বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বাল্যবিয়ে থেকে নিজেদের রক্ষায় সাহসী ও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান রাজাপুরের শারমিনের

প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১:০৫ এএম, ২২ এপ্রিল, ২০১৭

রাজাপুর (ঝালকাঠি) উপজেলা সংবাদদাতা : বাল্যবিয়ে ঠেকাতে কিশোরীদেরকে সাহসী, কৌশলী ও উদ্যোগী হতে হবে বলে আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ পুরস্কার অর্জনকারী ঝালকাঠির রাজাপুরের স্বর্ণ কিশোরী সাহসী শারমিন। অনুকরণীয় দৃষ্টান্তকারী অনন্য সাহসিকতায় শারমিন পেয়েছেন আন্তর্জাতিক পুরস্কার। আর এ সাহসী বালিকাকে নিয়ে গর্বিত সাংবাদিক, শিক্ষক, পুলিশ ও এলাকাবাসী। তার এ দৃষ্টান্তকে অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে প্রত্যয়ী সহপাঠীসহ এলাকার নারী শিক্ষার্থীরা। নারী অধিকার রক্ষায় নারী নির্যাতন ও বাল্য বিয়ের বিরুদ্ধে কাজ করার অঙ্গীকার সাহসী নারী’র পুরস্কার জয়ী শারমিনের। নিজে আইনজীবী হয়ে ভবিষ্যতে বাংলাদেশসহ বিশে^র নারী সমাজের উন্নয়নে কাজ করতে চায় স্বর্ণ কিশোরী সাহসী শারমিন। রাজাপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া এসএসসির ফলপ্রত্যাশী শারমিন নিজের বাল্য বিবাহ ঠেকিয়ে দিয়েছিলো নবম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত অবস্থাতেই। পরে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেই লেখাপড়া চালিয়ে অংশ নেয় এসএসসি পরীক্ষায়। ৩২ বছর বয়সী যুবকে বিয়ে না করায় তার ওপর মায়ের নির্যাতনও দমিয়ে রাখতে পারেনি তার লেখাপড়ার গতি। নিরুপায় হয়ে গর্ভধারিনী মা ও কথিত হবু বরের বিরুদ্ধে মামলা করে নিজেকে বাল্য বিবাহ নামক অভিশাপের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করে এখন সে বিশ্বের কিশোরীদের কাছে রোল মডেল। গত ৩০ মার্চ মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের কাছ থেকে উইমেন অব কারেজ পুরস্কার নেয়া শারমিন স্বর্ণ-কিশোরী নেটয়ার্কের একজন সদস্য। অদম্য সাহসিকতার জন্য শারমিন দেশ ছাড়িয়ে প্রশংসা কুড়িয়ে বিশ্বব্যাপী কাছে বাংলাদেশকেও পরিচয় করিয়ে দিয়েছে আরও একবার। রাজাপুর সাংবাদিক ক্লাব’র সাংবাদিকের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে শারমিন আক্তার জানায়, ভবিষ্যতে আইনজীবী হয়ে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের কিশোরীদের জন্য কাজ করতে সকলের সহযোগীতা চেয়েছে। ২০১৫ সালের আগস্টের শুরুর দিকে ৩২ বছরের যুবক পাত্রের সাথে ১৫ বছরের কিশোরী শারমিনের বিয়ে ঠিক করে তার মা। বাবা প্রবাসী হওয়ায় মা ছিলো শারমিনের পরিবারের কর্তা। বাল্য বিয়েতে রাজী না হওয়ায়, খুলনায় নিয়ে তাকে পাত্রের সাথে এক ঘরে আটকেও রাখা হয়েছিলো কিন্তু সেখান থেকে কৌশলে রাজাপুরে পালিয়ে আসেন শারমিন। তাতেও রক্ষা হয়নি তার। রাজাপুরের বাড়িতেও আটকে তার ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। বাবা সউদি প্রবাসী হওয়ায় মায়ের অত্যাচারের মাত্রা বাড়তেই থাকে। এ নিয়ে সংবাদ প্রচার হলে বিষয়টি সারাবিশে^ আলোচনায় উঠে আসে। রাজাপুর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, সত্যিই শারমিনকে আইনী সহায়তা দিতে পেরে একজন পুলিশ সদস্য হিসেবে আমি গর্বিত। শারমিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারন্যাশনাল ইউমেন অব কারেজ-২০১৭’ পুরস্কারে ভূষিত হওয়ার খবরে এতো টা আনন্দ পেয়েছি যা সারা চাকুরি জীবনে পাইনি। ওসি বলেন, ২০১৫ সালের ২৯ এপ্রিল রাজাপুর থানায় যোগদানের পর থেকে শারমিনসহ এ পর্যন্ত ৪৬ জন গরীব ও অসহায় নারী পরিবারের অভিযোগে ভিত্তিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা রেকর্ড করে নিষ্ঠা ও মানবিকতার সহিত আইনী সহায়তা করছি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন