স্টাফ রিপোর্টার : প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট যদি দেখে দেশে আইনি শাসন হচ্ছে না। শুধু দুই-তৃতীয়াংশ সংসদ সদস্যই (এমপি) নয়, পুরো সংসদ মিলে যদি সংবিধানকে পরিবর্তন করে দেয়, জনগণের অধিকার ক্ষুণœ করে কোনো আইন সংবিধানের মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে তা বাতিল করতে সুপ্রিম কোর্ট পিছপা হবে না। গতকাল (রোববার) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ভূমি আইন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের উদ্বোধন ও নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট যদি দেখে এতে সংবিধানের মূল ভিত্তি নষ্ট হয়ে গেছে, আইনের শাসনও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে ও জনগণের অধিকারের ওপর আঘাত করেছে তাহলে সংসদের ওই সিদ্ধান্তকে সুপ্রিম কোর্ট বে-আইনি ঘোষণার ক্ষমতা রয়েছে। আত্মমর্যদাসম্পন্ন উন্নত দেশ হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে আইনের শাসনের সঠিক বাস্তবায়ন। আইনের শাসন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হলে সভ্য ও উন্নত জাতিতে পরিণত হওয়া সম্ভব। এজন্য আইন, শাসন ও বিচার ব্যবস্থাকে একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে কাজ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু যে সংবিধান প্রণয়ন করেছেন তাতে সুপ্রিম কোর্টকে জুডিশিয়াল রিভিউ করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। সংবিধানের এই ক্ষমতাবলেই সুপ্রিম কোর্ট পঞ্চম সংশোধনী, সপ্তম, অষ্টম ও ১৩তম সংশোধনী বাতিল করে দিয়েছে। এতে কোনো দ্বিমত নেই। তিনি বলেন, আপনারা আশ্চর্য হবেন যে, পাকিস্তানের সংবিধানকে এক সময় বলা হত আইয়ুব খানের সংবিধান। সে দেশে এখন যে আইনের শাসন চলছে নিন্ম আদালতে এটা আজকেও আমরা পাইনি। তিনি বলেন, পাকিস্তানের মত দেশে উচ্চআদালত যা বলে নিন্ম আদালতের স্থানান্তরসহ যা বলে পৃথিবীর সব দেশেই বহাল আছে কিন্তু আমাদের সেটি না থাকায় প্রধান বিচারপতি কথা বলতে বাধ্য হচ্ছে। আমরা যখন কিছু রায় দেই। তা যদি কারো বিরুদ্ধে যায়। তখনই তারা এমন সব মন্তব্য করেন যা আমাদের কষ্ট লাগে।
ভূমিআইন বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, অনেক আইনজীবী এবং বিচারপতিরাও ভূমিআইন বিষয়ে অজ্ঞ। ভ‚মি আইনের বিষয়ে তেমন গুরুত্ব দেয়া হয় না। এ নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। উচ্চআদালতেও এ সংক্রান্ত বিচারপতির সংখ্যাও কম। আইনজীবীরা চায় ফৌজদারি মামলা নিয়ে কাঁচা টাকা ‹ইনকাম› করতে।
অনুষ্ঠানে ভূমি আইন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান খ্রীস্টিন রিচার্ডসন-এর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাখেন ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান, ট্রেজারার অধ্যাপক মো. সেলিম ভূঁইয়া এবং আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সরকার আলী আককাস। এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন