শামসুল ইসলাম : রিহায়ারিং কর্মসূচির আওতায় মালয়েশিয়ায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ অবৈধ বাংলাদেশী কর্মী ই-কার্ড পাবে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ই-কার্ড প্রাপ্ত কর্মীরা পর্যায়ক্রমে বৈধতা লাভের সুযোগ পাবে। ই-কার্ড প্রাপ্তদের দ্রুত পাসপোর্ট দেয়া হবে। মালয়েশিয়ায় অবৈধ শ্রমিকদের ই-কার্ড পাওয়ার জন্য কোনো এজেন্ট বা দালালকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি। কোনো এজেন্টের কাছে না গিয়ে নিয়োগকর্তা এবং অবৈধ শ্রমিককে সশরীরে যে কোনো স্টেট ইমিগ্রেশন অফিস থেকে ই-কার্ড নিতে হবে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু হয়ে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত মালয়েশিয়া সরকার অবৈধ বিদেশী শ্রমিকদের ই-কার্ড সরবরাহ করবে। কোনো ভাবেই এই সময় বাড়ানো হবে না। অবৈধ শ্রমিকরা অস্থায়ী কাজের নিবন্ধন ই-কার্ড পেলে তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বৈধকরণের উদ্যোগ নেয়া হবে। যারা এসুযোগ হাত ছাড়া করবে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা এবং দেশে পাঠিয়ে দিবে মালয়েশিয়া সরকার। যারা ইতিমধ্যেই ই-কার্ড হাতে পেয়েছে তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন থেকে পাসপোর্ট দেয়া হবে। শ্রমিকদের পাসপোর্ট সরবরাহে কোনো হয়রানি ও ভোগান্তি যাতে না হয় তা’ নিশ্চিত করা হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় কর্মরত সকল অবৈধ বাংলাদেশী শ্রমিকরা এ সুযোগ পাবে। গতকাল মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে হাই কমিশনার মোঃ শহিদুল ইসলাম একথা বলেন। কুয়ালালামপুর থেকে নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। মতবিনিময়কালে আরো উপস্থিত ছিলেন, কাউন্সেলর শ্রম মো: সায়েদুল ইসলাম, প্রথম সচিব মশিউর রহমান তালুকদার, শ্রম শাখার প্রথম সচিব হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল, ২য় সচিব তাহমিনা বেগম ও ২য় সচিব মো: ফরিদ আহমদ। ই-কার্ড ইস্যু প্রকল্প মালয়েশিয়া সরকার কর্তৃক ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চালু হওয়া রিহায়ারিং কর্মসূচির সহায়ক একটি কর্মসূচি। সকল অবৈধ শ্রমিকদের জন্য এটাই শেষ সুযোগ। অবৈধ বাংলাদেশী শ্রমিকদের অবশ্যই ই-কার্ড করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন হাই কমিশন কর্তৃপক্ষ।
শুধু পাঁচটি সেক্টরের জন্য ই-কার্ডের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে প্লানটেশন, এগ্রিকালচার, ইন্ডাস্ট্রিয়াল, কনস্ট্রাকশন এবং সার্ভিস সেক্টর। এই ই-কার্ডের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ অবৈধ শ্রমিক নিবন্ধিত হবে বলে হাই কমিশনার শহিদুল ইসলাম আশাবাদ ব্যক্ত করেন। জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় অবস্থিত শুধুমাত্র ১৫টি দেশের অবৈধ শ্রমিকগণ এই ই-কার্ড পাবে। এই ১৫ দেশ হচ্ছে, বাংলাদেশ, ফিলিপাইন, ইন্ডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কাজাখস্তান, কাম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান এবং ভিয়েতনাম। এ দিকে মঙ্গলবার সকালে পুত্রজায়াস্থ মালয়েশিয়ান ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টে, ডিপার্টমেন্টের মহাপরিচালক দাতো শ্রী হাজী মুস্তাফার সভাপতিত্বে চলমান ই-কার্ড-এনফোর্সমেন্ট ক্যাড বিষয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সকল সোর্স কান্ট্রির হাইকমিশন/এম্বাসীর প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষে সভায় প্রতিনিধিত্ব করেন কাউন্সেলর (শ্রম) সায়েদুল ইসলাম, সঙ্গে ছিলেন দ্বিতীয় সচিব (রাজনৈতিক) বেগম তাহমিনা ইয়াসমিন এবং দ্বিতীয় সচিব (শ্রম) ফরিদ আহমেদ। সভা শেষে সকল দেশের প্রতিনিধিবৃন্দকে সরেজমিনে কিভাবে ই-কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে তা প্রদর্শন করা হয়। প্রদর্শন কালে বাংলাদেশের প্রতিনিধি সায়েদুল ইসলাম ৩৯টি কার্ড বাংলাদেশীদের মধ্যে বিতরণ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন