বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

ভ্যানচালকের কুঁড়েঘরে ৪ প্রতিবন্ধী

প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : যে সংসারে নুন আনতে পান্থা ফুরায়, সেই পরিবারে ৪ ছেলে-মেয়ে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। ফলে কোন কুলকিনারা পাচ্ছেন না পরিবারটি। শহরের উপকণ্ঠে নদী ভাঙা ও আশ্রয়হীন মানুষের বসবাসের জন্য তৈরি করা হয় সরকারি আবাস প্রকল্প। সেখানে ঠাঁই হয়েছে ভ্যান চালক শাহজাদা (৫৫) ও স্ত্রী ফারজানা (৩৮) ও চার প্রতিবন্ধী ছেলে-মেয়ের। জন্মগতভাবে তিন বোন ও এক ভাই শারীরিক প্রতিবন্ধী। শরীরের উপরের অংশ দেখে বুঝার উপায় নেই তারা সকলেই প্রতিবন্ধী। কিন্তু কোমর থেকে নিচের অংশ পর্যন্ত হাঁটাচলার উপযোগি নয়। এর মধ্যে শাহানা (১৫)। লেখাপড়ার প্রবল ইচ্ছে থাকায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘শার্প’ একটি হুইল চেয়ার প্রদান করে। হাত দিয়ে হুইল চেয়ারের চাকা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বাড়ির পাশে কাদিখোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায়। ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী শাহানা লেখাপড়ায় খুব মনোযোগি কিন্তু দরিদ্র পিতা তাকে সেভাবে শিক্ষার উপকরণ কিনে দিতে পারে না। তবে সরকারিভাবে প্রতিবন্ধী ভাতা পায় সেটি দিয়ে তাদের সংসার ও পড়ার খরচ যোগায়। আরেক বোন শাহানাজ (১২)। সেও একই স্কুলে ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ছে। মায়ের কোলে চড়ে কিংবা হাত ধরে স্কুলে যায় এবং স্কুল ছুটির পর সাংসারিক কাজ শেষে মায়েই নিয়ে আসেন বাড়িতে। দুই ভাই- বোন কাদের (৮) ও লাকি (৩) বয়সে ছোট হওয়ায় বাড়িতেই শুয়ে থাকেন। তাদের বাবা সারাদিন হাঁড় ভাঙা পরিশ্রম করে চাল-ডাল আনেন তবে চুলো জ্বলে। যেদিন শরীরের অসুবিধায় ভ্যান চালাতে পারেন না বাবা শাহজাদা সেদিন সকলকে উপোষ থাকতে হয় পরিবারটিকে। কারণ এই আবাসন প্রকল্পে যারা বসবাস করেন তাদের কারোর সাহায্য করার সামর্থ্য নেই। ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যৎ কি হবে, কিভাবে চলবেন এই চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে ভ্যান চালক শাহজাদার। পৌর এলাকায় বসবাস করলেও জনপ্রতিনিধিরাও তাদের সাহায্য-সহযোগিতার হাত কোনদিন বাড়ায়নি। ভ্যান চালক শাহজাদা বলেন, আল্লাহতায়ালা যেন আমার শরীরটাকে ভালো রাখেন। গতর খাটিয়ে সংসারের চাকাটা চালিয়ে নিতে পারি বাবা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন