বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

গুলশান বনানীর হোটেলে মাদক ব্যবসা

| প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


ইনকিলাব রিপোর্ট : রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানীর বেশিরভাগ হোটেল-রেস্তোরাঁ পরিণত হয়েছে মিনি বারে। অনুমোদন ছাড়া এসব হোটেল-রেস্তোরাঁয় প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে বিদেশী ব্রান্ডের মদ ও বিয়ার। অভিযোগ রয়েছে, মোটা অংকের মাসোহারার জোরেই এসব হোটেল-রেস্তোরাঁ প্রকাশ্যে মদ বিক্রি করে আসছে। মাসে কোটি টাকার কাছাকাছি এই মাসোহারার জন্যই শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা হোটেলগুলোর তালিকা করেই দায়িত্ব শেষ করেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের হিসাব মতে, রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী ও উত্তরায় মদ বিক্রির জন্য অনুমোদন আছে শ্রেণিভেদে মাত্র ১৮টি হোটেল ও রেস্তোঁরার। এর বাইরে যতোগুলো হোটেলে মদ-বিয়ার বিক্রি হয় সবই অবৈধ। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রো অঞ্চলের উপ-পরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশের পর গুলশান-বনানী এলাকার যেসব হোটেল-রেস্তোরাঁয় মদ বা মদ্যজাতীয় পানীয় বিক্রি হয় এরকম ৪৪টির তালিকা তৈরী করা হয়েছিল। ইতোমধ্যে সেই সব হোটেলের কয়েকটিতে অভিযানও চালানো হয়েছে।
গত শনিবার দুপুরে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এ অভিযানে তারা ওই হোটেলে কোনো প্রকার মদ বা বিয়ার পাননি। অভিযানে অংশ নেয়া একজন কর্মকর্তা বলেন, রেইনট্রি হোটেলটি নতুন। এটা আমাদের তালিকাভুক্ত নয়। কিন্তু  এই হোটেলকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া ঘটনার কারণে আমরা সেখানে অভিযান চালিয়েছি। সেখানে কোনো মাদকদ্রব্য বা মদ-বিয়ার পাওয়া যায়নি। এর পরদিন গত রোববার শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ রেইনট্রি হোটেলের জেনারেল ম্যানেজারের কক্ষ থেকে ১০ বোতল বিদেশি ওয়াইন উদ্ধার করে। রেইনট্রি হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার ফ্রাঙ্ক ফরগেট ফ্রান্সের নাগরিক। সস্ত্রীক তিনি ওই হোটেলেরই একটি কক্ষে থাকেন। বিদেশি নাগরিক হিসাবে তাঁরা বিদেশি ওয়াইন রাখতেই পারেন। এটাকে অবৈধ বা হোটেলের মদ বলা ঠিক হবে না। কিন্তু শুল্ক গোয়েন্দারা বিদেশি নাগরিকের কক্ষ থেকে উদ্ধার করা ওয়াইনগুলোকে ‘অবৈধ’ বলে মিডিয়াতে যেভাবে তথ্য দিয়েছে তা সঠিক নয়।  এ প্রসঙ্গে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রো অঞ্চলের উপ-পরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ রেইনট্রি হোটেলের জেনারেল ম্যানেজারের কক্ষ থেকে যেসব ওয়াইন উদ্ধার করেছে সেগুলো হালকা মাত্রার বিদেশি মদ। তিনি বলেন, ওয়াইন হলো অত্যন্ত হালকা মাত্রার পানীয় এবং স্বাস্থ্য উপযোগী। তরকারিতেও এগুলো ব্যবহার করা হয়। বিদেশি নাগরিকের কক্ষ থেকে ওয়াইন উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন,  বিদেশিদের ক্ষেত্রে বিষয়টি অন্যভাবে দেখা উচিত ছিল। তারা তো তাদের পাসপোর্টের বিপরীতে বিদেশি মদ রাখতেই পারে। তাদের জন্য তো এগুলো নিষিদ্ধ নয়। এ ছাড়া অতিমাত্রার মদ হলেও কথা ছিল। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, বিদেশি নাগরিকের কাছে থেকে মদ উদ্ধার হলে মামলা হয় না। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে রেইনট্রি হোটেলে অভিযান চালালেও শুল্ক গোয়েন্দারা কেন গুলশান-বনানীর অন্য রেস্তোঁরায় অভিযান চালাচ্ছেন না? গুলশানের এক বাসিন্দা বলেন, তবে কি গুলশানের অন্য কোনো হোটেল বা রেস্তোরাঁয় বিদেশি মদ বিক্রি হয় না? অনুসন্ধানে গুলশানের শতাধিক হোটেলে অবৈধভাবে বিদেশি মদ বিক্রির তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত ৪৪টি হোটেল। অনুসন্ধানে জানা গেছে, তালিকাভুক্ত ৪৪টি অনুমোদনহীন হোটেল- রেস্তোরাঁ থেকে মাসে অলিখিত ঘুষের পরিমাণ এক কোটি টাকার কাছাকাছি। এতে করে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকায় যেসব হোটেল-রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ বিদেশী মদ-বিয়ার বিক্রির অভিযোগ করা হয়েছে সেগুলো হল- গুলশান ২ নম্বর সার্কেলের তিন নম্বর প্লটের স্প্যাঘেটি জাজ, ৫৩ নম্বর সড়কের ৮ নম্বর বাড়ির স্টিক হাউস, ৫৫ নম্বর সড়কের ৯ নম্বর বাড়ির খাজানা, ৩৭ নম্বর সড়কের অলিভ গার্ডেন, ১০৯ নম্বর সড়কের ১০ নম্বর বাড়ির হেরিটেজ রেস্টুরেন্ট, ১১৮ নম্বর সড়কের ১৫/বি নম্বর বাড়ির সাকুরা গোল্ডেন রাইস রেস্টুরেন্ট, ৭১ নম্বর সড়কের কফি ম্যাঙ্গো, এক্সিট লাউঞ্জ, ৩৫ নম্বর সড়কের ২৭ নম্বর বাড়ির সামদাদ লি., ৭১ নম্বর সড়কের ক্যাফে অ্যারাবিয়ান, ৫০ নম্বর সড়কের ৬ নম্বর বাড়ির ফ্লেমবি, ৫০ নম্বর সড়কের ডি জ্যাং জিম রেস্টুরেন্ট, দি ক্যাসেল রেস্টুরেন্ট, অফ ট্র্যাক, গুলশান নর্থ এভিনিউর ৮ নম্বর বাড়ির স্প্রিট ফায়ার, ৭১ নম্বর সড়কের থাই রেস্তোরাঁ সই-৭১, ৬৮ নম্বর সড়কের কফি ওয়েগা, ৭১ নম্বর সড়কের ১২ নম্বর বাড়ির ক্যাপিটাল ক্লাব, ৮৩ নম্বর সড়কের ইন্টারন্যাশনাল ক্লাব, গুলশানের হোটেল ওয়াশিংটন, হোটেল রোজহুড, জায়ীকা রেস্টুরেন্ট, ১৩ গুলশান এভিনিউর ইফিজ, ৩৩ গুলশান এভিনিউর ফুড ভিলেজ, গুলশান ১৩৪-এর তোপ কাফি, গুলশান-১ এর ৬০/বি নম্বরের খুশবু রেস্টুরেন্ট, গুলশান-১ এর ৪৩ নম্বর বাড়ির এক্স লাউঞ্জ, বনানী ২৩ নম্বর সড়কের মি লাউঞ্জ, বনানীর ফ্লোর সিক্স, সাংহাই, আলগিরা, হুক্কা লাউঞ্জ, বনানী ১১ নম্বর সড়কের মিন্ট রেস্টুরেন্ট, রক রেস্টুরেন্ট, ডু মি ওকে রেস্টুরেন্ট, পেং ইয়াং রেস্টুরেন্ট, গুলশান-২ এর ৪৩ নম্বর সড়কের সুরা রেস্টুরেন্ট, ৭১ নম্বর সড়কের সুরা অন, নিউ কিংস কিচেন ও কোরিয়ানা রেস্টুরেন্ট। তালিকায় আরও আছে, বনানীর ৬০ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউর সুইট ড্রিম হোটেল। এই বারের মদের অনুমোদন নেই। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী ও উত্তরায় কমপক্ষে ১৫শ’ হোটেল-রেস্তোরাঁ রয়েছে। এর মধ্যে থেকে মাত্র ৪৪টি হোটেলকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এর বাইরেও শুধুমাত্র গুলশান-বনানীর অর্ধশত হোটেল-রেস্তোরাঁয় প্রকাশ্যেই অবৈধ বিদেশী মদ-বিয়ার বিক্রি হয় বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে অবৈধ মদ-বিয়ার বিক্রির সঙ্গে যুক্ত এসব হোটেল ও রেস্টুরেন্ট মালিককে ডেকে অবিলম্বে মদ-বিয়ার বিক্রি বন্ধ করতে বলা হয়েছিল। একই সঙ্গে রেস্টুরেন্টের প্রকাশ্য স্থানে ‘মদ-বিয়ার বিক্রি করা হয় না’ মর্মে নোটিশ টাঙিয়ে দিতে বলা হয়। মদ-বিয়ার বিক্রির অভিযোগে বেশ কিছু হোটেল- রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়। কিন্তু তালিকাভুক্ত এসব হোটেল- রেস্তোরাঁয় ‘মদ-বিয়ার বিক্রি হয় না’- মর্মে কোথাও কোনো নোটিশ টাঙানো হয়নি। বরং মদ বিক্রি বন্ধ করতে বলার পর থেকে মাসোহারার অঙ্ক অনেকাংশে বেড়েছে বলে সূত্র দাবি করেছে।
হোটেল-রেস্তোরাঁ ছাড়াও গুলশান-বনানী এলাকার অন্তত অর্ধশতাধিক রেষ্ট হাউস-গেস্ট হাউস আছে। এসব গেস্ট হাউসের আড়ালে চলছে মাদক ব্যবসা। হলিডে ইন, লিভার ডোর, কোয়ালিটি ইন, গার্ডেন ইন, বোনভিটা ইন, ইস্টার্ণ রেসিডেন্স, ডি ক্যাসল, স্কাই পার্ক, ম্যারিনো, লোরেল, ফুজি ইন, পিনাকল-বাহারি নামের অসংখ্য গেস্ট হাউজ। বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই ভেতরে কি হচ্ছে। নিছক রেস্ট হাউস ভেবে কেউ যদি সেখানে যান তবে তাকে পড়তে হয় চরম বিড়ম্বনায়। অভিযোগ রয়েছে, রেস্ট হাউসগুলোতে বিদেশি মদ বিয়ারসহ রাতের বেলায় জমজমাট আসর বসে। গুলশান এলাকার ব্যবসায়ী  হারুন অর রশীদ এ প্রসঙ্গে বলেন, কোথায় কী হয় তা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বা শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের অজানা নয়। কিন্তু তারা সেগুলো দেখেও দেখে না। তিনি বলেন, রেইনট্রি হোটেলে অভিযান চালানোর পর শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের উচিত ছিল গুলশান-বনানীর তালিকাভুক্ত হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে অভিযান চালানো। তাহলেই প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠতো। সামনে পবিত্র রমজান মাসের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, অন্ত:ত রমজান মাসে এসব বন্ধ করা হোক-তা আমরা এলাকাবাসী সবাই চাই।  
গুলশান-বনানী এলাকায় লাইসেন্সবিহীন মদ, বিয়ার ও অ্যালকোহল ক্রয়-বিক্রয় বন্ধে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন  হাইকোর্ট। ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিটের শুনানি শেষে  বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। হাইকোর্টের সেই আদেশের পর কিছুটা সক্রিয় ছিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। এখন আবার আগের অবস্থা ফিরে এসেছে। অভিজাত এলাকায় বর্তমানে এই অবস্থার কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকিও বাড়ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা বলেছেন, ওই সকল বার, ক্লাব এবং রেস্টুরেন্টে প্রতিরাতে হট্টগোল হয়ে থাকে। তাদের মতে, মধ্যরাতে মাদকাসক্তদের ওভার স্পিডিং গাড়ি ও মাতলামির দৌরাতœ্য যেভাবে বাড়ছে তাতে করে কুটনৈতিক এলাকা হিসেবে পরিচিত গুলশান, বনানী, বারিধারার নিরাপত্তাও বিঘিœত হচ্ছে। জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, অভিজাত এলাকার মাদক প্রতিরোধে পুলিশ সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান সব সময়ই চলমান আছে। সুনির্দ্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান পরিচালনা করে থাকে। অন্যদিকে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকা মেট্রো অঞ্চলের উপ-পরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা বলেছেন, গুলশান-বনানী এলাকায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হোটেল-রেস্তোরাঁ ও বারগুলোতে গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।  

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
সাইফুল ইসলাম ১৬ মে, ২০১৭, ১১:৪৫ এএম says : 2
রেইনট্রি হোটেলটির ব্যাপারে সত্য সংবাদ তুলে ধরায় দৈনিক ইনকিলাবকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Total Reply(0)
কাসেম ১৬ মে, ২০১৭, ১১:৫১ এএম says : 0
যেসব হোটেল-রেস্তোরাঁয় মদ বা মদ্যজাতীয় পানীয় বিক্রি হয় সেগুলোতে অভিযান চালানো হোক।
Total Reply(0)
Alamin ১৬ মে, ২০১৭, ৪:০৯ পিএম says : 0
অন্ত:ত রমজান মাসে এসব বন্ধ করা হোক
Total Reply(0)
Sajib ১৬ মে, ২০১৭, ৪:১১ পিএম says : 0
Many many thanks to the reporter and the Daily Inqilab for this informative news
Total Reply(0)
Salauddin ১৬ মে, ২০১৭, ৪:১৫ পিএম says : 0
শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের উচিত গুলশান-বনানীর তালিকাভুক্ত হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোতে অভিযান চালানো।
Total Reply(0)
লোকমান ১৬ মে, ২০১৭, ৪:১৬ পিএম says : 0
মাদকের হাত থেকে আমাদের যুব সমাজকে বাঁচাতে হবে। সরকার ও প্রশাসনের উচিত মাদক নিয়ন্ত্রণে আরো কঠোর হওয়া।
Total Reply(0)
Nasir ১৬ মে, ২০১৭, ৪:১৯ পিএম says : 0
According to this information, Raintree Hotel has no fault.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন