শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সকল মহিলার প্রতি হিজাব পরার জন্য অস্ট্রিয়ার প্রেসিডেন্টের আহ্বান

| প্রকাশের সময় : ৩০ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দি ইন্ডিপেনডেন্ট : অস্ট্রিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভ্যান ডার বেলেন প্রচন্ড ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মুসলমানদের সাথে সংহতি প্রকাশ করতে সকল মহিলার প্রতি হিজাব পরার আহ্বান জানিয়েছেন। বামপন্থী সাবেক গ্রিন পার্টি নেতা প্রেসিডেন্ট ভ্যান ডার বেলেন জানুয়ারিতে স্বল্প ভোটের ব্যবধানে এক চরম ডানপন্থী নেতাকে পরাজিত করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা হচ্ছে মৌলিক অধিকার। মুসলিম মহিলাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা সমর্থনের জন্য সবার হিজাব পরা উচিত। তিনি দাবি করেন, মুসলিম মহিলারা তাদের পছন্দমত হিজাব পরেন।
স্কুল শিক্ষার্থীদের এক সমাবেশে তিনি বলেন, ইচ্ছেমত পোশাক পরা একজন মহিলার অধিকার। এ ব্যাপারে এটাই হচ্ছে আমার মত। তিনি বলেন, এবং শুধু মুসলিম মহিলারাই নয়, সকল মহিলাই হিজাব পরতে পারেন। এই প্রকৃত ও প্রচন্ড ইসলামোফোবিয়া যদি অব্যাহত থাকে তাহলে একদিন আসবে যখন আমরা সবাইকে অবশ্যই হিজাব পরতে বলব- আর তা তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করার জন্য যারা ধর্মীয় কারণে তা পরে। ভ্যান ডার বেলেন এক স্কুল ছাত্রীর প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। ঐ ছাত্রীটি যুক্তি দেয় যে, হিজাব বা বোরকার উপর নিষেধাজ্ঞা নারীদেরকে কোনো বিষয়ে সাফল্য অর্জনের পরিবর্তে উপস্থিতি সর্বস্ব করে তুলবে এবং তাদের কিছু অংশকে শ্রমবাজারের বাইরে রাখবে।
অস্ট্রিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্চে এসব কথা বলেন। কিন্তু অস্ট্রিয়া ও প্রতিবেশী জার্মানিতে ‘বোরকা নিষেধাজ্ঞা’ সম্পর্কে বিতর্ক দেখা দেয়ার মধ্যে এ সপ্তাহে অস্ট্রিয়ান টেলিভিশনে তা প্রচার হওয়ার পর প্রকাশ্যে আসে।
একজন মুখপাত্র বলেন যে, ইউরোপ জুড়ে ইসলামিক স্টেট (আইএস) সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী হামলার পর ভ্যান ডার বেলেন এটা দেখতে পছন্দ করবেন যে ইসলাম নৃশংসতা অনুমোদন করে না এ বিষয়ের উপর অস্ট্রিয়ার মুসলিম প্রতিনিধিরা জোর দিয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য রাখবেন।
তিনি অন্যদিক থেকে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি উদাহরণ হিসেবে গোঁড়া ইহুদিদের গাড়িতে বহন করতে এক মুসলিম ট্যাক্সি চালকের অস্বীকৃতির কথা বলেন। তিনি বলেন, এটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।
প্রেসিডেন্টের অফিস বলে, তিনি শুধু নির্বাচিত পরিস্থিতিতেই নিষেধাজ্ঞা আরোপকে যৌক্তিক বলে মনে করেন। যেমন মহিলা বিচারকদের ক্ষেত্রে। তাদের ক্ষেত্রে ধর্মীয় পোশাক তাদের পেশাগত নিরপেক্ষতার ব্যাপারে প্রশ্ন সৃষ্টি করতে পারে।  
ভ্যান ডার বেলেন বলেছেন, তিনি  কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে খ্রিস্টান ক্রস ও ইহুদি কিপ্পাসসহ সকল ধর্মীয় প্রতীকের উপরই সমানভাবে আরোপ করবেন।
প্রেসিডেন্টের বামপন্থী ব্যাকগ্রাউন্ড সত্তে¡ও অস্ট্রিয়া সরকার হচ্ছে সেন্ট্রিস্ট সোস্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি ও পপুলিস্ট ফ্রিডম পার্টি অব অস্ট্রিয়ার মধ্যকার একটি কোয়ালিশন।
এ সরকার যে সব নীতি গ্রহণ করতে চলেছে তার মধ্যে রয়েছে কোর্ট, স্কুল ও অন্যান্য প্রকাশ্য স্থানে সম্পূর্ণ মুখ ঢাকা বোরকার উপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা যা গত জানুয়ারিতে ঘোষণা করা হয়।
এ আংশিক নিষেধাজ্ঞা এখনো কার্যকর হয়নি। তা নিকাব ও বোরকার ব্যাপারে প্রযোজ্য হবে, কিন্তু হিজাবের ব্যাপারে নয়। হিজাবে শুধু চুল ও ঘাড় আবৃত করা হয়।
তবে সরকার মতাদর্শগত এবং ধর্মীয় নিরপেক্ষতা প্রদর্শনের স্বার্থে পুলিশ অফিসার, বিচারক, ম্যাজিস্ট্রেট ও সরকারী কৌঁসুলিেেদর হিজাব পরা নিষিদ্ধ করেছে।
প্রস্তাবিত আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হাজার হাজার লোক ভিয়েনার রাস্তায় নেমে আসে।
কয়েক দফা সন্ত্রাসী হামলা ও উদ্বাস্তু সংকটের প্রেক্ষিতে ইউরোপে ইসলামী বোরকা বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিতর্ক আবার পুনরুজ্জীবিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জার্মান পার্লামেন্ট সিভিল সার্ভিস, বিচার বিভাগ ও সামরিক বাহিনীতে বোরকা ও নিকাব পরা নিষিদ্ধ করে আনা খসড়া আইনের সমর্থনে ভোট দেয়।
জার্মান অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী টমাস দি মেইজিয়ার যুক্তি দেখান যে, এ নিষেধাজ্ঞা একীকরণ প্রক্রিয়ার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যার অর্থ আমাদের মূল্যবোধ এবং অন্য সংস্কৃতির প্রতি আমাদের সহিষ্ণুতার সীমা কতদূর তা সুস্পষ্ট করা ও জানিয়ে দেয়া উচিত।
অ্যাঙ্গেলা মার্কেল ডিসেম্বরে এ পদক্ষেপের প্রতি তার সমর্থন ঘোষণা করে বলেন, জার্মানিতে সম্পূর্ণ মুখ ঢাকা বোরকা গ্রহণযোগ্য নয় এবং আইনগত ভাবে যেখানেই সম্ভব সেখানে তা নিষিদ্ধ করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
গত বছর নেদারল্যান্ডসে ডাচ এমপিরা অনুরূপ ধরনের নিষেধাজ্ঞার প্রতি সমর্থন জানিয়ে ভোট দেন যা গণপরিবহন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সরকারী ভবনে প্রযোজ্য হবে এবং তা ভঙ্গ করলে শাস্তি হবে জরিমানা।
২০১১ সালে প্রথম দেশ হিসেবে ফ্রান্স এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার পর গোটা ইউরোপে সম্পূর্ণ মুখ ঢাকা বোরকার প্রতি নিষেধাজ্ঞার প্রতি সমর্থন বৃদ্ধি পেতে থাকে। বেলজিয়াম ও বুলগেরিয়া ফ্রান্সের পথ অনুসরণ করে। অন্যদিকে অস্ট্রিয়া আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং স্পেন, ইতালি ও সুইজারল্যান্ডের অংশ বিশেষে তা আরোপিত হয়। 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
Salim ৩০ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:১৯ পিএম says : 0
thanks a lot to the president
Total Reply(0)
Rubia Islam ৩০ এপ্রিল, ২০১৭, ১:৩৫ পিএম says : 0
mubarakbad janai apnake...
Total Reply(0)
ওবাইদুল ইসলাম ১ মে, ২০১৭, ৮:২২ পিএম says : 0
ধার্মিক মুসলমান মহিলারা হজরত ইসা (আঃ) মাতা হজরত মরিয়ম (আঃ) মতই পোষাক পরে থাকেন । ক্রিস্টান নানরাও ঠিক সেই একই রকম পোশাক পরিধান করে থাকেন । শুধু মুসলিম মহিলাদের ক্ষেত্রেই সাদা খ্রিস্টানদের যত আপত্তি ও বিরোধিতা । খুব সম্ভত অমুসলিমরা নিজেদের ধর্মকে হীন মনে করে হতাশায় ভুগে থাকে । তাই যদি না হবে তা হোলে অমুসলমানরা যেমন মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিষদ্গার করে থাকে মুসলমানরা কোনো অমুসলামান ধর্মের বিরুদ্ধে কখনও কোনো বিষদ্গার করে না কেন ?
Total Reply(0)
Abdus Salam ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:২১ পিএম says : 0
At first thanks for Allah.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন