শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কৃষ্ণচূড়ার লালাভায় রাঙা কুমিল্লা নগরীর পথ-ঘাট

| প্রকাশের সময় : ৬ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : এই সেই কৃষ্ণচূড়া, যার তলে দাঁড়িয়ে হাতে হাত, চোখে চোখ রেখে কথা যেতো হারিয়ে.. আশা ছিল ভালোবাসা ছিল.... উপমহাদেশের কিংবদন্তী সঙ্গীত শিল্পী কিশোর কুমারের এ গান যারা শুনেছেন বা মনে রেখেছেন এমন মানুষ রক্তরাঙা ফুলে ভরপুর কৃষ্ণচূড়া দেখলে অন্তত দ্’ুলাইন হলেও গুনগুন করবেন এমনটি অপ্রত্যাশিত নয়। কারণ কৃষ্ণচূড়ার লালাভা বলে কথা।  
গ্রামের সবুজ প্রান্তর, আঁকাবাঁকা মেঠোপথ ছাপিয়ে কুমিল্লা নগরীর পথ-প্রান্তর রাঙিয়ে তুলেছে কৃষ্ণচূড়ার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। বাংলা প্রকৃতির রূপরঙ্গের প্রথম ঋতু গ্রীষ্ম। আর এ গ্রীষ্মের বৈশাখেই নগরীর রাস্তার মোড়ে মোড়ে আর বিভিন্ন ভবন ও অফিস পাড়ায় গাছে গাছে কৃষ্ণচূড়ার লালআভা সৃষ্টি করেছে বৈচিত্র্যময় পরিবেশ। কৃষ্ণচূড়ার মোহনীয় রূপ বাড়িয়ে দিয়েছে নগর সৌন্দর্য। বাংলাদেশে কৃষ্ণচূড়ার ডালে রক্তরাঙা ফুলের আর্বিভাব ঘটে চৈত্রের শেষের দিকে। আর বৈশাখ-জ্যেষ্ঠ জুড়ে থাকে এ ফুলের রূপ। বাংলাদেশের সব জেলাতেই কৃষ্ণচূড়ার অস্তিত্ব রয়েছে। গ্রামের সবুজ প্রান্তর ঘিরে নানা গাছগাছালির ভিড়েও দেখা মেলে কৃষ্ণচূড়ার। কুমিল্লার নগর জীবনেও মানুষের দৃষ্টির সীমানায় স্থান করে নিয়েছে রক্তরাঙা কৃষ্ণচূড়া। কৃষ্ণচূড়া ফুল গাছের আদিনিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কারে হলেও সমগ্র এশিয়া জুড়ে কৃষ্ণচূড়ার জুড়ি নেই। ভারত ও পাকিস্তানে কৃষ্ণচূড়া গুলমোহর নামেই পরিচিত।
কুমিল্লা নগরীর রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে, অফিস, বাসভবনে অসংখ্য কৃষ্ণচূড়া গাছ ডাল-পালা ছাড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এসব গাছে গাছে ফুটে থাকা রক্তরাঙা ফুল পুরো নগরকে রাঙিয়ে তুলেছে। নগরীর ছোটরার চিড়িয়াখানার পেছনে জেলা প্রশাসকের বাসভবন ও কার্যালয়ে, পুলিশ সুপারের বাসভবন ও কার্যালয়ে, পুলিশ লাইন এলাকায়, শিল্পকলা একাডেমি কুমিল্লা প্রেসক্লাব ও গণপূর্ত ভবন চত্বরে, মোগলটুলি টেলিগ্রাফ অফিসের সামনে, বাঙলা রেস্তোরার সামনে ফোজদারী মোড়ের রাস্তার পার্শ্বে, জেলা পরিষদ ও নগর ভবনের রাস্তার পার্শ্বে, রেইসকোর্স সড়কের কৃষি ব্যাংকের সামনে, বাদুরতলা চার্চের সামনে, ধর্মসাগররের দক্ষিণ পাড়ে মহিলা মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে, পার্ক চত্বরে, এতিহাসিক রাণীর কুটিরের ভেতরে ধর্মসাগরের পাড়ে, স্টেশন ক্লাবের গেইটে, ঈদগাহের পেছনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অফিস আঙ্গিনায় ও ধর্মসাগরের পূর্বপাড়ে, জিমনেসিয়ামের সামনে, কুমিল্লা জিলাস্কুল চত্বরে, বাঙলা রেস্তোরার সামনে, চকবাজার রোডের ঐতিহ্যবাহী আমীরদীঘির উত্তর পাড়ের সড়কের পার্শ্বে এবং হাউজিং এস্ট্রেটের অধিকাংশ বাড়ীর সামনেসহ নগরীর অন্যান্য স্থানেও দেখা মিলবে কৃষ্ণচূড়া গাছের। পুরো গাছের ডাল-পালা জুড়ে কৃষ্ণচূড়া ফুলের রক্তিম জাগরণ পথচারিদের মুহূর্তের জন্য হলেও শিহরণ জাগায়। আবার গ্রীষ্মের ঘামঝরা দুপুরে কৃষ্ণচূড়ার ছায়া ক্লান্ত-অবসন্ন পথচারি, রিকশা, অটো, ভ্যানচালকদের দেয় একটু প্রশান্তি।
কৃষ্ণচূড়ার রক্তরাঙা ফুলের সমাহার অপুলকভাবে দেখেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কর্মব্যস্ত নগরীর মানুষ ছুটাছুটি করতে গিয়েও যেখানে কৃষ্ণচূড়া দেখেছেন সেখানেই থমকে দাঁড়িয়েছেন। কুমিল্লা নগরীর রাস্তার পার্শ্বে আরো কৃষ্ণচূড়া গাছের চারা রোপন করে নগর সৌন্দর্য বৃদ্ধির ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসবেন এমন প্রত্যাশা নগরবাসীর।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন