স্টাফ রিপোর্টার : প্রথম থেকে দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে প্রতিথযশা ও স্বনামধন্য লেখকদের লেখা বাদ দিয়ে আনা পরিবর্তন কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রুল জারি করে। শিক্ষা সচিব, জাতীয় পাঠ্যপুস্তক ও কারিকুলাম বোর্ডের চেয়ারম্যানকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষাবিদ মমতাজ জাহান এবং অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন এই রিট আবেদনটি করেন। আদালতে তাদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। সঙ্গে ছিলেন সৈয়দ মামুন মাহবুব ও ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।
পাঠ্যপুস্তক থেকে সুপরিচিত, স্বনামধন্য, প্রতিথযশা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারীদের লেখা বাদ দিয়ে খুব সূক্ষ্মভাবে সাম্প্রদায়িক, পাকিস্তানি ভাবধারা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। গোলাম মোস্তফা, হুমায়ুন আজাদ, শরৎচন্দ্র, রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর লেখা বাদ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার দেশ চালাচ্ছে, তখন এটা কিসের ষড়যন্ত্র।
রিট আবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালে স্বনামধন্য-সুপরিচিত লেখকদের লেখা প্রথম শ্রেণি থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সে সময় অসাম্প্রাদায়িক, গণতান্ত্রিক, সামাজিক, মানবিক ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন লেখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
গত বছরের ৮ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের দেয়া একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সেসব লেখকের লেখা বাদ দিতে বলা হয়। তার মধ্যে হুমায়ুন আজাদসহ বিশিষ্ট লেখকরা রয়েছেন। এরপর চলতি বছরে এসে এনসিটিবি হেফাজতে ইসলামের দাবি অনুযায়ী অনেক বিষয় বাদ দেয়। অথচ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, উপন্দ্রেকিশোর রায় চৌধুরী, সুকুমার রায়ের লেখা পাকিস্তান আমলেও পাঠ্যপুস্তকে ছিল। যেসব লেখকের লেখা বাদ দেয়া হয়েছে তার একটি তালিকাও রিট আবেদনে যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। এতে দেখা যায়, পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বই থেকে গোলাম মোস্তফার প্রার্থনা হুমায়ুন আজাদের ‘বই’, ষষ্ঠ শ্রেণির বাংলা চারুপাঠ থেকে এস ওয়াজেদ আলীর ‘রাঁচি ভ্রমণ’, সানাউল হকের কবিতা ‘সভা’ বাদ দেয়া হয়েছে। এছাড়া আনন্দপাঠ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে সত্যেন সেনের ‘লাল গরুটা’, শরৎচন্দ্রের গল্প ‘লালু’, উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরীর ‘রামায়ণ কাহিনী’।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন