শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

পরীক্ষামূলক চাষের সাফল্যে জিরায় আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

প্রকাশের সময় : ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

লোহাগড়া (নড়াইল) উপজেলা সংবাদদাতা : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মধুমতি নদীর তীরবর্তী শালনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে পরীক্ষামূলক জিরা চাষে ব্যাপক ফলন হওয়ায় উপজেলার নদী তীরবর্তী অন্যান্য জমিগুলিতেও জিরা চাষের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কৃষকরা এ বছর পরীক্ষামূলকভাবে জিরার আবাদ শুরু করেছে। এদের মধ্যে চরশামুকখোলা গ্রামের কৃষক যাদু আলী, রামকান্তপুর গ্রামের কৃষক উসমান মুন্সী ও চরশালনগর গ্রামের ভুলু মোল্লাসহ আরো কয়েকজন। রামকান্তপুর গ্রামের কৃষক উসমান মুন্সী জানান, তিনি পার্শ্ববর্তী আলফাডাংগা উপজেলার রুদ্রবানা গ্রামের শামসুর রহমানের বাড়ি থেকে ১০০ গ্রাম জিরা ৫০০ শত টাকায় কিনে, ৭ শতক জমিতে কার্তিক মাসের প্রথম সপ্তাহে আবাদ করেন। বর্তমানে গাছ ফুলে ভরপুর এবং জিরা আসতে শুরু করেছে। আগামি চৈত্র মাসের শেষ দিকে জিরা ঘরে তোলা যাবে। তিনি আরো জানান, যার থেকে বীজ এনেছেন তিনি মাত্র ৫ শতক জমিতে আবাদ করে ১ মনের মত জিরার ফলন পেয়েছিলেন। বীজ হিসেবে বিক্রয় করায় তিনি প্রায় ২ লক্ষ টাকা আয় করেছেন। কোন প্রকার দুর্যোগ যদি না হয়, তাহলে আমারও ১ মনের (৪০ কেজি) অধিক জিরা আসবে বলে আশা করছি। প্রথম আবাদ করলামতো বুঝতে পারিনি। ১০০ গ্রাম জিরা যদি ১০ শতক জমিতে আবাদ করতাম, তাহলে ভাল হত। কারণ গাছ ঘন হওয়ায় কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। প্রতিটি জিরার গাছ লম্বা হয়েছে প্রায় ৪ থেকে ৫ ফুট। ইতোমধ্যে বেশ কিছু গাছ বাতাসে হেলে পড়েছে। সেটা তিনি সুতা দিয়ে বেধে সোজা রাখার চেষ্টা করছেন। এলাকার বহু কৃষক জিরা উঠার পর তার থেকে বীজ সংগ্রহ করার আশা করছেন। তিনিও ২ লাখ টাকার মতো আয় করবেন বলে আশাবাদী। জিরা ক্ষেতের নিকটে অবস্থিত শিয়রবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাদিরা খানম জানান, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ জিরার ক্ষেত দেখতে আসে। স্থানীয় বাতাসী গ্রামের সহকারী অধ্যাপক ফরিদুজ্জামান বলেন, উসমান মুন্সীসহ যে ক’জন কৃষক জিরার আবাদ করেছেন। তারা যদি সফল হতে পারেন, তাহলে এলাকায় অর্থনীতিতে একটা পরিবর্তন আসবে বলে আমি মনে করি। এ পর্যন্ত কৃষি বিভাগ থেকে কোন সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে, জিরাচাষি কৃষকরা এ প্রতিনিধিকে জানান, শুধুমাত্র স্থানীয় উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো মতিয়ার রহমান ছাড়া, আর কোন সরকারি কর্মকর্তা এ পর্যন্ত খোঁজ নেয়নি। স্থানীয় উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. মতিয়ার রহমানের সাথে কথা বলে জানা যায়, অত্র এলাকায় জিরা চাষের উজ্জ¦ল সম্ভাবনা রয়েছে। এ বছর এলাকায় প্রায় ৩০/৩৫ শতক জমিতে জিরার আবাদ হয়েছে। আগামি বছর অত্র এলাকায় ব্যাপক হারে জিরার আবাদ হবে বলে মনে করছি। এ বছর যদি সবটুকু আবাদ সফল হয় তাহলে মধুমতি নদীর চরসহ অত্র এলাকার হত দরিদ্র কৃষকদের ভাগ্যের দ্বার খুলে যাবে। আর কৃষকরা আবাদে আগ্রহী হলে, আমার পক্ষ থেকে যতটুকু সাহায্য সহযোগিতা প্রয়োজন হবে, আমি তা করবো। তিনি আরো বলেন, এলাকায় জিরা চাষের ব্যাপারে ‘আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। শীঘ্রই তারা এ এলাকা দেখতে আসবেন বলে আশা করি’।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন