শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ভারত কাশ্মীর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের সুযোগ নষ্ট করছে

| প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

লসএঞ্জেলেস টাইমস : ভারত ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা লাভের সময় থেকেই কাশ্মীরকে তার অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে আসছে। কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সাথে তার দীর্ঘ লড়াই চলে আসছে। কিন্তু সেখানে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা, রাস্তায় বিক্ষোভ এবং ৭০ বছরের সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক চাপের প্রেক্ষিতে সমালোচকরা প্রশ্ন করছেন যে ভারত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ হারাতে যাচ্ছে কিনা। তারা আরো বলছেন, নরেন্দ্র মোদির সকোর কাশ্মী
কাশ্মীরে সর্বশেষ সহিংসতায় সোমবার ৯ জন নিহত হয়। তাদের মধ্যে ২ জন সৈন্য, ৫ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও ২ জন বেসামরিক ব্যক্তি। সৈন্য ২ জনের মাথা পাকিস্তানিরা কেটে ফেলে বলে ভারত বলেছে।
ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেন, পাকিস্তানি সৈন্যরা বিতর্কিত সীমান্তে গুলিবর্ষণ করে। তারপর পাকিস্তানি বিশেষ বাহিনী সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়ে। তারা একজন ভারতীয় সৈন্য ও নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্যকে হত্যা করে এবং তাদের মৃতদেহ বিকৃত করে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অরুণ জেইটলি এর পাল্টা জবাব দেয়ার শপথ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, সৈন্যদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। পাকিস্তান ভারতের এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, ঐ এলাকায় তাদের এ ধরনের কোনো কমান্ডো ইউনিট নেই।
পাকিস্তান সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, পাকিস্তান সেনাবাহিনী একটি উ”ুঁ পেশাদার বাহিনী এবং তারা কখনো একজন সৈন্যের লাশের অসম্মান করবে না, হোক সে ভারতের। পৃথক ঘটনায় শ্রীনগরের ১০ মাইল দক্ষিণে একটি ব্যাংকের বাইরে একটি ভ্যান ছিনতাই চেষ্টা কালে ৫ জন পুলিশ ও ২ জন বেসামরিক নিরাপত্তা রক্ষী নিহত হয়।
ভারতীয় বার্তা সংস্থাগুলো জানায়, হামলাকারীরা কমপক্ষে ৪টি রাইফেল নিয়ে যায়। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ জম্মু ও কাশ্মীরে একে ভয়ংকর ২৪ ঘন্টা বলে আখ্যায়িত করেন। কাশ্মীরী বিচ্ছিন্নতাবাদী হিজবুল মুজাহিদিন গ্রæপ হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে।
গত জুলাই মাসে ভারতীয় সৈন্যরা বুরহান ওয়ানি নামে একজন তরুণ অত্যন্ত জনপ্রিয় স্বাধীনতাকামী নেতাকে গুলি করে হত্যার পর ভারত বিরোধী বিদ্রোহে আরো অধিক সংখ্যক তরুণ যোগ দেয়। ভারতীয় সৈন্য ও আধা সামরিক বাহিনীর উপর পাথর ছুঁড়তে কাশ্মীরীরা বিপুল সংখ্যায় রাস্তায় নেমে আসে। ভারতীয় সৈন্যরা শত শত লোককে গুলি করে হত্যা করেছে। মানবাধিকার গ্রæপগুলো তাদের বিরুদ্ধে অত্যধিক শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ করেছে।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের ফলে এপ্রিলে শ্রীনগরে পার্লামেন্টারি একটি উপনির্বাচনে মাত্র ৭ শতাংশ ভোট পড়ে যা ভোটদানের সর্বনি¤œ রেকর্ড।
কাশ্মীরীদের ভারত বিরোধী মনোভাব আরে প্রচন্ডতা লাভ করে যখন সপ্তাহ কয়েকদিন আগে ভারতীয় সৈন্যরা এক শাল নির্মাতাকে একটি সামরিক জিপের হুডের সাথে বেঁধে কয়েকটি গ্রাম ঘোরায়। এটি ছিল পাথর নিক্ষেপের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি।
ভারত বিরোধী বিক্ষোভ দমন করতে কর্তৃপক্ষ গত সপ্তাহে ফেসবুক, টুইটার ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা চালায় যদিও বহু কাশ্মীরীই এ নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর পথ খুঁজে নিয়েছে। ভারত তার সৈন্যদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দেয়ার জন্য পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করে আসছে। কাশ্মীরে সহিংসতা ও কঠিন হাতে তা দমনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচকরা হুঁশিয়ার করে বলেছেন যে তার সরকার কাশ্মীর সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের সুযোগ নষ্ট করছে।
বিরোধী দল কংগ্রেসের একজন নেতা পি. চিদাম্বরম বলেছেন,জম্মু ও কাশ্মীর সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকার ধ্বংসাত্মক পথ গ্রহণ করেছে। এ পথ কোনো প্রকার শান্তি বা জনগণের সাথে কোনো সম্পর্ক তৈরিতে সাহায্য করবে না।
সোমবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরে আসার আগে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে একটি বহুমুখী সংলাপের আহবান জানান। ভারত বহুদিন ধরেই এ ব্যাপারে বাইরের হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন