবে আরো বেশি কর্মীর কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা যায়, সে ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিইওদের সঙ্গে কথা বলেছেন। গতকালের বৈঠকে অংশগ্রহণকারী সিইওরা যে বিপুলসংখ্যক কর্মী নিয়োগ করেন, সে তুলনায় তাদের অফশোরিংকৃত কাজের সংখ্যা নগণ্য। যেমন, জেনারেল ইলেকট্রিক কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ২৫ হাজার কর্মীর কর্মসংস্থান করে। নির্বাচনী প্রচারণায় এবং প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও ডোনাল্ড ট্রাম্প বৈশ্বিক বাণিজ্যকে একচেটিয়াত্বের মতো করে দেখেছেন। তিনি মনে করেন, বৈশ্বিক বাণিজ্য শুধু স্বল্প মজুরিতে কর্মী মেলে এমন কিছু দেশকেই লাভবান করছে। এমন অবাধ বাণিজ্য যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্ব বৃদ্ধি ও কারখানা বন্ধের জন্য দায়ী বলে ট্রাম্প উল্লেখ করেছেন। যেসব কোম্পানি অফশোরিং করে, ট্রাম্প সেগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছেন। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিয়েছেন যেসব সিইও, তাদের অভিজ্ঞতা প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের মতো ঢালাও অথবা সরলিকৃত কিছু নয়। কয়েকজন সিইও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে কিছু কাজ স্থানান্তর করলেও যুক্তরাষ্ট্রেই তারা বেশি কারখানা স্থাপন করছেন। হোয়াইট হাউজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিইওদের কাছে জানতে চেয়েছেন তারা কেন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে চাকরি স্থানান্তর করেন। ইউএস ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিসটিক্সের তথ্যে জানা যায়, ২০০০-২০১০ সময়কালে অফশোরিংয়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে ৬০ লাখ কর্মসংস্থান কমেছে। তবে একই সময়ে ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে নয় লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বলেছে, শুধু শ্রমিকের মজুরি কোথায় কম সে বিবেচনা থেকেই তারা ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের জায়গা নির্বাচন করেন। দাপ্তরিক তথ্যে যেভাবে দেখা যায়, অফশোরিং চিত্রটি অত সাদামাটা নয়। যুক্তরাষ্ট্রে একটি কারখানা বন্ধ হওয়া মানেই এমন নয় যে, অন্য কোনো দেশে নতুন কারখানা চালু হচ্ছে। ডানা ইনকরপোরেশন জানিয়েছে, তারা কেন্টাকির গøাসগোয় একটি কারখানা বন্ধ করছে। কারণ কারখানাটি ২০ শতাংশ সক্ষমতায় চলছিল। কেন্টাকির কারখানার কাজগুলো এখন থেকে ওহাইওতে ডানার কারখানায় হবে। পাশাপাশি মেক্সিকো, ভারত ও চীনে কোম্পানির কারখানাতেও কিছু কাজ স্থানান্তর হবে। ডানা ইনকরপোরেশনের মুখপাত্র জেফ কোল বলেছেন, কেন্টাকিতে একটি কারখানা বন্ধ হলেও যুক্তরাষ্ট্রের অন্য চারটি রাজ্যে কোম্পানির কারখানায় আগামী তিন বছরে ৭০০ নতুন কর্মী নিয়োগ করা হবে। বৈঠকে ইউনাইটেড টেকনোলজিস সিইও গ্রেগরি হায়েস উপস্থিত ছিলেন। ইন্ডিয়ানাপলিস থেকে মেক্সিকোয় কর্মসংস্থান স্থানান্তরের কথা বলে কোম্পানিটি গত বছর ডোনাল্ড ট্রাম্পের তোপের মুখে পড়েছিল। পরবর্তীতে নভেম্বরে ট্রাম্পের সঙ্গে কোম্পানির আপসরফা হয়। ৭০ লাখ ডলার কর অব্যাহতির বিনিময়ে ইউনাইটেড টেকনোলজিস ৭০০ কর্মসংস্থান বহাল রাখতে সম্মত হয়। সব ধরনের অবৈধ অভিবাসী বিতাড়নের নির্দেশনা দিয়ে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট নতুন দুটি মেমো ইস্যু করেছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি জন কেলির এ দুটি মেমো মেক্সিকো অভিমুখে গণবিতাড়নের সূচনা করতে পারে। এর ফলে মেক্সিকোকে নিজেদের নাগরিক শুধু নয়, লাতিন আমেরিকার অন্য দেশের নাগরিকদেরও গ্রহণ করতে হবে। মেক্সিকো সরকার যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করার ঘোষণা দিয়েছে। মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুই ভিদাগারাই স্থানীয় রিফর্মা পত্রিকাকে বলেছেন, আমরা এটা গ্রহণ করছি না। মেক্সিকো সরকার ও মেক্সিকোর জনগণ এমন কিছু মেনে নিতে বাধ্য নয়, যা একটি সরকার একতরফাভাবে অন্য সরকারের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের অধিকার সুরক্ষায় মেক্সিকো জাতিসংঘের শরণাপন্ন হবে বলেও লুই ভিদাগারাই জানিয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন ও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি জন কেলি মেক্সিকো সফরে গেছেন। সেখানে তাদের মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট এনরিকে পেনা নিয়েতোর সঙ্গে বৈঠক করার কথা। মেক্সিকো সফরের পূর্বমুহূর্তে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি অভিবাসী বিতাড়নের বিষয়ে তার সর্বশেষ দুটি মেমো ইস্যু করেন। ট্রাম্প আরো বলেন, অবৈধ অভিবাসীরা যুক্তরাষ্ট্রের বৈধ নাগরিকদের সঙ্গে চাকরির বাজারে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছে। কর্মসংস্থানকে প্রচারণার অন্যতম ইস্যু করে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে জিতেছিলেন। রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন