ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথগ্রহণের শততম দিনে আয়োজিত এক সমাবেশে সংবাদ মাধ্যমের তীব্র সমালোচনা করেছেন। পেনসিলভানিয়ার ওই সমাবেশে তিনি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সমালোচনাকে ভুয়া খবর বলে উল্লেখ করেছেন। খবরে বলা হয়, শপথ নেয়ার একশ দিন উপযাপনকে কেন্দ্র করে পেনসিলভানিয়ার হ্যারিসবার্গে সমাবেশ ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। হাজারো সমর্থকের পাশাপাশি অংশ নিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সংবাদ মাধ্যমের হোয়াইট হাউস প্রতিনিধিদের বার্ষিক অনুষ্ঠানেও যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। ১৯৮১ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের পর তিনিই প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হওয়ার ঘোষণা দিলেন। উল্লেখ্য, রিগ্যান তখন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। পেনসিলভানিয়ার হ্যারিসবার্গে ওই সমাবেশে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, সংবাদমাধ্যম তার শপথ গ্রহণের শততম দিনে গ্রহণ করা অর্জনগুলো প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি আরও জানান, হোয়াইট হাউস প্রতিনিধিদের ডিনার পার্টিতে হলিউড তারকা ও ওয়াশিংটনের সাংবাদিকদের সমাবেশ ঘটে। আর তা আমার জন্য বিরক্তিকর। ওয়াশিংটন থেকে ১০০ মাইলেরও বেশি দূরে এসে শিহরিত হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন ট্রাম্প। ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি ৪৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথগ্রহণ করেন ট্রাম্প। গত ১০০ দিনে রেকর্ড পরিমাণ ২৬টি নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন তিনি। শুক্রবার উত্তর মেরু ও আটলান্টিক মহাসাগরে তেল-গ্যাস উত্তোলনে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে দিতে নতুন নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে অনেক মার্কিন নাগরিকের কর্মসংস্থান হবে বলেও ট্রাম্প দাবি করেন। গত বছর ডিসেম্বরে ওবামা পূর্ব-প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, উত্তর মেরু অঞ্চলে অফশোর তেল ও গ্যাস উত্তোলনের ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। আমেরিকা ফার্স্ট অফশোর এনার্জি স্ট্র্যাটেজি শীর্ষক ওই নির্বাহী আদেশ স্বাক্ষরের পর ট্রাম্প বলেন, আমাদের দেশে প্রাকৃতিক সম্পদের এক বিশাল ভান্ডার রয়েছে। এখানকার সাগরে রয়েছে অবারিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ। কিন্তু ফেডারেল সরকার এসব অফশোর ক্ষেত্রে ৯৪ শতাংশই উত্তোলনের জন্য বন্ধ রেখেছে। এর ফলে দেশের মানুষ হাজার হাজার কর্মসংস্থান ও কোটি কোটি ডলারের সম্পদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ট্রাম্পের বিতর্কিত অবস্থানের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনে ট্রাম্প-বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। ওই বিক্ষোভের আয়োজকরা জানান, তারা আগামী বছর মধ্যবর্তী নির্বাচনে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি জোরালোভাবে তুলতে চান। ট্রাম্প বলেন, সংবাদ মাধ্যম আমার গত ১০০ দিনের অর্জনগুলো যথাযথভাবে প্রকাশ ও প্রচার করতে ব্যর্থ হয়েছে। গত ১০০ দিনের কাজকর্ম ছিল তীব্র উত্তেজনাপূর্ণ ও কার্যকর। অথচ সংবাদ মাধ্যম নানা ভুয়া খবর ছড়িয়েছে। অযথা সমালোচনা করেছে। এদিকে একই দিন অনুষ্ঠিত হয়েছে হোয়াইট হাউসে কর্মরত সাংবাদিকদের বার্ষিক নৈশভোজ। রীতি অনুযায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্টরা এ আয়োজনে অংশ নিয়ে থাকেন। কিন্তু ট্রাম্পের সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমের সম্পর্ক সাপে-নেউলে। ট্রাম্প প্রশাসন সংবাদ মাধ্যমকে বিরোধী দল মনে করে। এর জেরে রীতি ভেঙে এবারের আয়োজন বর্জন করেছেন ট্রাম্প। সমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, হোয়াইট হাউস প্রতিনিধিদের ডিনারে তারকা ও ওয়াশিংটনের সাংবাদিকদের সমাবেশ ঘটে। আর তা আমার জন্য অত্যন্ত বিরক্তিকর। রাজধানী থেকে ১০০ মাইলেও বেশি দূরে এসে আমি বেশ উৎফুল্ল। বিবিসি, রয়টার্স, সিএনএন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন