কর্পোরেট রিপোর্টার : শ্রমিকদের নিরাপত্তার প্রশ্নে আপসহীন নীতি মেনে চলে অ্যালায়েন্স। এ জন্য নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কারখানার নিরাপত্তা মানে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি না হওয়ায় এ পর্যন্ত ১৪২টি গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে ব্যবসা বাতিল করেছে প্রতিষ্ঠানটি। অ্যালায়েন্সভুক্ত ২৯টি ব্র্যান্ডের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবে না এসব গার্মেন্টস। তবে ব্যবসা বাতিল হওয়া এসব গার্মেন্টসের কেউ যদি ফের নিরাপত্তামানে উন্নীত হতে পারে, সেক্ষেত্রে তিনি ফের এসব ব্র্যান্ডের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারবেন। মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়ে অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে বলা হয়, শ্রমিকদের নিরাপত্তার প্রশ্নে আপসহীন নীতি মেনে চলে অ্যালায়েন্স। এ সময় জানানো হয় এ পর্যন্ত অ্যালায়েন্সভুক্ত ৭১টি কারখানা তাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। এ ছাড়া কারখানাগুলোর অগ্নি, ভবনের কাঠামো ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত সম্মিলিত ত্রæটির ৭২ শতাংশ সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে অগ্রাধিকারমূলক সংস্কার কাজের ৬৪ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে পুরো সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করা হয় অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে। অ্যালায়েন্সভুক্ত প্রায় ছয়শ কারখানায় ১৩ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। এসব কারখানার শ্রমিকদের একটি বড় অংশকে দুর্ঘটনার সময় নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতন করতে ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ২৫ হাজার নিরাপত্তা রক্ষীকেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। অ্যালায়েন্স ছাড়াও ইউরোপীয় ক্রেতাদের সমন্বয়ে গঠিত কারখানা পরিদর্শন জোট ‘অ্যাকর্ড’ও প্রায় দেড় হাজার কারখানার সংস্কার কার্যক্রম দেখভাল করছে। আইএলও’র (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) সহযোগিতায় আরো এক হাজার কারখানার সংস্কার কাজ তদারক করছে সরকার। মরিয়ার্টি বলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে সংস্কার কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করছি। তবে সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটিই শেষ কথা নয়। বাংলাদেশের মতো অন্যান্য দেশেও সংস্কার কাজ চলমান রাখা যায় কি না সেটি নিয়েও আলোচনা চলছে। ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের গার্মেন্টস খাতের নিরাপত্তা মান পরীক্ষা ও সংস্কার কাজ দেখভালের লক্ষ্যে আমেরিকাভিত্তিক ক্রেতাদের সমন্বয়ে গঠিত হয় অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স সেফটি। এই জোটে ২৯টি ব্র্যান্ড যুক্ত রয়েছে। এসব ব্র্যান্ডের কাছে রফতানি করে এমন প্রায় ছয়শ কারখানার সংস্কার কার্যক্রম তদারক করছে অ্যালায়েন্স। আগামী বছরের জুনে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার কথা। বাংলাদেশে অ্যালায়েন্সের কান্ট্রি ডিরেক্টর ও সাবেক রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি বলেন, কোনো কারখানা বন্ধ করা আমাদের কাজ নয়। কোনো কারখানা যথাযথ সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজে ব্যর্থ হলে কিংবা অসহযোগিতা করলে আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা কমিটির নজরে আনি। পর্যালোচনা কমিটি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন