নাইমুর রহমান নাবিল : দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। প্রায় সাড়ে চার বছর পর আগামী ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনকে ঘিরে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ইতিহাসে এটাই হবে প্রথম সম্মেলন। ইতোমধ্যে সম্মেলনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আয়োজন কমিটি। পদ পেতে ইতোমধ্যেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন পদ-প্রত্যাশীরা। জবি শাখার ছাত্রলীগের কমিটিতে আসতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রী ও এমপিদের কাছে তদবির করছে। এদিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ অবিবাহিত, নিয়মিত ছাত্র ও ক্লিন ইমেজদের দিয়ে কমিটি করার ঘোষণা দিয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই, যাদের বয়স ২৯ এর কম তারাই কেবল নতুন কমিটিতে আসবে এমন প্রত্যাশা করেছে জবি ছাত্রলীগের সাধারণ কর্মীরা।
ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর এফ এম শরিফুল ইসলামকে সভাপতি এবং এস এম সিরাজুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য কমিটি দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এক বছর মেয়াদি কমিটি প্রায় সাড়ে চার বছর পার করলেও বিভিন্ন কারণে নতুন কমিটি দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় কমিটি। গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করলেও শেষ পর্যন্ত অদৃশ্য শক্তির ইশারায় সম্মেলন স্থগিত করা হয়। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই নেতা-কর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। প্রতিনিয়ত ধরণা দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দের কাছে। নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আগামী ৩০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ চত্বরে হতে যাচ্ছে জবি ছাত্রলীগের প্রথম সম্মেলন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কাদের এমপি।
নতুন কমিটিতে সভাপতি পদে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন, সাইদুর রহমান জুয়েল, সাইফুল্লাহ ইবনে আহমেদ সুমন, তরিকুল ইসলাম, কামরুল হাসান, আপেল মাহমুদ। সাধারণ সম্পাদক পদে হারুনুর রশীদ, শামীম রেজা, জহির রায়হান আগুন, রুবেল শেখ, ইব্রাহিম ফরাজী।
এদিকে, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং দলীয় হাই কমান্ডকে বর্তমান কমিটির শীর্ষ দুই নেতার বিভিন্ন অপকর্মের কারণে বার বার বিব্রত হতে হয়েছে। শিক্ষকের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে টেন্ডার ছিনতাই, সাংবাদিক মারধর থেকে শুরু করে ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় চাঁদাবাজি, ভর্তি-বাণিজ্য, নিয়োগ-বাণিজ্য এমনকি টয়লেট দখলের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সকল যৌক্তিক আন্দোলনেই বাধা দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে বরাবরই বিচ্ছিন্ন ছিলেন তারা। ২০০৯ সালে তাদের আমলেই সংঘটিত হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায় দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ হত্যা। এমতাবস্থায় আসন্ন সম্মেলনে ক্লিন ইমেজের পরিচ্ছন্ন নেতৃত্ব আনতে চায় কেন্দ্রীয় কমিটি।
জবি ছাত্রলীগের সভাপতি এফ এম শরিফুল ইসলাম বলেন, সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বের হাতে জবি ছাত্রলীগের দায়িত্ব তুলে দেব। জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, সংগঠনকে শক্তিশালী করতে বিগত দিনে যারা কঠোর পরিশ্রম করেছে তাদেরকেই নেতা হিসেবে নির্বাচন করা হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন ইনকিলাবকে বলেন, ক্লিন ইমেজধারী, নিয়মিত ছাত্র এবং যাদের বয়স ২৯ বছরের কম তারাই নতুন কমিটিতে স্থান পাবে। কমিটির আকার কেমন হবে এ সংক্রান্ত জবাবে তিনি বলেন দুই বা ততোধিক সদস্যবিশিষ্ট কমিটি আসতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন